সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন
প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
হাবিবুর রহমান বাপ্পা, সহকারী শিক্ষক, শহীদ বীর-উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট
অষ্টম অধ্যায়
ভূমিকম্পের পরে :
প্রশ্ন : ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার কারণ সম্পর্কে জেনেছ। এবার ভাবো ভূমিকম্প হওয়ার পূর্বাভাস আমরা পাই না কেন। দলগত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করো।
উত্তর : ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব নয়। মূলত ম্যান্টলে পেস্নটের সম্ভারণ সর্বদাই ক্রিয়াশীল : ভূপৃষ্ঠ যেসব পেস্নটগুলোর উপর ভাসমান সেগুলো খুব ধীর গতিতে পরস্পরের দিকে অথবা বিপরীত দিকে অথবা পাশাপাশি চলছে। পেস্নটের এই স্বাভাবিক সঞ্চারণ গতি সীমানা কখন আলোড়িত হবে যার ফলে ভূপৃষ্ঠের উপরের অবকাঠামো কম্পিত হবে তা আঁচ করা যায় না। অন্যথায় গতি সীমানা এবং ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল স্পষ্টতই চিহ্নিত করা যায়। কিন্তু এ কম্পন ভূমিকম্পরূপে পৃথিবীতে কখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে আসবে তার পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব নয়।
প্রশ্ন : স্বাভাবিক অবস্থায় কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন?
উত্তর : ভূমিকম্প সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচার প্রয়োজন। সারাদেশে ভবন নির্মাণে জাতীয় 'বিন্ডিং কোড' এবং কোডের কাঠামোগত অনুসরণ বাধ্যতামূলক হবে। ঢাকা শহরে রাজউকের ভবন নির্মাণ পস্ন্যান অনুমোদনের নীতিমালা যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। সারাদেশে রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে। ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কাজে ব্যবহারের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বু্যরো কর্তৃক তালিকা অনুযায়ী যন্ত্রপাতি প্রত্যেক জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সংরক্ষণ করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন ও প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। দুর্যোগকবলিত এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীতে 'ডগ স্কোয়াড' রাখা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ফিন্ড হাসপাতাল স্থাপন ও মহড়া অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা।
প্রশ্ন : ভূমিকম্পের সময় আমাদের কী করা প্রয়োজন?
উত্তর : বাড়িতে থাকাকালীন বৈদু্যতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। গ্যাসের চুলা বন্ধ করতে হবে। তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বের হতে হবে ট্রেনে বা গাড়ির ভিতর থাকাকালীন যদি ভূমিকম্প হয় তবে কোনো জিনিস ধরে স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে থাকা উচিত। লিফটের ভিতরে থাকাকালীন দ্রম্নত নিচে নামার চেষ্টা করতে হবে। লিফটের ভিতরে আটকে পড়লে লিফট রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করতে হবে। মার্কেট, সিনেমা হল, আন্ডারগ্রাউন্ড ও শপিংমলে থাকলে এতদাঞ্চলে ভূমিকম্পে আকস্মিক ভীতিকর এক পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। আগুন লাগাও স্বাভাবিক। তাই এ ক্ষেত্রে প্রথমে নিচু হয়ে বসে বা শুয়ে থাকা শ্রেয় এবং পরবর্তীতে দ্রম্নত স্থান ত্যাগ করতে হবে।
প্রশ্ন : ভূমিকম্পের পরে আমাদের কী করণীয়?
উত্তর : ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে আমরা উদ্ধারকার্যে যথাসাধ্য সহায়তা করব। নিজেরা খালি পায়ে হাঁটবো না। বিভিন্ন সাহায্যকারী ফোর্সকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করব। যেমন- কোনো দুর্গত ব্যক্তি সাহায্য চাইছে বা কোথাও ইলেকট্রনিক তার ছিঁড়ে গেছে ইত্যাদি। নিজেদের মোবাইল বা অন্য কোনো প্রযুক্তি তাদের ব্যবহার করতে দিবো।
-ভূমিকম্পে আহত ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। গুরুতর আহত হলে হাসপাতালে নিতে হবে এবং যার প্রয়োজন বেশি তাকে আগে চিকিৎসা দিতে হবে।
-ক্ষতিগ্রস্ত পানি, ইলেকট্রিসিটি, গ্যাস লাইন বন্ধ করে দিতে হবে।
-বাসায় গ্যাসের গন্ধ পেলে ঘরের দরজা-জানালা খুজে ঘরের বাইরে চলে যেতে হবে।
-রেডিওতে খবর শোনার চেষ্টা করতে হবে।
-টেলিফোন খুব কম ব্যবহার করতে হবে, তবে জরুরি কাজের জন্য ত্রাণ বাহিনীকে টেলিফোন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে দিতে হবে।
-ভাঙা কাচ ইত্যাদিতে যেন পা কেটে না যায়, সেজন্য খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি করা যাবে না।
-ধ্বংসপ্রাপ্ত বিল্ডিংয়ের নিচে আটকা পড়লে উদ্ধারকারী দল এলে তাদের সংকেত দেয়ার জন্য কোনো কিছুতে নিয়মিতভাবে আঘাত দি য়ে শব্দ করে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।
-বড় ভূমিকম্প হলে, আফটার শক হিসেবে আরো ভূমিকম্প হতে পারে, সে জন্যে প্রস্তুত থাকতে হবে।
শিক্ষকের কাছ থেকে চিলি এবং হাইতিতে ঘটে যাওয়া দুইটি ভূমিকম্প সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করো।
উত্তর :
১. ভূমিকম্পের স্থান-মধ্য চিলি
ভূমিকম্পের কারণ- নাজকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা পেস্নটের সংঘর্ষ নাজকা পেস্নট ডেবে যায়।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল- ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৫ কি.মি. গভীরে
ভূমিকম্পের মাত্রা- ৮.৮
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ - ৫৫০ মৃতু্য, ১২,০০০ আহত, ৪ লক্ষ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত।
বিশেষ কোনো ঘটনা পর্যবেক্ষণ থাকলে- সান্তিরাখা বিমানবন্দর ব্যাপকভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৫ কি.মি. গভীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভূমিকম্পের স্থান-রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্স
ভূমিকম্পের কারণ-লিওগেন চু্যতিতে ক্যারিবিয়ান এবং উত্তর আমেরিকার পেস্নটের চলনে সংকোচন।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল- ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৩ কি.মি. গভীরে
ভূমিকম্পের মাত্রা- ৭.৭
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়