নূরুলদীনের কথা মনে পড়ে যায়
প্রশ্ন: 'নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়' কবিতাটির রচয়িতা কে?
উত্তর : সৈয়দ শামসুল হক।
প্রশ্ন: সৈয়দ শামসুল হক জ্যোৎস্নাকে কিসের সাথে তুলনা করেছেন?
উত্তর : ধবল দুধের সাথে তুলনা করেছেন।
প্রশ্ন: নিলক্ষার নীল আকাশে কীভাবে চাঁদ ওঠে?
উত্তর : তীব্র শিস দিয়ে চাঁদ ওঠে।
প্রশ্ন: 'নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়' কবিতায় কবি কীভাবে সবাইকে আসতে বলেছেন?
উত্তর : গোল এবং ঘন হয়ে আসতে বলেছেন।
প্রশ্ন: হাজার হাজার তারা কোথায় দেখা যায়?
উত্তর : নিলক্ষার নীল আকাশে হাজার হাজার তারা দেখা যায়।
প্রশ্ন: নিলক্ষার নীল আকাশের নিচে কতটি লোকালয় আছে?
উত্তর : ঊনসত্তর হাজার লোকালয় আছে।
প্রশ্ন: কবি সবার কাছে কী মিনতি করেন?
উত্তর : স্থির হয়ে বসার জন্য মিনতি করেন।
প্রশ্ন: 'নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়' কবিতায় অতীত কোথায় হানা দেয়?
উত্তর : অতীত মানুষের বন্ধ দরজায় হানা দেয়।
প্রশ্ন: দীর্ঘ দেহ নিয়ে কখন নূরলদীন দেখা দেয়?
উত্তর : যখন বাংলায় কালঘুম।
প্রশ্ন: সোনার বাংলায় যখন শকুন নেমে আসে, তখন কার কথা মনে পড়ে যায়?
উত্তর : নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়।
প্রশ্ন: ১১৮৯ সালে বাংলায় কী ঘটেছিল?
উত্তর : ফকির বিদ্রোহ ঘটেছিল।
প্রশ্ন: 'নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়' কবিতায় দালাল কারা?
উত্তর : দেশদ্রোহীরা।
প্রশ্ন: কবি সবাইকে কোথায় আসার আহ্বান জানান?
উত্তর : কবি সবাইকে প্রশস্ত প্রান্তরে আসার আহ্বান জানায়।
প্রশ্ন: কার কথা সারাদেশে পাহাড়ি ঢালে?র মতো নেমে আসে?
উত্তর : নূরলদীনের কথা।
প্রশ্ন: অভাগা মানুষ কার আশায় জেগে ওঠে?
উত্তর : অভাগা মানুষ নূরলদীনের আশায় জেগে ওঠে।
প্রশ্ন: নূরলদীন কোথায় ফিরে আসবে বলে সবাই মনে করে?
উত্তর : নূরলদীন বাংলায় ফিরে আসবে বলে সবাই মনে করে।
প্রশ্ন: নূরলদীন আবার কবে ডাক দিবে বলে সবাই মনে করে?
উত্তর : কাল পূর্ণিমায়।
প্রশ্ন: দীর্ঘ দেহ নিয়ে নূরলদীন কোথায় দেখা দেয়?
উত্তর : মরা আঙিনায়।
প্রশ্ন: 'নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়' কবিতায় অভাগা মানুষের প্রত্যাশা কী?
উত্তর : নূরলদীনের প্রত্যাবর্তন।
অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: ক্ষেত, মাঠ, নদী, বীজ, সংসার সবকিছুকে কবি নষ্ট বলেছেন কেন?
