দ্বিতীয় অধ্যায়
১৩. কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের বিন্যাস কেমন হয়?
উত্তর : নিচে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের বিন্যাসের ধরন আলোচনা করা হল :
কঠিন : কঠিন পদার্থের কণাগুলো খুব কাছাকাছি এবং নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকে, একটির সাপেক্ষে অন্যটি নড়তে পারে না তাই কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার হয়। কাছাকাছি থাকার কারণে কঠিন পদার্থের উপর চাপ প্রয়োগ করলে এগুলো সংকুচিত হয় না এবং গ্যাস কিংবা তরলের মতো প্রবাহিত করা যায় না।
তরল : পদার্থ যখন তরল অবস্থায় থাকে তখন কণাগুলো তুলনামূলকভাবে কাছে হলেও একটা কণা অন্য কণার সাপেক্ষে নড়তে পারে, তাই সেগুলোর নির্দিষ্ট আয়তন থাকলেও কোনো নিয়মিত আকার নেই এবং তরল সহজেই প্রবাহিত হয়। তরল পদার্থকে যে পাত্রে রাখা হয় তরল পদার্থ সেই পাত্রের আকার ধারণ করে। তরল পদার্থের কণাগুলো কাছাকাছি থাকায় সেগুলোর মধ্যে ফাঁকা জায়গা নেই বলে চাপ দিয়ে সংকুচিত করা যায় না।
গ্যাসীয় : যখন কোনো পদার্থ গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে, তখন তার কণাগুলো মুক্ত অবস্থায় থাকে এবং একটি থেকে অন্যটির দূরত্ব হয় বেশি। সেজন্য সেগুলোর কোনো নিয়মিত আকার বা আয়তন নেই, গ্যাসকে যে পাত্রে রাখা হয়, সেই পাত্রের পুরো আয়তন দখল করে।
গ্যাসের কণাগুলোর মাঝখানে অনেক জায়গা বলে চাপ প্রয়োগ করে এগুলোকে সহজেই সংকুচিত করা যায়। গ্যাসের কণাগুলো অন্য কণার সাপেক্ষে ছুটতে পারে বলে গ্যাস সহজেই প্রবাহিত হয়।
তৃতীয় অধ্যায়
সকল জীবই কোষ দিয়ে গঠিত। কোষকে বলা হয় জীবদেহের গঠন এবং কাজের একক। এ শিখন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা নতুন কোন জায়গায় ভ্রমণের মতো করে ক্ষুদ্র কোষীয় জগতে পরিভ্রমণের একটা অভিজ্ঞতার পরিকল্পনা করবে।
যেহেতু সত্যি সত্যি সেটা সম্ভব নয়, কাজেই বিভিন্ন ধরনের কোষের মডেল বানিয়ে সেখানে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা হবে। দলে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা একেক দল একেক ধরনের কোষের মডেল তৈরি করবে। শিক্ষকসহ বিভিন্ন দল অন্য দলের কোষের ভেতরে ঘুরতে আসবে, সেই দলের সদস্যদের কাজ হবে টু্যর গাইডের মতো কোষের কোন অংশে কী আছে, কার কাজ কী এগুলো বর্ণনা দেয়া।
এমনভাবে এই টু্যর ডিজাইন করা হবে যাতে সব শিক্ষার্থী সব ধরনের কোষের গঠনের সাথে পরিচিত হয়। ভ্রমণের পর নিজ দলে ফিরে এসে সবাই আলোচনা করবে। তাদের নিজেদের দলের মডেলের সাথে অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের কোষের সাদৃশ্য/বৈসাদৃশ্য, কোন কোন উপাদান সব কোষেই বিদ্যমান আছে, কোনটা বিশেষ কোন ধরনের জীবের কোষেই শুধু থাকে ইত্যাদি।
এখান থেকে তারা বিভিন্ন ধরনের কোষের গঠনে এক ধরনের শৃঙ্খলা অন্বেষণ করবে। এবার কীভাবে এই শৃঙ্খলা নষ্ট হয় তা নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজনের প্রসঙ্গ আসবে এবং এর ফলে জীবদেহের কোষগুলোর সাম্যাবস্থা কীভাবে নষ্ট হয় তা নিয়ে আলোচনা করবে।
