অধ্যায় ১
প্রশ্ন : পরিবেশ সম্পর্কিত 'আর্মসের' মতবাদটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পরিবেশ বিজ্ঞানী 'আর্মসের' মতে, জীবসম্প্রদায়ের পরিপার্শ্বিক জৈব ও প্রাকৃতিক অবস্থাকে পরিবেশ বলে। মানুষ যেখানেই বাস করুক তাকে ঘিরে একটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিরাজমান। প্রকৃতির সকল দান মিলেমিশে তৈরি হয় পরিবেশ। নদী নালা, সাগর, মহাসাগর, পাহাড়, পর্বত, বন, জঙ্গল, ঘরবাড়ি, রাস্তঘাট, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি, মাটি ও বায়ু নিয়ে গড়ে ওঠে পরিবেশ। কোনো জীবের চারপাশের সকল জীব ও জড় উপাদানের সর্বসমেত প্রভাব ও সংঘটিত ঘটনা হলো ওই জীবের পরিবেশ। সুতরাং 'আর্মসের' মতবাদটি যথার্থ।
প্রশ্ন : পরিবেশ কীভাবে গড়ে ওঠে?
উত্তর : প্রকৃতি ও প্রকৃতির সকল দান মিলেমিশে তৈরি হয় পরিবেশ। নদীনালা, সাগর, মহাসাগর, পাহাড়, পর্বত, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি, মাটি ও বায়ু নিয়ে গড়ে ওঠে পরিবেশ।
প্রশ্ন : মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে সম্বন্ধ আছে- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মানুষ পৃথিবীতে বাস করে এবং এই পৃথিবীতেই তার জীবনযাত্রা নির্বাহ করে। পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ তার জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে। পৃথিবীর জলবায়ু, ভূপ্রকৃতি, উদ্ভিদ, প্রাণী, নদনদী, সাগর, খনিজ সম্পদ তার জীবনযাত্রাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। তার ক্রিয়াকলাপ আবার পরিবেশে ঘটায় নানান রকম পরিবর্তন। ঘরবাড়ি, অফিস-আদালত, রাস্তাঘাট, শহর বন্দর নির্মাণ প্রকৃতি ও পরিবেশকে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত করে। মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে এই মিথষ্ক্রিয়ার একটি সম্বন্ধ আছে। এই সম্বন্ধের মূলে আছে কার্যকারণের খেলা।
প্রশ্ন : ভূগোলের সঙ্গে পরিবেশ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত কেন?
উত্তর : ভূগোলের সাথে পরিবেশ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ভূগোল আলোচনা করে পৃথিবীর গঠন, প্রকৃতি, পাহাড় পর্বত, নদীনালা, গাছপালা, বায়ুমন্ডল, বারিমন্ডল, জলবায়ু, প্রাণিজগৎ প্রভৃতি। আর পরিবেশ হলো আমাদের চারপাশে বিভিন্ন উপাদান। সুতরাং পরিবেশের সাথে ভূগোল ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। বর্তমানে ভূগোল ও পরিবেশ সম্পৃক্ত করে পড়ানো হয়। প্রাকৃতিক ও সামাজিক উভয় পরিবেশ ভূগোলে গুরুত্ব বহন করে।
প্রশ্ন : ভূগোলের পরিধি বর্ণনা কর।
উত্তর : ভূগোলের পরিধি বলতে এর কার্যক্ষেত্রের বিস্তৃতিকে বোঝায়। পরিবেশে মানুষের যাবতীয় কর্মকান্ড ভূগোল ও পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ, নতুন নতুন আবিষ্কার, চিন্তা-ধারণার বিকাশ, সমাজের মূল্যবোধের পরিবর্তন ভূগোল ও পরিবেশের পরিধিকে অনেক বিস্তৃত করেছে। এখন নানান রকম বিষয় যেমন : ভূমিরূপবিদ্যা, আবহাওয়াবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, মৃত্তিকাবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, সমাজবিদ্যা, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
প্রশ্ন:প্রাকৃতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয় কোনগুলো?
উত্তর : ভূগোলের যে শাখায় ভৌত পরিবেশ ও এর মধ্যে কার্যরত বিভিন্ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকে তাকে প্রাকৃতিক ভূগোল বলা হয়। পৃথিবীর ভূমিরূপ, এর গঠনপ্রক্রিয়া, বায়ুমন্ডল, বারিমন্ডল, জলবায়ু ইত্যাদি প্রাকৃতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয়।
প্রশ্ন : অর্থনৈতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয় কোনগুলো?
উত্তর : প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ যেসব কাজ করে তা অর্থনৈতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয়। এগুলোর মধ্যে অন্তর্গত হলো- কৃষিকাজ, পশুপালন, বনজ সম্পদ ও খনিজ সম্পদ সংগ্রহ, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা ইত্যাদি।
প্রশ্ন : অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভূগোলের পার্থক্য কী?
উত্তর : অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভূগোলের পার্থক্য তুলে ধরা হলো :
অর্থনৈতিক ভূগোল
১. ভূগোলের যে শাখায় মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের সাথে তার পার্থিব পরিবেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে অর্থনৈতিক ভূগোল বলে।
২. পরিবেশ কিভাবে মানুষের অর্থনৈতিক কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে এবং মানুষ কিভাবে তার কল্যাণে পরিবেশকে কাজে লাগায় তার আলোচনা অর্থনৈতিক ভূগোলের বিষয়বস্তু।
রাজনৈতিক ভূগোল
১. ভূগোলের যে শাখায় রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে রাজনৈতিক ভূগোল বলে।
২. রাজনৈতিক বিবর্তন, রাজনৈতিক বিভাগ, এই বিভাগের পরিসীমা, বিভাগের মধ্যস্থিত ভৌগোলিক বিষয় রাজনৈতিক ভূগোলের প্রধান বিষয়বস্তু।
প্রশ্ন : আঞ্চলিক ভূগোলের অন্তর্ভুক্ত বিষয় কী কী?
উত্তর : অঞ্চলভেদে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের ভৌগোলিক বিষয়বস্তু যেমন : ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, উদ্ভিদ, জীবজন্তু, মানুষ ও মানুষের জীবনধারণ প্রণালি অনুশীলন করা আঞ্চলিক ভূগোলের প্রধান বিষয়।