সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

হাবিবুর রহমান বাপ্পা, সহকারী শিক্ষক, শহীদ বীর-উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট
সপ্তম অধ্যায় প্রশ্ন : বন্ধ টেরারিয়াম (ঞবৎৎধৎরঁস) এর উদ্ভিদ টিকে থাকার কারণ কী কী? উত্তর : বন্ধ টেরারিয়াম আলোযুক্ত ছায়ায় সংরক্ষণ করতে হয়। অর্থাৎ সূর্যের আলো সরাসরি লাগানো যাবে না। খেয়াল রাখতে হবে যেমন উদ্ভিদ নিজদেহে পানি সংরক্ষণ করতে পারে সেসব উদ্ভিদ নির্বাচন করতে হবে। এ ধরনের টেরারিয়াম ঢাকনা দ্বারা আটকানো থাকে, ঢাকনা সপ্তাহে একবার খুললেই হয়। যখন বানানো হয় এর ভেতরেই নিজস্ব ইকোসিস্টেম তৈরি হওয়ার কারণে এটি বন্ধ অবস্থাতেও ভালোভাবে টিকে থাকে। যেমন : মস ফার্ন, ক্যকটাস ইত্যাদি। টেরারিয়াম (ঞবৎৎধৎরঁস) পর্যবেক্ষণের পর সেটিকে যথাস্থানে রেখে দাও। পর্যবেক্ষণে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে দলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নাও। আলোচনায় প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা করবে। প্রশ্ন : বন্ধ টেরারিয়াম (ঞবৎৎধৎরঁস) এ সালোকসংশ্লেষণ কীভাবে সম্পন্ন হয়? উত্তর : বন্ধ টেরারিয়ামের পরিবেশ থাকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ও আর্দ্র। এটি বন্ধ থাকার জন্য ভিতরেই পানি চক্র বিদ্যমান থাকে। এখানে আর্দ্রতা কমে গেলে পানি স্প্রে করতে হয়। টেরারিয়ামের মাটি থেকে উদ্ভিদ পানি শোষণ করে প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় পাতার তৈরি পানি ঘনীভূত হয়ে আবার মাটির আর্দ্রতা ফিরিয়ে দেয়। আলোর সাহায্যে এখানের উদ্ভিদগুলো অক্সিজেন তৈরি করে শ্বসন প্রক্রিয়া চালু রাখে এবং কার্বন-ডাইঅক্সাইড উৎপাদন করে। এ কার্বন-ডাইঅক্সাইড এবং পানি ব্যবহার করে বন্ধ টেরারিয়ামে থাকা উদ্ভিদগুলো সালোকসংশ্লেষণ করে। প্রশ্ন : বন্ধ টেরারিয়াম (ঞবৎৎধৎরঁস) এ অক্সিজেন চক্র কীভাবে সম্পন্ন হয়? উত্তর : বন্ধ টেরারিয়ামের উদ্ভিদগুলো আলোর সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে অক্সিজেন তৈরি করে সনক্রিয়া চালু রাখে। আর হুসনে উৎপন্ন কার্বন-ডাইঅক্সাইড আবার ওই সালোকসংশ্লেষণেই ব্যবহৃত হয়। এভাবেই বন্ধ টেরারিয়ামে অক্সিজেনচক্র চালু থাকে। প্রশ্ন :বন্ধ টেরারিয়াম (ঞবৎৎধৎরঁস) এ কীভাবে পানি চক্রকীভাবে সম্পন্ন হয়? উত্তর : বন্ধ টেরারিয়াম বানাতে প্রথমে যথেষ্ট আর্দ্রতা দিয়ে মাটিকে সিল করা হয়। এ মাটি থেকে উদ্ভিদ পানি সংগ্রহ করে প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় পাতার তৈরি পানি ঘনীভূত হয়ে আবার মাটির আর্দ্রতা ফিরিয়ে দেয়। এভাবেই বন্ধ টেরারিয়ামে পানি চক্র সম্পন্ন হয়। প্রশ্ন : আবার বন্ধ টেরারিয়াম (ঞবৎৎধৎরঁস) দলে পর্যবেক্ষণ করবে। নতুন কোনো পরিবর্তন আছে কি? থাকলে তা দলের সবাই লিখে রাখো। উত্তর : দ্বিতীয় পর্যবেক্ষণে নতুন পরিবর্তন- ১। টেরারিয়ামের উদ্ভিদগুলোর দৈহিক বৃদ্ধি ঘটেছে। ২। উদ্ভিদের পাতাগুলো অনেক সবুজ ও সতেজ দেখাচ্ছে। ৩। এখানে বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করা হয়। যেমন- বোতল, জার ইত্যাদি। ৪। এ ধরনের টেরারিয়ামে প্রাণী না