ইছামতী নদী
ইছামতী কাউখালির সন্নিকটে (রাঙ্গামাটি) কতিপয় ক্ষুদ্র স্রোতধারা মিলিত হয়ে এ খরস্রোতা নদীটি সৃষ্টি করেছে। এটি কর্ণফুলী নদীর একটি ছোট উপনদী, যার দৈর্ঘ্য মাত্র ৩০ কিমি। নদীটি রাঙ্গুনিয়ার (চট্টগ্রাম) কাছে কর্ণফুলীতে পতিত হয়েছে। বাপাউবো তিনটি জলপরিমাপন কেন্দ্রের মাধ্যমে এ নদীর পানির স্তর সম্পর্কিত উপাত্ত সংগ্রহ করে।
মাইনি নদী
মাইনি ত্রিপুরার (ভারত) পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড় থেকে উৎসারিত কিছুসংখ্যক ক্ষুদ্র স্রোতধারা খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার সন্নিকটে মিলিত হয়। এ সম্মিলিত প্রবাহই মাইনি নদী নামে পরিচিত। নদীটি দীঘিনালা এবং লংগদু (রাঙ্গামাটি)-এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কেদামারার নিকটে (রাঙ্গামাটি) কাপ্তাই লেকে পতিত হয়েছে। নদীটি ৯১ কিমি দীর্ঘ এবং খরস্রোতা।
সাঙ্গু নদী
সাঙ্গু নদী বা শঙ্খ নদী, বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৯৪ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১১৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। ১৮৬০ সালে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের গেজেটিয়ার প্রকাশকালে ব্রিটিশ শাসকরা ইংরেজিতে এটিকে সাঙ্গু নাম দেন। তবে মারমা সম্প্রদায়ের ভাষায় শঙ্খকে রিগ্রাই খিয়াং অর্থাৎ স্বচ্ছ পানির নদ বলা হয়। বান্দরবানের শঙ্খ-তীরবর্তী
লোকজনের ৯০ শতাংশই মারমা। জীবন-জীবিকাসহ দৈনন্দিন কাজে এরা নদীটির ওপর নির্ভরশীল।
নদীটি দেশের দক্ষিণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি নদী। কর্নফুলীর পর এটি চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর উৎপত্তি তার মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার মদক এলাকার পাহাড়ে এ নদীর জন্ম। বান্দরবান জেলা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনোয়ারা ও বাঁশখালীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। উৎসমুখ হতে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এই নদীর দৈর্ঘ্য ১৭০ কিলোমিটার।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ নদী উত্তর হতে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। কিন্তু সাঙ্গু নদী বান্দরবানের দক্ষিণাঞ্চলে সৃষ্টি হয়ে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমে বাঁক নিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে শেষ হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে নদীর মাধ্যমে চলাচলের ক্ষেত্রে এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। বালি উত্তলনের ক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব রয়েছে।