বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

ত্রয়োদশ অধ্যায়

প্রশ্ন : প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে কী বোঝো? নবায়ন সম্পদ ও অনবায়নযোগ্য সম্পদ বলতে কী বোঝো? সৌরশক্তির সুবিধা ২টি বাক্যে লেখো।

উত্তর : প্রাকৃতিক সম্পদ : প্রকৃতিতে পাওয়া যেসব সম্পদ মানুষ তার চাহিদা পূরণের জন্য ব্যবহার করে থাকে। সেসব সম্পদকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে।

নবায়নযোগ্য সম্পদ : যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ বারবার ব্যবহার করা যায় সেগুলোকে নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। যেমন- সূর্যের আলো, বায়ুপ্রবাহ, পানির স্রোত ইত্যাদি।

অনবায়নযোগ্য সম্পদ : যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ বারবার ব্যবহার করা যায় না সেগুলোকে অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। যেমন- তেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি।

সৌরশক্তির সুবিধা ২টি বাক্যে নিম্নে উলেস্নখ করা হলো :

১. সৌরশক্তি ব্যবহারে পরিবেশ দূষিত হয় না।

২. সৌরশক্তি নবায়নযোগ্য অর্থাৎ বারবার ব্যবহার করা যায়।

প্রশ্ন : সোলার প্যানেল কী? সম্পদের পরিকল্পিত ব্যবহারের ৩টি পদ্ধতি লেখো।

উত্তর : যা সৌরশক্তিকে বিদু্যৎশক্তিতে রূপান্তরিত করে তাই সৌর প্যানেল।

সম্পদের পরিকল্পিত ব্যবহারের ৩টি পদ্ধতি নিম্নরূপ :

র. শক্তির ব্যবহার কমানো।

রর. বস্তুর পুনর্ব্যবহার করা।

ররর. রিসাইকেল করা।

প্রশ্ন : তুমি দৈনন্দিন জীবনে গ্যাসের ব্যবহার দেখতে পাও। এটি কোন ধরনের সম্পদ? এ সম্পদ ফুরিয়ে গেলে কোন সম্পদ বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে হবে? এই বিকল্প সম্পদের ৩টি ব্যবহার লেখো।

উত্তর : গ্যাস অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ। অনবায়নযোগ্য সম্পদ এক সময় নিঃশেষ হয়ে যাবে। তাই বিকল্প হিসেবে নবায়নযোগ্য সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। নিচে নবায়নযোগ্য সম্পদের তিনটি ব্যবহার দেওয়া হলো-

১. সূর্যের আলো ব্যবহার করে বিদু্যৎ উৎপাদন করা হয়।

২. বায়ুপ্রবাহকে ব্যবহার করে পালতোলা নৌকা চালানো হয়।

৩. বায়ুপ্রবাহ থেকে উইন্ডমিলের সাহায্যে বিদু্যৎ উৎপাদন করা হয়।

প্রশ্ন :বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট দূরীকরণে নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে বলে তুমি মনে করো?

উত্তর : বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট দূরীকরণে নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন- সৌরবিদু্যৎ ও উইন্ডমিলের সাহায্যে পর্যাপ্ত বিদু্যৎ উৎপাদন করা গেলে গ্রামে ঘর আলোকিত করার আলো, টিভি চালানোর মতো বিদু্যৎ হাতের নাগালের মধ্যে আসবে। বর্তমানে আমরা যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করছি তা সীমিত এবং এক সময় নিঃশেষ হয়ে যাবে। প্রকৃতির অফুরন্ত উৎস সৌরশক্তি ও বায়ুপ্রবাহ কাঁচামাল হওয়ায় এগুলো শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানির চাহিদাও সমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট দূরীকরণে সৌরবিদু্যৎ ও উইন্ডমিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে সৌরশক্তির ব্যবহারের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা বিষয়ে তোমার মতামত উপস্থাপন করো।

