অধ্যায়-৩
প্রশ্ন : বর্ণনার সাহায্যে কীভাবে মানচিত্রে স্কেল নির্দেশ করা হয়?
উত্তর : আমরা বর্ণনা বা কথার মাধ্যমে মানচিত্রের স্কেল প্রকাশ করে থাকি। যেমন : ১ ইঞ্চিতে ৪ মাইল, ১৬ ইঞ্চিতে ১ মাইল, ১ সেন্টিমিটারে ১ হেক্টোমিটার। এখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রথম সংখ্যাটি মানচিত্রের দূরত্ব এবং দ্বিতীয় সংখ্যাটি ভূমির প্রকৃত দূরত্ব প্রকাশ করছে।
প্রশ্ন : রেখাচিত্রের সাহায্যে স্কেল প্রকাশের পদ্ধতি বর্ণনা কর।
উত্তর : কোনো একটি রেখাকে প্রয়োজনীয় ইঞ্চি ও ইঞ্চির ক্ষুদ্র অংশে বা সেন্টিমিটারের ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করে প্রতি ভাগের মান লিখে মানচিত্রের স্কেল প্রকাশ করা হয়। যেমন- ১ সেন্টিমিটারে ১০ কিলোমিটার বর্ণনাটিকে রেখাচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করতে হলে প্রথমে ৫ সেন্টিমিটার একটি রেখা নিয়ে একে ৫ ভাগ করতে হবে; এর প্রতিটি ভাগ ১০ কিলোমিটার। বাম পাশে ১টি ঘর ছেড়ে দিয়ে যথাক্রমে ০, ১০, ৩০, ৪০ লিখে এর পাশে কিলোমিটার লিখতে হবে। বাম পাশের ঘরটিকে আবার ১০ ভাগে ভাগ (কারণ ১০ কিলোমিটারের ক্ষুদ্র ভাগ দেখাতে হবে) করে প্রতিটি ক্ষুদ্র ভাগের মান লিখতে হবে। যেমন : ইঞ্চি স্কেলের ক্ষেত্রে একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
প্রশ্ন : প্রতিভূ অনুপাতের সাহায্যে স্কেল প্রকাশের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : বিভিন্ন দেশের দূরত্ব পরিমাপের জন্য স্বতন্ত্র একক ব্যবহার করা হয়। এরূপ এক দেশের এককের মাধ্যমে মানচিত্রে স্কেল প্রকাশ হলে ভাষাগত কারণে তা অন্য দেশের লোকের কাছে বোধগম্য হবে না। এ অসুবিধা দূর করার জন্য প্রতিভূ অনুপাত পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে। ইংরেজিতে একে জবঢ়ৎবংবহঃধঃরাব ঋৎধপঃরড়হ বা সংক্ষেপে জ. ঋ. এবং বাংলায় সংক্ষেপে প্র. অ. বলে।
প্রশ্ন :প্র. অ. ১: ৬৩৩৬০ বর্ণনার সাহায্যে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আমরা জানি, ৬৩৩৬০ ইঞ্চি = ১ মাইল
অতএব, স্কেলটির প্রকাশ বর্ণনায় ১ ইঞ্চিতে ১ মাইল।
প্রশ্ন : ১ ইঞ্চিতে ৪ মাইল। বর্ণনায় প্রকাশিত স্কেলটির প্রতিভূ অনুপাত প্রকাশ কর।
উত্তর : ১ ইঞ্চিতে ৪ মাইল।
১ মাইল = ৬৩৩৬০ ইঞ্চি
৪ মাইল = ৬৩৩৬০*৪ = ২৫৩৪৪০ ইঞ্চি
প্র. অ. ১: ২৫৩৪৪০
প্রশ্ন : মানচিত্র আঁকায় অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখা প্রয়োজন - ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের ওপর অবস্থিত কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের অবস্থান নির্ণয় করতে হলে সেই স্থানের অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখা কত তা আগে জানা দরকার। কারণ অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার সাহায্যে সহজেই সেই স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা যায়। মানচিত্রের সীমারেখা কোন অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার কোন পাশ দিয়ে কিভাবে গেছে তা ভালোভাবে লক্ষ করে মানচিত্রের সীমারেখা টানা যায়। সেই সাথে বিভিন্ন ভৌগোলিক তথ্য যথাস্থানে সন্নিবেশিত করা যায়। সুতরাং মানচিত্র আঁকায় অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখা প্রয়োজন।
অধ্যায়-৪
পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন
প্রশ্ন : ভূত্বকের বাহ্যিক অবয়বে কী দেখা যায়?
