শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
  ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

ষষ্ঠ অধ্যায়

প্রশ্ন : জাঙ্কফুড বলতে কী বোঝ, ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : জাঙ্কফুড হচ্ছে এক ধরনের কৃত্রিম খাদ্য যাতে চর্বি, লবণ, কার্বনেট ইত্যাদি ক্ষতিকারক দ্রব্যের আধিক্য থাকে। যেমন- আলুর চিপস, বার্গার, ক্যান্ডি, কোমল পানীয়, কৃত্রিম বিভিন্ন ফলের রস, চকোলেট ইত্যাদি।

ব্যাখ্যা : এসব খাবারে পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ খুব কম বা নেই বললেই চলে। ফলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। উচ্চমাত্রায় মিষ্টিযুক্ত শস্যদানা, যা বিশেষ করে শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়, তাও জাঙ্কফুড। যেমন- ফ্রুট লুপস। তাৎক্ষণিকভাবে খাওয়ার জন্য জাঙ্কফুড সুবিধাজনক। যাতে উচ্চমাত্রায় চর্বি ও লবণ থাকে। এতে সামান্য শাকসবজি বা খাদ্য-আঁশ সামান্য থাকতে পারে; যা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও উপকারী নয়।

প্রশ্ন : খাদ্য সংরক্ষণের ৩টি উপায় বর্ণনা করো।

উত্তর : খাদ্য সংরক্ষণের ৩টি উপায় হলো-

(র) রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ : চাল, ডাল, গম ইত্যাদি খাদ্যশস্য রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়।

(রর) হিমাগারে সংরক্ষণ : শাকসবজি, মাছ, মাংস ইত্যাদি হিমাগারে সংরক্ষণ করে বছরের বিভিন্ন সময় বাজারে সরবরাহ করা হয়।

(ররর) বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ : ফল থেকে তৈরি জ্যাম, জেলি, আচার ইত্যাদি বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়।

প্রশ্ন : খাদ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : খাদ্যের অপচয় রোধ করে সারা বছর সরবরাহ নিশ্চিত করতে খাদ্য সংরক্ষণ অপরিহার্য। খাদ্য সংরক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সব খাদ্যদ্রব্য সব দেশে হয় না। কিন্তু এমন অনেক খাদ্যদ্রব্য আছে যা সারা বছরই প্রয়োজন হয়। তাই সব দেশেই প্রায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ করতে হয়। খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে-

(র) খাদ্যের অপচয় রোধ করা যায়।

(রর) দ্রম্নত পচন থেকে খাদ্যকে রক্ষা করা যায়।

(ররর) খাবারে পচন সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বিস্তার রোধ করা যায়।

(রা) মৌসুমি খাদ্যদ্রব্য সারা বছর পাওয়া যায়।

(া) দূরবর্তী এলাকায় সহজে খাবার সরবরাহ করা যায়।

তাই বলা যায়, খাদ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রশ্ন : খাদ্যে ব্যবহৃত দুটি রাসায়নিক পদার্থের নাম লেখো। খাদ্যে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ৩টি ক্ষতিকর প্রভাব উলেস্নখ করো।

উত্তর : খাদ্যে ব্যবহৃত দুটি রাসায়নিক পদার্থ হলো-

(র) ফরমালিন, যা খাদ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।

(রর) ক্যালসিয়াম কার্বাইড, যা ফল পাকানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।

খাদ্য দ্রব্য উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য তৈরি, খাদ্য সংরক্ষণ, ফল পাকানো, বাজারজাতকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ফলে মানুষের শরীরের নানা রকম ক্ষতি হয়। এর তিনটি ক্ষতিকর প্রভাব হলো-

(র) বৃক্ক অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

(রর) যকৃত অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

(ররর) ক্যানসারের মতো রোগ হতে পারে।

প্রশ্ন : জাঙ্ক ফুড কী? জাঙ্ক ফুড বেশি খেলে কী ক্ষতি হয়?

উত্তর : জাঙ্ক ফুড হলো অত্যধিক চিনি, লবণ ও চর্বিযুক্ত পুষ্টিহীন কিন্তু সুস্বাদু এক ধরনের কৃত্রিম খাবার। জনপ্রিয় জাঙ্ক ফুডের মধ্যে রয়েছে বার্গার, পিজ্জা, পটেটো চিপস, ফ্রাইড চিকেন, কোমল পানীয় ইত্যাদি।

জাঙ্ক ফুড সুস্বাদু হলেও সুষম নয়। এসব খাবারে পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ খুব কম বা নেই বললেই চলে। জাঙ্ক ফুডে অধিক পরিমাণে চিনি, লবণ ও চর্বি থাকে, যা আমাদের শরীরে খুব সামান্য দরকার হয়। তাই সাধারণ খাবারের বদলে জাঙ্ক ফুড বেশি খেলে পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বা মোটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

প্রশ্ন : বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খাদ্য সংরক্ষণের উপায় পাঁচটি বাক্যে লেখো।

উত্তর : বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খাদ্য সংরক্ষণের পাঁচটি উপায় হলো :

(র) খাদ্যের বৈশিষ্ট্য বা গুণাগুণ ঠিক রেখে খাদ্যদ্রব্যকে উচ্চতাপে শুকানো, যেমন- মুড়ি, খই ইত্যাদি।

(রর) উচ্চতাপে খাদ্যদ্রব্যের জীবাণু ধ্বংস করে বদ্ধ পাত্রে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা, যেমন- মাছ, মাংস, ফল ইত্যাদি।

(ররর) বরফ জমানো ঠান্ডায় মাছ, মাংস, মটরশুটি, টমেটো ইত্যাদি সংরক্ষণ করা।

(রা) লবণ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাছ সংরক্ষণ করা, যেমন- নোনা ইলিশ।

(া) তেলের সাহায্যে খাদ্য সংরক্ষণ করা, যেমন- আচার।

প্রশ্ন : একটি বার্গারে বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন- গরু ও মুরগির মাংস, টমেটো, লেটুস, পনির, পাউরুটি ইত্যাদি থাকে। তারপরেও বেশি বার্গার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কেন?

উত্তর : বার্গারে অধিক পরিমাণে চিনি, লবণ ও চর্বি থাকে, যা শরীরে পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির মতো সমস্যার জন্য দায়ী। তাই অতিরিক্ত বার্গার খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

বার্গার সুষম খাদ্য নয়। এটি এক ধরনের কৃত্রিম খাদ্য, যাতে গরু ও মুরগির মাংস, টমেটো, লেটুস, পনির, পাউরুটি ইত্যাদি থাকে। বার্গারে বিদ্যমান টমেটো, লেটুস ইত্যাদি আমাদের জন্য যতটা না উপকারী তার চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতিকর হলো গরু ও মুরগির মাংস, পনির, পাউরুটি ইত্যাদি বিদ্যমান উচ্চমাত্রার চর্বি ও লবণ। এসব চর্বি বা লবণ আমাদের শরীরে খুব সামান্যই দরকার হয়। আমরা যখন অধিক পরিমাণে চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণ করি তখন আমাদের দেহ এগুলোকে চর্বিকণায় রূপান্তরিত করে। ফলে আমাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়, দেহ স্থূলকায় হয়ে পড়ে। খুব বেশি বার্গার খেলে পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বা মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে