একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রথমপত্র

প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

আতাউর রহমান সায়েম, সহকারী শিক্ষক, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
'বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ' প্রশ্ন:বাসববিজয়ী বলা হয় কাকে? উত্তর : মেঘনাদকে। প্রশ্ন:বিভীষণ রাঘবদাস- একথা শুনে মেঘনাদের কী ইচ্ছে হয়? উত্তর : মেঘনাদের মরার ইচ্ছে হয়। প্রশ্ন:দেবকুল সতত কী হতে বিরত? উত্তর : পাপ হতে বিরত। প্রশ্ন:বনবাসী বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? উত্তর : লক্ষ্ণণকে বোঝানো হয়েছে। প্রশ্ন:'জীমূতেন্দ্র' শব্দের অর্থ কী? উত্তর : মেঘের ডাক। প্রশ্ন:'মৃগেন্দ্রকেশরী' শব্দের অর্থ কী? উত্তর : কেশরযুক্ত পশুরাজ সিংহ। প্রশ্ন:'মেঘনাদবধ' কাব্যটি মোট কয়টি সর্গে বিন্যস্ত? উত্তর : নয়টি সর্গে বিন্যস্ত। প্রশ্ন:'বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ' 'মেঘনাদবধ' কাব্যের কোন সর্গ থেকে সংকলিত হয়েছে? উত্তর : 'মেঘনাদবধ' কাব্যের ষষ্ঠ সর্গ থেকে সংকলিত হয়েছে। প্রশ্ন:'মেঘনাদ-বধ' কাব্যের ষষ্ঠ সর্গের শিরোনাম কী? উত্তর : ষষ্ঠ সর্গের শিরোনাম হলো 'বধো' (বধ)। প্রশ্ন:রাবণের জ্যেষ্ঠপুত্রের নাম কী? উত্তর : মেঘনাদ। প্রশ্ন:রামায়ণ-এর রচয়িতার নাম কী? উত্তর : বাল্মীকি। অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন:'নিজ গৃহপথ, তাত, দেখাও তস্করে? উক্তিটি ব্যাখ্যা কর। উত্তর : লক্ষ্ণণকে পথ দেখিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞালয়ে নিয়ে আসায় বিভীষণকে একথা বলে তিরস্কার করেছেন মেঘনাদ। দেবতাদের আশীর্বাদের এবং বিভীষণের সহায়তায় শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্ণণ নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে আসেন। সেখানে পূজারত নিরস্ত্র মেঘনাদকে যুদ্ধে আহ্বান জানান লক্ষ্ণণ। এসময় অকস্মাৎ যজ্ঞাগারের প্রবেশদ্বারে বিভীষণকে দেখে সমস্ত কিছু বুঝতে সমর্থ হন মেঘনাদ। তখন মেঘনাদ চোরের মতো লক্ষ্ণণকে রাক্ষসপুরীতে আনার জন্য বিভীষণকে ভর্ৎসনা করে উক্ত কথাটি বলেন। প্রশ্ন:'মৃগেন্দ্রকেশরী, কবে, হে বীর কেশরী, সম্ভাষে শৃগাল মিত্রভাবে' কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? উত্তর : 'মৃগেন্দ্রকেশরী, কবে, হে বীরকেশরী, সম্ভাষে শৃগালে মিত্রভাবে'- এ কথাটি দ্বারা মর্যাদাসম্পন্ন কারো সাথে যে নিচুস্তরের বন্ধুত্ব হতে পারে না, সেটিই বোঝানো হয়েছে। লক্ষ্ণণকে হত্যার উদ্দেশ্যে মেঘনাদ অস্ত্রাগারের পথ ছাড়তে বললে বিভীষণ জানান যে, তিনি এ কাজ করতে পারবেন না। কেননা, তিনি রামের আজ্ঞাবহ বলে তার পক্ষে রামের বিরুদ্ধে কাজ করা সম্ভব নয়। তার এ উত্তর শুনে মেঘনাদ, বিভীষণকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন যে লঙ্কার শ্রেষ্ঠ বংশে তার জন্ম। অথচ নিম্নশ্রেণির রামের দাস বলে নিজেকে কলঙ্কিত করলেন তিনি। এমতাবস্থায় মেঘনাদ বিভীষণকে এটাও মনে করিয়ে দেন যে, সিংহের কখনো শেয়ালের সাথে বন্ধুত্ব হয় না। প্রশ্ন:'কী দেখি ডরিবে এ দাস হেন দুর্বল মানবে'- কথাটি ব্যাখ্যা কর। উত্তর : 'কী দেখি ডরিবে এ দাস হেন দুর্বল মানবে'-উক্তিটি দ্বারা মেঘনাদের বীরত্বের কথা বোঝানো হয়েছে। লঙ্কার শ্রেষ্ঠবীর মেঘনাদকে যজ্ঞরত অবস্থায় লক্ষ্ণণ যুদ্ধে আহ্বান করেন। অস্ত্রহীন মেঘনাদ যজ্ঞাগারের প্রবেশদ্বারে বিশ্বাসঘাতক বিভীষণকে দেখতে পেয়ে তাকে ভর্ৎসনা করেন। অস্ত্র নেওয়ার জন্য দ্বার ছাড়তে বলেন। বিভীষণ পথ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানালে ইন্দ্রজিৎ মেঘনাদ তাকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, তিনি দেব-দৈত্য-নরের যুদ্ধে তার বিজয় লাভের কথা। তিনি একথার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেন যে, লক্ষ্ণণের মতো দুর্বল মানবকে ভয় পাওয়ার মতো বীর তিনি নন। প্রশ্ন:'হে পিতৃব্য, তব বাক্যে ইচ্ছি মরিবারে'- মেঘনাদ কেন এ কথা বলেছেন? উত্তর : রাক্ষসশ্রেষ্ঠ রাবণের ভাই বিভীষণ নিজেকে রামের দাস বলে পরিচয় দেওয়া মেঘনাদ পরম দুঃখে একথা বলেছেন। লক্ষ্ণণকে উচিত শিক্ষা দিতে অস্ত্রাগারে যাওয়ার জন্য বিভীষণকে পথ ছাড়তে বলেন মেঘনাদ। বিশ্বাসঘাতক বিভীষণ পথ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। এ ছাড়াও বিভীষণ বলেন যে, তিনি রাঘবদাস। তার পক্ষে রামের বিপক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। বিভীষণের এই লজ্জাজনক কথা শুনে মেঘনাদ দুঃখে মরে যাওয়ারও ইচ্ছে পোষণ করেন। প্রশ্ন:'হেন সহবাসে, হে পিতৃব্য, বর্বরতা কেন না শিখিবে?'-উক্তিটি ব্যাখ্যা কর। উত্তর : উক্তিটির মাধ্যমে মেঘনাদ বোঝাতে চেয়েছেন যে, লক্ষ্ণণের মতো কপট ও হীনব্যক্তির সাহচর্যে থাকার কারণেই বিভীষণ বিশ্বাসঘাতকতার মতো বর্বরতা শিখেছেন। মেঘনাদ বিভীষণকে বিভিন্নভাবে ভর্ৎসনা করলে তিনি জানান যে, লঙ্কার রাজার কর্মদোষে আজ সোনার লঙ্কার এ পরিণতি। আর এই পাপপূর্ণ লঙ্কাপুরীর প্রলয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনি রামের পদাশ্রয় গ্রহণ করেছেন। একথা শুনে মেঘনাদ জানতে চান কোন ধর্মবলে তিনি দেশ জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা শিখলেন, তিনি পরিতাপের সঙ্গে বলেন যে, সঙ্গদোষের ফলে বিভীষণের এমন বর্বরতা শেখাই স্বাভাবিক। প্রশ্ন:নাহি শিশু লঙ্কাপুরে, শুনি না হাসিবে এ কথা কেন বলা হয়েছে? উত্তর : অস্ত্রহীন মেঘনাদের কাছে অস্ত্রসাজে সজ্জিত লক্ষ্ণণের যুদ্ধ প্রার্থনা যে অত্যন্ত হাস্যকর সে কথাই এ উক্তিটি দ্বারা ব্যক্ত করা হয়েছে। যজ্ঞরত মেঘনাদকে আক্রমণের জন্য লক্ষ্ণণ তলোয়ার কোষমুক্ত করলে মেঘনাদ যুদ্ধসাজ গ্রহণের জন্য সময় প্রার্থনা করেন লক্ষ্ণণের কাছে। তিনি লক্ষ্ণণকে এ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন যে, যুদ্ধে বীরের ধর্ম হচ্ছে সামনাসামনি যুদ্ধ করা। অস্ত্রসাজে সজ্জিতের সাথে নিরস্ত্রের যুদ্ধ হয় না। কিন্তু বীরের আচরণকে কলঙ্কিত করে লক্ষ্ণণ জানান, তিনি যেকোনো কৌশলে শত্রম্ন হনন করতে চান। লক্ষ্ণণের এই আচরণের কারণেই বলা হয়েছে যে, লঙ্কাতে এমন কোনো শিশু নেই যে, একথা শুনে হাসবে না।