উত্তর : ক্ষেত, মাঠ, নদী, বীজ, সংসার সবকিছুকে কবি বিরুদ্ধ পরিবেশের কারণে নষ্ট বলেছেন।
বিরুদ্ধ শক্তির আগ্রাসন যখন চারদিক গ্রাস করে নিয়েছে, তখন কবির কাছে সবকিছু অস্থির, অসহ্য মনে হয়। বাংলার অবারিত ক্ষেত, মাঠ, নদী, সমাজ-সংসার সব কিছুর উপরই এ পরাশক্তির প্রভাব। কবি দেখতে পান এ প্রভাবে সকল কিছুই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাদের প্রভাবে সুন্দর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সংসারে মানুষের মাঝে বাড়ছে কষ্ট, অশান্তি। তাই কবি, ক্ষেত, মাঠ, নদী, বীজ, সংসার সব কিছুকে নষ্ট বলেছেন।
প্রশ্ন: 'স্তব্ধতার দেহ ছিঁড়ে কোন ধ্বনি? কোন শব্দ?'-উক্তিটি দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : 'স্তব্ধতার দেহ ছিঁড়ে কোন ধ্বনি? কোন শব্দ?'- দ্বারা বাংলার জাগরণকে বোঝানো হয়েছে।
যখন শত্রম্নরা দেশকে জিম্মি করে সমস্ত কিছু শুষে নিচ্ছে, চারদিকে হাহাকার ধ্বনি প্রকম্পিত হতে হতে স্তব্ধতায় নিমগ্ন হয়ে গেছে, তখন সমস্ত স্তব্ধতাকে ছাপিয়ে ভেসে জাগরণের ধ্বনি। সে ধ্বনিতে মানুষের মনে শক্তি সঞ্চিত হয়। সে ধ্বনি মানুষকে সাহসী করে তোলে। সে জাগরিত ধ্বনি মানুষকে শত্রম্নর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শেখায়।
প্রশ্ন: কবি কেন সকলকে স্থির হয়ে বসার জন্য মিনতি করেন?
উত্তর : সবাইকে কবি শত্রম্নর বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়ার জন্য মিনতি করেন।
অতীতের ঘটে যাওয়া নানা ধরনের সংগ্রামী ইতিহাস কবি সবাইকে শোনাতে চান। কারণ অতীতের সেসব ঘটনার সাথে বর্তমানের বিপদের মিল রয়েছে। কবি চান অতীত সে ঘটনাগুলো শুনে মানুষ প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হোক। তাই কবি মিনতি করেন সবাই যেন ঘন হয়ে উপস্থিত হয় এবং স্থির হয়ে বসে কবির কথা শুনে শত্রম্নর বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়।
প্রশ্ন: কবির কেন বার বার নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়?
উত্তর : কবির বার বার নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় কারণ নূরলদীন ইতিহাসে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এক প্রতিবাদী চরিত্র।
কবি অতীত সংগ্রামের ইতিহাসে কাতর। যখনই মনে পড়ে বাংলা দীর্ঘদিন দুর্দশাগ্রস্ত ছিল, বাংলায় অত্যাচার বৃদ্ধি পেয়েছিল, যখন বাংলা দেশদ্রোহীদের দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং বাংলার বাকস্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছিল, সে সব ইতিহাস মনে পড়লেই কবির নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়। নূরলদীন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল, তার উদাত্ত আহ্বান দ্বারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। তাই কবি যখনই চারদিকে অরাজকতা দেখেন তখনই নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়।
প্রশ্ন: 'যখন আমার কণ্ঠ বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায়'- বলে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : কবি বাকস্বাধীনতার হরণকে উলিস্নখিত পঙ্ক্তির মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।
বাংলা ভাষা যখন বাংলার মানুষের মুখ থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিল, কবি সে সময়কার কথা বলেছেন। বাংলার মানুষের মাতৃভাষা কেড়ে নিয়ে উর্দু ভাষাকে বাংলায় প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। বাকস্বাধীনতাকে যারা হরণ করতে চায় কবি তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ।
প্রশ্ন: 'নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়' কবিতায় 'ইতিহাসের প্রতিটি পৃষ্ঠায়' বলে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : 'নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়' কবিতায় প্রতিটি সংগ্রামের ইতিহাসকে ইতিহাসের প্রতিটি পৃষ্ঠা দ্বারা বোঝানো হয়েছে।
কবি সংগ্রামী চেতনার ইতিহাসকে বড় করে দেখতে গিয়ে ইতিহাসের প্রতিটি বিদ্রোহের কথা মনে করেন। কবির বিদ্রোহ, কৃষক বিদ্রোহ, নীলবিদ্রোহ, মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি সব সংগ্রামের ইতিহাস মানুষের মনে লিপিবদ্ধ। ইতিহাসের প্রতিটি পৃষ্ঠায় কবি এসব বিদ্রোহের ইতিহাসের বর্ণনা দেখতে পান।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়