শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ

সুধীরবরণ মাঝি, শিক্ষক হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয় হাইমচর, চাঁদপুর
  ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ

দশম অধ্যায়

প্রশ্ন :গঙ্গা ও যমুনার মিলিত ধারা কোথায় মিলিত হয়েছে?

উত্তর : গঙ্গা ও যমুনার মিলিত ধারা চাঁদপুরের কাছে মেঘনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

প্রশ্ন :বাংলাদেশে গঙ্গা-পদ্মা বিধৌত অঞ্চলের আয়তন কত?

উত্তর : বাংলাদেশে গঙ্গা-পদ্মা বিধৌত অঞ্চলের আয়তন ৩৪,১৮৮ বর্গকিলোমিটার।

প্রশ্ন :মহানন্দা নদীর উপনদীগুলোর নাম লেখ।

উত্তর : পুনর্ভবা, নাগর, পাগলা, কুলিক ও ট্যাংগন মহানন্দার উপনদী।

প্রশ্ন :ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তিস্থল কোথায়?

উত্তর : ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তিস্থল হিমালয় পর্বতের কৈলাস শৃঙ্গের নিকটে মানস সরোবরে।

প্রশ্ন :যমুনা নদীর প্রধান উপনদীর নাম লেখ।

উত্তর : যমুনা নদীর প্রধান উপনদী হলো করতোয়া ও আত্রাই।

প্রশ্ন :বাংলাদেশে মেঘনা বিধৌত অঞ্চলের আয়তন কত?

উত্তর : বাংলাদেশে মেঘনা বিধৌত অঞ্চলের আয়তন ২৯,৭৮৫ বর্গকিলোমিটার।

প্রশ্ন :মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে কখন বৃষ্টিপাত হয়?

উত্তর : মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়।

প্রশ্ন :বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়?

উত্তর : বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়।

প্রশ্ন :বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কত?

উত্তর : বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১ক্ক সেলসিয়াস।

অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন :বাংলাদেশের আয়তন ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর ১৯৯৬-৯৭ সালের তথ্য অনুসারে দেখা যায়, বাংলাদেশের নদী অঞ্চলের আয়তন ৯,৪০৫ বর্গকিলোমিটার। বনাঞ্চলের আয়তন ২১,৬৫৭ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের দক্ষিণ অংশে উপকূল অঞ্চলে বিশাল এলাকা ক্রমান্বয়ে জেগে উঠেছে। ভবিষ্যতে দক্ষিণ অংশে প্রসার ঘটলে বাংলাদেশের আয়তন আরও বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের টেরিটোরিয়াল সমুদ্রসীমা ১২ নটিক্যাল মাইল, অর্থনৈতিক একান্ত অঞ্চল ২০০ নটিক্যাল মাইল।

প্রশ্ন : স্রোতজ সমভূমি কী?

উত্তর : বাংলাদেশের বদ্বীপ অঞ্চলের দক্ষিণভাগের যে অংশে জোয়ার-ভাটার প্রভাব পরিলক্ষিত হয় তাকে স্রোতজ সমভূমি বলে। এ অঞ্চলের উপর দিয়ে অসংখ্য নদী প্রবাহিত হয়েছে। এ অঞ্চলের প্রায় পুরোটাই ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ দ্বারা আচ্ছাদিত।

প্রশ্ন :পদ্মা নদীর গতিপথ সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর : বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী পদ্মা। গঙ্গা নদী হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপত্তি লাভ করে। গঙ্গা নদীর মূল প্রবাহ ভারতের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রাজশাহী অঞ্চলের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে পদ্মা নামে প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সীমানা বরাবর এসে কুষ্টিয়ার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এরপর দৌলতদিয়ার নিকট যমুনা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। গঙ্গা ও যমুনার মিলিত ধারা পদ্মা নামে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে চাঁদপুরের কাছে মেঘনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই তিন নদীর মিলিত প্রবাহ মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।

প্রশ্ন :অশ্বখুরাকৃতি নদীখাত কী?