উত্তর : ভূত্বকে পৃথিবীর বাহ্যিক অবয়ব যেমন : সমভূমি, মালভূমি, পাহাড়, পর্বত, নদী, হ্রদ, সাগর, মহাসাগর ইত্যাদি দেখা যায়।
প্রশ্ন : কেন্দ্রমন্ডল কী কী উপাদান দ্বারা গঠিত?
উত্তর : কেন্দ্রমন্ডল লোহা, নিকেল, পারদ, সিসা ইত্যাদি উপাদান দ্বারা গঠিত।
প্রশ্ন :ঊর্ধ্বগুরুমন্ডল কী খনিজ দ্বারা গঠিত?
উত্তর : ঊর্ধ্বগুরুমন্ডল প্রধানত লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত।
প্রশ্ন :শিলা কী?
উত্তর : ভূত্বক যেসব উপাদান দ্বারা গঠিত তাদের শিলা বলে।
প্রশ্ন :একটি মৌলিক উপাদানে গঠিত এমন একটি খনিজের নাম লেখ?
উত্তর : একটি মৌলিক উপাদানে গঠিত এমন একটি খনিজের নাম হীরা।
প্রশ্ন :চুনাপাথর কোন খনিজ থেকে সৃষ্ট?
উত্তর : চুনাপাথর ক্যালসাইট নামের খনিজ থেকে সৃষ্ট।
প্রশ্ন :বহিঃজ আগ্নেয় শিলা কী করে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : ভূগর্ভের উত্তপ্ত তরল পদার্থ ম্যাগমা আগ্নেয়গিরির অগ্নু্যৎপাত বা অন্য কোনো কারণে বেরিয়ে এসে শীতল হয়ে জমাট বেঁধে বহিঃজ আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন :অন্তঃজ আগ্নেয় শিলার উদাহরণ দাও।
উত্তর : অন্তঃজ আগ্নেয় শিলার উদাহরণ গ্রানাইট, গ্যাব্রো, ডলোরাইট।
প্রশ্ন :পাললিক শিলা কী প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়?
উত্তর : পাললিক শিলা যৌগিক, জৈবনিক বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়।
প্রশ্ন :কাদা ও শেল রূপান্তরিত হয়ে কিসে পরিণত হয়?
উত্তর :কাদা ও শেল রূপান্তরিত হয়ে স্স্নেটে পরিণত হয়।
প্রশ্ন :কোন শিলায় ছিদ্র দেখা যায়?
উত্তর : পাললিক শিলায় ছিদ্র দেখা যায়।
প্রশ্ন :ভূপৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তন কী?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠে হঠাৎ করে অল্প সময়ে এবং অল্প স্থানে যে পরিবর্তন সাধিত হয় তাকে আকস্মিক পরিবর্তন বলে।
প্রশ্ন : ভূপৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তন কী দ্বারা সংঘটিত হয়?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তন সংঘটিত হয় প্রধানত ভূমিকম্প, সুনামি ও আগ্নেয়গিরি দ্বারা।
প্রশ্ন : ভূমিকম্প কাকে বলে?
উত্তর : পৃথিবীর কঠিন ভূত্বকের কোনো কোনো অংশ প্রাকৃতিক কোনো কারণে কখনো কখনো অল্প সময়ের জন্য হঠাৎ কেঁপে ওঠে। ভূত্বকের এরূপ আকস্মিক কম্পনকে ভূমিকম্প বলে।
প্রশ্ন : 'সুনামি' শব্দের অর্থ কী?
উত্তর :'সুনামি' জাপানি শব্দ। এর অর্থ হলো 'পোতাশ্রয়ের ঢেউ'।
প্রশ্ন :আগ্নেয়গিরি কী?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের দুর্বল অংশের ফাটল দিয়ে ভূগর্ভের গলিত পদার্থ প্রবলবেগে ঊর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত হয়ে ক্রমশ জমাট বেঁধে যে উঁচু মোচাকৃতি পর্বত সৃষ্টি করে তাকে আগ্নেয়গিরি বলে।
প্রশ্ন : ভিসুভিয়াস কী?
উত্তর : ভিসুভিয়াস ইতালির একটি আগ্নেয় পর্বত।
প্রশ্ন : সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কাকে বলে?
উত্তর : যেসব আগ্নেয়গিরির অগ্নু্যৎপাত এখনও বন্ধ হয়নি তাদের সক্রিয় আগ্নেয়গিরি বলে।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়