প্রশ্ন : 'কুর্নিশ' শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর : 'কুর্নিশ' শব্দটির অর্থ অভিবাদন বা সম্মান প্রদর্শন।
প্রশ্ন : কী করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হয়?
উত্তর : সমাজের নিয়ম পাল্টাতে গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
প্রশ্ন : সমাজের নিয়ম পাল্টাতে গেলে কাদের আক্রমণের শিকার হতে হয়?
উত্তর : সমাজের নিয়ম পাল্টাতে গেলে সমাজ-রক্ষকদের আক্রমণের শিকার হতে হয়।
প্রশ্ন : 'মেকি' শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : মেকি শব্দের অর্থ কপট।
প্রশ্ন : 'আগুনের ঝান্ডা' শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর : 'আগুনের ঝান্ডা' শব্দটির অর্থ অগ্নিপতাকা।
প্রশ্ন : 'আমার পথ' প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
উত্তর : 'আমার পথ' প্রবন্ধটি 'রুদ্র-মঙ্গল' গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে।
প্রশ্ন : কাজী নজরুল ইসলামের 'আমি' ভাবনা বিন্দুতে কীসের উচ্ছ্বাস জাগায়।
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলামের 'আমি' ভাবনা বিন্দুতে সিন্ধুর উচ্ছ্বাস জাগায়?
প্রশ্ন : কাজী নজরুল ইসলাম মানুষকে আরেক মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে কী হয়ে উঠতে চেয়েছেন?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলাম মানুষকে আরেক মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে 'আমরা' হয়ে উঠতে চেয়েছেন।
প্রশ্ন : কোনটি কাজী নজরুল ইসলামের প্রাণ প্রাচুর্যের উৎস বিন্দু?
উত্তর : সত্যের উপলব্ধি কাজী নজরুল ইসলামের প্রাণ প্রাচুর্যের উৎস বিন্দু।
\হঅনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন : 'আমার পথ দেখাবে আমার সত্য।'- কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের 'আমার পথ' প্রবন্ধে প্রাবন্ধিককে তাঁর কর্ণধার পথ দেখাবে।
কর্ণধার বলতে প্রাবন্ধিক মানুষের ভেতরকার ঐশ্বরিক শক্তি বা অলৌকিক ক্ষমতাকে বুঝিয়েছেন। মানুষের মগজ ও মন পরম স্রষ্টার পরম শক্তি জ্ঞানশক্তি ও প্রেমশক্তিতে ভরপুর। প্রাবন্ধিকের বিশ্বাস সত্য সব অসৎ শক্তিকে পরাজিত করে মানুষকে পূর্ণতার পথে নিয়ে যায়। তাই প্রাবন্ধিকের সত্য বা ঐশীশক্তি বা সৎ শক্তি সকল প্রকার আলস্য কর্ম-বিমুখতা, পঙ্গুত্ব, নৈরাজ্য, অবিশ্বাস ও জরাজীর্ণতাকে পিছনে ফেলে তাকে ন্যায় ও সত্যের পথ দেখাবে।
প্রশ্ন : কাজী নজরুল ইসলাম-এর মতে, দেশের দীর্ঘদিনের পরাধীনতার কারণ কী?
উত্তর : আত্মনির্ভরতার অভাবই কাজী নজরুল ইসলামের মতে দেশের দীর্ঘদিনের পরাধীনতার কারণ।
কাজী নজরুল ইসলাম মনে করেন, আত্মাকে চিনলেই আত্মনির্ভরতা আসে। তিনি বিশ্বাস করেন, এই আত্মনির্ভরতা যেদিন সত্যি সত্যিই আমাদের আসবে, সেইদিনই আমরা স্বাধীন হবো। কিন্তু আমরা নিজের প্রতি বিশ্বাস না রেখে গান্ধীজির মতো মহাপুরুষের ওপর নির্ভর করেছিলাম। বলে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন বিলম্বিত হয়েছিল। অর্থাৎ স্পষ্টত বোঝা যায়, কাজী নজরুল ইসলাম আত্মনির্ভরতার অভাবকেই পরাধীনতার কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন।
প্রশ্ন : 'মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম।' কেন?