উত্তর : অনেক সময় নদী আঁকাবাঁকা পথে চলতে চলতে নদীর বাঁকের দুই বাহুর সংকীর্ণ স্থান ক্ষয়প্রাপ্ত হলে নদী তার পুরাতন বাঁকা পথ পরিত্যাগ করে নতুন সোজা পথে প্রবাহিত হয় ও পুরাতন খাতটি পরিত্যক্ত অশ্বখুরাকৃতি নদীখাতে পরিণত হয়। এটির আকৃতি অশ্বের খুরের ন্যায় দেখায় বলে একে অশ্বখুরাকৃতির নদীখাত বলে। বাংলাদেশে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা পরিত্যক্ত জলাভূমি ও নিম্নভূমিই অশ্বখুরাকৃতি নদীখাত।

প্রশ্ন :ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ লেখ।

উত্তর : ব্রহ্মপুত্র নদ হিমালয় পর্বতের কৈলাস শৃঙ্গের নিকটে মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রথমে তিব্বতের উপর দিয়ে পূর্ব দিকে ও পরে আসামের ভিতর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়েছে। অতঃপর ব্রহ্মপুত্র কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এরপর দেওয়ানগঞ্জের কাছে দক্ষিণ-পূর্বে বাঁক নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরববাজারের দক্ষিণে মেঘনায় পতিত হয়েছে। ধরলা ও তিস্তা ব্রহ্মপুত্রের প্রধান উপনদী এবং বংশী ও শীতলক্ষ্যা প্রধান শাখানদী।

প্রশ্ন :যমুনা নদীর গতিপথ লেখ।

উত্তর : ময়মনসিংহ জেলার দেওয়ানগঞ্জের কাছে ব্রহ্মপুত্রের শাখা যমুনা নদী নামে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে দৌলতদিয়ার কাছে পদ্মার সাথে মিলিত হয়েছে। করতোয়া ও আত্রাই যমুনার প্রধান উপনদী। ধলেশ্বরী এর শাখানদী এবং ধলেশ্বরীর শাখানদী বুড়িগঙ্গা।

প্রশ্ন :কর্ণফুলী নদীর গতিপথ লেখ।

উত্তর : আসামের লুসাই পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রায় ২৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ কর্ণফুলী নদী রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এটি চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির প্রধান নদী। কর্ণফুলীর প্রধান উপনদী কাসালাং, হালদা এবং বোয়ালখালি।

প্রশ্ন :বাংলাদেশের পস্নাবন সমভূমি উর্বর কেন ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বাংলাদেশে প্রায় ৭০০ নদী সর্বত্র জালের মতো ছড়িয়ে আছে। এই নদীগুলোর উৎপত্তি কোনো না কোনো পাহাড় থেকে। অধিকাংশ নদী ভারত থেকে আসে। এই নদীগুলো প্রতিবছর লাখ লাখ টন পলি বহন করে, যা বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। এই নদীগুলো জালের মতো বিস্তৃত হওয়ায় যখন বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় তখন নদীর দু'কূল ছাপিয়ে পস্নাবনের সৃষ্টি করে। এ পস্নাবনের সাথে পলি আসে এবং পার্শ্বভূমিতে সঞ্চিত হয়। বন্যার পানিবাহিত পলি সঞ্চিত হয়ে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। কারণ পলি হচ্ছে মৃত্তিকার পুষ্টি। তাই বাংলাদেশের পস্নাবন সমভূমি খুব উর্বর।

প্রশ্ন :বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের ওপর নদনদীর প্রভাব লেখ।

উত্তর : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের উপর নদনদীর প্রভাব অপরিসীম। সেচের পানি, শিল্পে ব্যবহৃত পানি ও বিদু্যৎ শক্তির উৎস হচ্ছে নদী। মাছের উৎসও নদী। নদীকে কেন্দ্র করে এ দেশের লাখ লাখ লোক জীবিকা নির্বাহ করছে। নদী জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করে। বাংলাদেশের নদীগুলো পরিবহণ ও যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে