পঞ্চম অধ্যায়
প্রশ্ন : পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের চারটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর : যার ওজন আছে এবং জায়গা দখল করে তাকে পদার্থ বলে। পদার্থের চারটি বৈশিষ্ট্য হলো :
১. পদার্থের ওজন আছে।
২. পদার্থ জায়গা দখল করে।
৩. তাপ প্রয়োগে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে।
৪. বল প্রয়োগে পদার্থ বাধা দেয়।
প্রশ্ন: 'শক্তির সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই, শুধু এটি রূপ বদল করে'- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : শক্তি এমন একটি ধারণা যার কোনো ওজন নেই, আকার নেই, আয়তন নেই কিন্তু অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। শক্তিকে কখনো সৃষ্টি করা যায় না। এটিকে শুধু রূপান্তর করা যায়। শক্তিকে যেমন সৃষ্টি করা যায় না তেমনি ধ্বংসও করা যায় না। ব্যবহার শেষ হলে এটি ব্যবহারের যোগ্যতা হারায় কিন্তু ধ্বংস হয় না। অবস্থার পরিবর্তন ঘটালে এর রূপান্তর ঘটে।
প্রশ্ন : শক্তির সংরক্ষণ জরুরি কেন? পাঁচটি বাক্যে লেখো।
উত্তর : শক্তির সংরক্ষণ জরুরি কারণ-
১. শক্তির উপর আমাদের দৈনন্দিন জীবন নির্ভরশীল। শক্তির সংরক্ষণ না হলে দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজ বিঘ্নিত হবে।
২. শক্তি সংরক্ষণ না করলে ভবিষ্যৎ আমাদের প্রয়োজনে শক্তি পাওয়া যাবে না।
৩. শক্তির সংরক্ষণ করা না হলে পরিবেশের নানা ক্ষতি ও দূষণ ঘটবে।
৪. শক্তির উৎস নিঃশেষ হলে সহজে তা পাওয়া যায় না।
৫. শক্তির সংরক্ষণের ফলে আমরা প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে পারি।
প্রশ্ন : আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শক্তি সংরক্ষণের উপায় ৫টি বাক্যে লেখো।
উত্তর : আমাদের দৈনন্দিন শক্তি সংরক্ষণের উপায় হলো-
১. ব্যবহারের পর বৈদু্যতিক বাতি ও যন্ত্রপাতিগুলো বন্ধ রাখা।
২. প্রয়োজনে অতিরিক্ত সময় রেফ্রিজারেটরের দরজা খোলা না রাখা।
৩. গাড়ির বদলে যথাসম্ভব পায়ে হাঁটা বা সাইকেল ব্যবহার করা।
৪. বাতি না জ্বালিয়ে পর্দা সরিয়ে দিনের আলো ব্যবহার করা।
৫. বাড়িতে ছায়ার ব্যবস্থারের জন্য গাছ লাগানো।
প্রশ্ন : পদার্থ ও শক্তির মধ্যে ৫টি পার্থক্য লেখো।
উত্তর : পদার্থ ও শক্তির মধ্যে ৫টি পার্থক্য হলো :
পদার্থ
১. যার ওজন আছে, জায়গা দখল করে, তাই পদার্থ।
২. আকার ও আকৃতি থাকে।
৩. এর তিনটি দশা বিদ্যমান।
৪. পদার্থকে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায়।
৫. বই, টেবিল হলো পদার্থের উদাহরণ।
শক্তি
১. কাজ করার সামর্থ্য হলো শক্তি।
২. কোনো আকার বা আকৃতি নেই।
৩. শক্তির নানান দশা থাকে।
৪. শক্তিকে কেবল রূপান্তর করা যায়।
৫. বিদু্যৎ শক্তি, সৌর শক্তি হলো শক্তির উদাহরণ।
প্রশ্ন : যখন টিভি চালানো হয় তখন শক্তির কী কী পরিবর্তন হয়?
উত্তর : যখন টিভি চালানো হয় তখন শক্তির যে যে পরিবর্তন হয় তা হলো-
ক) বিদু্যৎ শক্তি আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
খ) বিদু্যৎ শক্তি তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
গ) বিদু্যৎ শক্তি শব্দ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
প্রশ্ন : ঠান্ডা পানির গস্নাস হাত দিয়ে ধরে রাখলে হাত ঠান্ডা হয়ে যায়। তোমার বন্ধু মনে করে গস্নাসের ঠান্ডা হাতে চলে যাওয়ার কারণে হাত ঠান্ডা হয়ে যায়। তার ধারণাটি কী সঠিক? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : ঠান্ডা পানির গস্নাস হাত দিয়ে ধরে রাখলে হাত ঠান্ডা হয়ে যায়। আমার বন্ধু মনে করে গস্নাসের ঠান্ডা হাতে চলে যাওয়ার কারণে হাত ঠান্ডা হয়ে যায়। তার ধারণাটি সঠিক, কারণ আমরা জানি কঠিন পদার্থের মধ্যদিয়ে তাপ পরিবহণ পদ্ধতিতে সঞ্চালিত হয়। ঠান্ডা পানির গস্নাস যখন হাত দিয়ে ধরা হয় তখন সেটি পরিবহণ পদ্ধতিতে হাতে চলে আসে এবং হাত ঠান্ডা হয়। সুতরাং আমার বন্ধুর ধারণা সঠিক।
প্রশ্ন : যখন পাতিলে ভাত রান্না করা হয় তখন তাপ কীভাবে সঞ্চালিত হয়?
উত্তর : আমরা জানি, তিনটি উপায়ে তাপ সঞ্চালিত হয়। যেমন- পরিবহণ, পরিচলন এবং বিকিরণ।
যখন পাতিলে ভাত রান্না করা হয় তখন তাপ পরিচলন পদ্ধতিতে সঞ্চালিত হয়। যখন ভাত রান্না করার জন্য পাতিল চুলায় দেওয়া হয়, তখন প্রথমে নিচের অংশ গরম হয়ে উপরে উঠে আসে। আর পাত্রের উপরের অংশের তাপমাত্রা কম থাকায় তা নিচে নেমে আসে, যা আবার গরম হয়ে উপরে উঠে আসে। এভাবে তাপ পাত্রের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
প্রশ্ন : বাড়ির আশপাশে বৃক্ষরোপণ করে কীভাবে শক্তি সংরক্ষণ করা যায়?
উত্তর : আমরা প্রতিদিন নানা কাজে শক্তি ব্যবহার করি। এই শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট। তাই আমাদের শক্তির যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। বাড়ির আশপাশে বৃক্ষরোপণ করে আমরা শক্তি সংরক্ষণ করতে পারি। কারণ বৃক্ষ আমাদের ছায়া দেয় এবং বাতাস দেয়। এর ফলে আমরা গরম অনুভব করি না এবং ঘেমে যাই না। সুতরাং আমাদের বিদু্যৎচালিত বাতাসের দরকার হয় না। তাই বিদু্যৎশক্তি সংরক্ষিত হয়। এভাবে আমরা বাড়ির আশপাশে বৃক্ষরোপণ করে শক্তি সংরক্ষণ করতে পারি।