প্রথম সেশন
তুমি কোথাও ঘুরতে গিয়েছ এবং টু্যর গাইডের সাহায্য নিয়েছ, যিনি তোমাকে ওই জায়গা ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন, জানিয়েছেন সবকিছু এমন কোনো স্মৃতি থাকলে তা ক্লাসে শেয়ার করো। (বিজ্ঞান অনুশীলন বই : পৃষ্ঠা ৩০)
উত্তর : আমি একবার বাবা-মায়ের সাথে 'সেন্ট মার্টিন দ্বীপ' ঘুরতে গিয়েছিলাম; সেখানে আমাদের সাথে আরও অনেকে ছিলেন। আমাদের এই টু্যরে সার্বিক সহায়তার জন্য একজন টু্যর গাইড ছিলেন। যিনি আমাদের সব জায়গা ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন। তিনি আমাদের এসব জায়গা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য বর্ণনা করেছেন এবং আমাদের প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন। টু্যর গাইডের সার্বিক সহায়তার কারণে আমাদের ভ্রমণটা অনেক আনন্দময় হয়েছিল।
শিক্ষকের নির্দেশনায় দুইটি দলে ভাগ হয়ে যাও। একটি দল প্রাণিকোষ অন্য আরেকটি দল উদ্ভিদকোষ নিয়ে কাজ করবে। উদ্ভিদকোষ দলটি আরেকটি ছোট উপদলে ভাগ হয়ে পস্নাস্টিড এবং প্রাণিকোষ দলটি আরো দুইটি উপদলে ভাগ হয়ে মাইটোকন্ড্রিয়া ও নিউক্লিয়াসের মডেল নিয়ে কাজ করবে। (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৩১)
উত্তর : শিক্ষকের নির্দেশনায় আমরা সহপাঠীরা 'প্রজাপতি' ও 'ফড়িং' নামে দুটি দলে ভাগ হলাম। 'প্রজাপতি' দল প্রাণিকোষ এবং 'ফড়িং' দল উদ্ভিদকোষ নিয়ে কাজ করব। 'ফড়িং' দলটি আবার 'দোয়েল' নামে উপদলে ভাগ হলাম। 'দোয়েল' উপদলটি পস্নাস্টিড নিয়ে কাজ করবে। অন্যদিকে 'প্রজাপতি' দলটি 'টুনটুনি' ও 'ময়না' নামে দুটি উপদলে ভাগ হলাম। 'টুনটুনি' উপদল মাইটোকন্ড্রিয়া এবং 'ময়না' উপদল নিউক্লিয়াসের মডেল নিয়ে কাজ করবে।
উদ্ভিদ ও প্রাণিকোষে কী কী কোষ অঙ্গাণু আছে এবং পস্নাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া ও নিউক্লিয়াসে কী কী বিদ্যমান তা দলে এবং উপদলে একটি তালিকা তৈরি করে নাও। (বিজ্ঞান অনুশীলন বই : পৃষ্ঠা ৩১)
দল : ফড়িং ু উদ্ভিদ কোষের অঙ্গাণু : ১. কোষপ্রাচীর, ২. কোষঝিলিস্ন, ৩. সাইটোপস্নাজম, ৪. নিউক্লিয়াস, ৫. মাইটোকন্ড্রিয়া, ৬. কোষগহ্বর, ৭. পস্নাস্টিড, ৮. গলজি বড়ি, ৯. আন্তঃপস্নাজমীয় জালিকা
দল : প্রজাপতি- প্রাণিকোষের অঙ্গাণু : ১. কোষঝিলিস্ন, ২. সাইটোপস্নাজম, ৩. নিউক্লিয়াস, ৪. মাইটোকন্ড্রিয়া, ৫. গলজি বড়ি, ৬. আন্তঃপস্নাজমীয় জালিকা, ৭. সেন্ট্রোসোম, ৮. লাইসোসোম।
উপদল : দোয়েল- পস্নাস্টিডের অঙ্গাণু : ১. বহিঃস্তর, ২. অন্তঃস্তর, ৩. লুমেন, ৪. গ্রানাম, ৪ স্ট্রোমা, ৫. থাইলাকয়েড।
উপদল : টুনটুনি- মাইটোকন্ড্রিয়ার অঙ্গাণু : ১. ক্রিস্টি, ২. ম্যাট্রিক্স, ৩. অভ্যন্তরীণ ঝিলিস্ন, ৫. বাহ্যিক ঝিলিস্ন।
উপদল : ময়না- নিউক্লিয়াসের অঙ্গাণু : ১. নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, ২. নিউক্লিওলাস, ৩. নিউক্লিওপস্নাজম, ৪. নিউক্লিয়ার রন্ধ্র, ৫. ক্রোমোজোম।
এই তালিকা থেকেই দল ও উপদলের এক একজন সদস্য এক একটা অঙ্গাণু নিয়ে কাজ করবে।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়