থাকলেও উদ্ভিদ শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন কার্বন-ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে সালোকসংশ্লেষণ সম্পন্ন করে। ৫। বাইরের বায়ুর প্রয়োজন হয় না। কারণ ভেতরেই সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করে, যা পরবর্তীতে শ্বসনের ব্যবহার করে। ৬। সরাসরি সূর্যলোকের প্রয়োজন পড়ে না। এটিকে আলোযুক্ত ছায়ায় সংরক্ষণ করতে হবে। ৭। বাইরে থেকে পানি দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না এর ভেতরেই পানি চক্র সম্পন্ন হয়। ৮। এখানে আলাদা করে খনিজ উপাদান দেওয়ার দরকার হয় না। ভেতরে ব্যবহৃত উপকরণ ছারাই এরা পুষ্টি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে। প্রশ্ন : টেরারিয়াম (ঞবৎৎধৎরঁস) তৈরি করতে তোমাদের কেমন লেগেছে? উত্তর : টেরারিয়াম তৈরি করতে আমাদের খুবই ভালো লেগেছে। কারণ এটা তৈরি করা সহজ। এটি তৈরির উপকরণগুলো সহজলভ্য এবং আলাদাভাবে কোনো জমির প্রয়োজন হয় না। এটি ঘরের বারান্দায় যেখানে আলো আসে এমন জায়গায় রাখলেই চলে। এছাড়াও নিয়মিত পরিচার্যার প্রয়োজন পড়ে না। এটি বাসাবাড়ি ছাড়াও নামিদামী রেস্টুরেন্টের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ব্যবহার করা হয়। প্রশ্ন : এ কাজে তোমরা নতুন কী কী শিখছে? উত্তর : ১। সূর্যের সরাসরি আলো ছাড়াও বাস্তুতন্ত্র তৈরি করা যায়। ২। বন্ধ অবস্থায় অনেক জীব বাঁচতে পারে। ৩। বাইরের থেকে আলাদাভাবে পুষ্টি উপাদান দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ৪। অনেক বড়পরিসরে জমির প্রয়োজন হয় না। ৫। বাসাবাড়িতেই টেরারিয়াম তৈরি করা সম্ভব। অষ্টম অধ্যায় ভূমিকম্প-ভূমিকম্প! ভূমিকম্প! ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠনের সাথে এটি সম্পর্কিত। ভূমিকম্পের পূর্বে, ভূমিকম্পের সময় এবং ভূমিকম্পের পরে আমাদের করণীয় বিষয়গুলো শিখব এবং অনুশীলন করবো। ভূমিকম্পে করণীয় ভূমিকম্পের আগে : \হ-বাসায় আগুন নেভানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। -প্রাথমিক চিকিৎসা কিট, শুকনা খাবার এবং পানি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। -বাসায় গ্যাস, ইলেকট্রিসিটি এবং পানির সরবরাহ কীভাবে বন্ধ করতে হয় সেটি জেনে রাখতে হবে। ভূমিকম্পের সময় : -কোনো অবস্থাতেই অহেতুক ভয়ে এবং আতঙ্কে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হওয়া যাবে না। মাথা ঠান্ডা রাখলে বড় ভূমিকম্পের বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। -বড় ভূমিকম্পের সময় ঘরের ভেতরে থাকলে ভিতরেই থাকতে হবে, 'বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করা যাবে না। কখনোই লিফট দিয়ে নামার চেষ্টা করা যাবে না। কাচের জানালা থেকে দূরে থাকতে এবং দেয়ালের পাশে বা প্রয়োজনে শস্ত্র টেবিলের নিচে আশ্রয় নিতে হবে। -ঘরের বাইরে থাকলে, ঘরের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করা যাবে না। ইলেকট্রিক পোল কিংবা বড় বিল্ডিং থেকে দূরে সরে যেতে হবে, অন্যথায় উপর থেকে মাথার উপর কিছু পড়তে পারে। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়