উত্তর : বিদ্রোহী ও মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর 'আমার পথ' প্রবন্ধে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা তুলে ধরেছেন।
আমরা সবাই একই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। সবাই মিলে একই আকাশের তলে বসবাস করি, সবার রক্তই লাল, সৃষ্টিকর্তার আলো, বাতাস, খাদ্য উপভোগ করি। আবার আমরা সবাই একই সত্তার গুণগান করি। তাই ধর্মের মধ্যে কোনো বৈষম্য নেই। মানুষ হিসেবে আমরা একই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি এজন্য প্রাবন্ধিকের কাছে 'মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম'।
প্রশ্ন : 'আমি আছি'- এই কথা না বলে সবাই বলতে লাগলাম 'গান্ধীজি আছেন'- উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : 'আমি আছি' এই কথা না বলে সবাই বলতে লাগলাম গান্ধীজি আছেন'- উক্তিটিতে আমরা যে গান্ধীজির আদর্শ ঠিকমতো বুঝতে পারিনি তা বোঝানো হয়েছে।
মহাত্মা গান্ধী জাতির অভিভাবকরূপে এদেশের মানুষের স্বাবলম্বনের শিক্ষা দিচ্ছিলেন। প্রত্যেকটি মানুষকে শেখাচ্ছিলেন নিজের ওপর বিশ্বাস অটুট রাখতে। কিন্তু সেদিন আমরা তাঁর আদর্শ, তাঁর কথা ঠিক বুঝিনি। ফলে আমরা নিজের অস্তিত্বের ঘোষণা না করে বলেছিলাম, 'গান্ধীজি আছেন'। আর নিজের পরিবর্তে গান্ধীজির ওপর নির্ভরশীলতার বিষয়টিই ব্যক্ত হয়েছে আলোচ্য উক্তিতে।
প্রশ্ন : অন্তরে মিথ্যার ভয় থাকলে প্রাবন্ধিক কেন বাইরের ভয়কে ভয় মনে করেন?
উত্তর : অন্তরে যদি ভন্ডামি, ছলনা, দুর্বলতা থাকে তাহলে বাইরের যেকোনো শক্তিই তাকে পরাজিত করে বলে প্রাবন্ধিক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।
যে-বাংলাদেশ সারা পৃথিবীর লোককে দিনের পর দিন নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে পারে তারাই আজ সকলের দ্বারে ভিখারি। এদেশের ঐশ্বর্য বিদেশিরা লুটে নিয়ে যায় তার প্রতিবাদ না করে বাংলাদেশের মানুষরা তাদের গোপনে সাহায্য করে বলে প্রাবন্ধিক আলোচ্য উক্তির অবতারণা করেছেন।
প্রশ্ন : কাজী নজরুল ইসলাম হিন্দু-মুসলমানদের মিলনের অন্তরায়কে দূর করতে চেয়েছিলেন কেন?
উত্তর : মানব-ধর্মকে সবচেয়ে বড় ধর্ম হিসেবে গ্রহণ করায় এবং হিন্দু-মুসলমানের মিলন প্রত্যাশায় কাজী নজরুল ইসলাম হিন্দু-মুসলমানের মিলনের অন্তরায়কে দূর করতে চেয়েছিলেন।
কাজী নজরুল ইসলাম আজীবন মানব-ধর্মে বিশ্বাসী। তাঁর কাছে মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু-মুসলমানের মিলনের অন্তরায় বা ফাঁকি কোনখানে তা দেখিয়ে দিয়ে এর গলদ দূর করা এবং দেশব্যাপী মানব-ধর্ম তথা সব ধর্মের মানুষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা। আর এই কারণেই তিনি হিন্দু-মুসলমানের মিলনের অন্তরায় দূর করতে চেয়েছিলেন।
প্রশ্ন : 'ভুলের মধ্য দিয়েই সত্যকে পাওয়া যায়।' -বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : পৃথিবীতে যেমন অন্ধকার ভেদ করে আলো উদ্ভাসিত হয় তেমনি ভুলের পাহাড়ের মধ্য দিয়েই প্রকৃত সত্যের সন্ধান পাওয়া যায়।
মানুষ পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর এই পৃথিবীর রূপ-রস-গন্ধের দ্বারা আকৃষ্ট হয়। ইন্দ্রিয়ের দ্বারা সে প্রতিনিয়ত ভুল করে। সে ভুল যদি নিজের জ্ঞান দ্বারা সে নিজে উপলব্ধি করে তাহলে নিজেকে সংশোধন করা যায়। সংশোধিত হওয়ার পর সে তার প্রকৃত সত্য খুঁজে পায়। তাই এ কথা বলা যায় যে, মানুষ ভুল করে, সে ভুল আবার কখনো ফুল হয়ে ফুটে ওঠে।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়