উত্তর : বাংলাদেশের জন্য জ্বালানির একটি বিকল্প উৎস হতে পারে সৌরশক্তি। তেল, গ্যাস বা কয়লার মতো সম্পদ কমে যাওয়ায় সৌরশক্তি এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সৌর প্যানেলে সৌরশক্তিকে বিদু্যৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়। ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাসা, অফিস ও সেচ কাজে এই সৌরবিদু্যৎ ব্যবহার করা হচ্ছে।

বর্তমানে ছোট্ট পরিসরে সৌরশক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা চলছে। বাড়িঘর আলোকিত করা, ফ্রিজ চালানো, টেলিভিশন চালানো, পানি সেচ ইত্যাদি কাজে এর সম্ভাবনা প্রমাণিত হয়েছে।

বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সৌরশক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাসাবাড়ির জন্য সৌরবিদু্যতের সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্থাপনের জন্য ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে গ্রামের লোকজন সৌরশক্তি ব্যবহার করে বৈদু্যতিক বাতি, টিভি, রেফ্রিজারেটর, কম্পিউটার ইত্যাদি চালাতে পারে। ব্যাটারি চার্জ করে এগুলো রাতে ব্যবহার করা যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সৌরবিদু্যতের ব্যবহারে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না।

প্রশ্ন : প্রাকৃতিক সম্পদ কী? মানবসৃষ্ট সম্পদের চারটি ব্যবহার উলেস্নখ করো।

উত্তর : প্রকৃতিতে পাওয়া যেসব সম্পদ মানুষ তার চাহিদা পূরণের জন্য ব্যবহার করে সেগুলোই প্রাকৃতিক সম্পদ। যেমন : মাটি, পানি, বায়ু প্রভৃতি।

মানবসৃষ্ট সম্পদের চারটি ব্যবহার নিচে উলেস্নখ করা হলো :

১. কাঠ মানবসৃষ্ট সম্পদ যার সাহায্যে ঘরের দরজা, জানালা, আসবাবপত্র ইত্যাদি তৈরি করা যায়।

২. বাড়ির জানালায়, দোকানে, শোরুমে আমরা কাচ ব্যবহার করি। কাচ মানবসৃষ্ট সম্পদ যা নির্মিত হয় প্রাকৃতিক সম্পদ বালুকণা থেকে।

৩. প্রাকৃতিক সম্পদ গাছ, বাঁশ ইত্যাদি থেকে কাগজ প্রস্তুত করা হয় যা আমরা লেখার কাজে ব্যবহার করি।

৪. নির্মাণ কাজে আমরা সিমেন্ট ব্যবহার করি। প্রাকৃতিক সম্পদ চুনাপাথর থেকে সিমেন্ট উৎপাদিত হয়।

প্রশ্ন : সম্ভাবনাময় বিকল্প জ্বালানি হিসেবে বায়ুশক্তির ব্যবহার পাঁচটি বাক্যে বর্ণনা করো।

উত্তর : বায়ুশক্তির ব্যবহার :

১. বায়ুপ্রবাহকে ব্যবহার করে অনেক কাজ করা যায়, যেমন- ঘুড়ি ওড়ানো, পাল তুলে নৌকা চালানো, গাড়ির চাকায় হাওয়া দেওয়া ইত্যাদি।

২. এখন অনেক দেশ বায়ুশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদু্যৎ উৎপাদন করছে।

৩. অনেক দেশে কলকারখানা চালানো হয় বায়ুপ্রবাহের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে।

৪. শক্তি উৎপাদন ও সেচ কাজে বায়ুকল বা উইন্ডমিল ব্যবহার করা হয়।

\হ৫. বিকল্প জ্বালানির উৎস হিসেবে বায়ুশক্তিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, কেননা বায়ুশক্তি আহরণে অবকাঠামোগত খরচ ছাড়া অন্য কোনো খরচ লাগে না এবং পরিবেশ দূষণ হয় না বলে এ শক্তি সবুজ শক্তি ও ভবিষ্যৎ জ্বালানির উৎস।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে