৩. মানাস : নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে তিস্তার একটি শাখা নদী থেকে এটি উৎপত্তি হয়। উৎপত্তিস্থল থেকে গঙ্গাচড়া উপজেলা অতিক্রম করে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ বন্দরের পশ্চিমে প্রবাহিত হয়েছে। প্রবাহপথে মীরবাগ রেলওয়ে স্টেশনের পূর্বে বড় ব্রিজের নিচ দিয়ে পীরগাছা উপজেলায় প্রবেশ করে। পথে আলাইকুড়ি নদীকে সাক্ষাৎ দিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ভেতর দিয়ে ঘাঘট নদ হয়ে অবশেষে যমুনায় পতিত হয়েছে। এ নদের দূরত্ব বা দৈর্ঘ্য ৮৮ কিলোমিটার।
৪. আখিরা : আখিরা একটি ছোট নদী। রংপুরের পীরগঞ্জ ও দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। ১১৭৬ বঙ্গাব্দের দুর্ভিক্ষের সময় জরুরিভিত্তিতে খাদ্য সরবরাহের জন্য এ নদীর উৎপত্তি হয়। পীরগঞ্জের বড়বিল বা ধোপ নামক জলাশয় থেকে রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুষ্করিণী এলাকার চৌদ্দভূষণ বিল পর্যন্ত একটি খাল খনন করা হয়। এরপর বড় বিল থেকে আরেকটি খাল খনন করে ঘোড়াঘাট উপজেলার উত্তরে করতোয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। ঘোড়াঘাট বন্দর থেকে এখান দিয়ে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হতো। এছাড়া এ খালের মাধ্যমে অভ্যন্তর ভাগের পানি নিষ্কাশনও করা হতো। আকারে ও আকৃতিতে খালের মতো হলেও এ এলাকার জনজীবনে নদীটির ভূমিকা রয়েছে অনেক।
৫. মরা : রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চৈত্রকোল গ্রামের একটি জলাশয় থেকে উৎপত্তি হয়ে সর্পিল গতিতে বয়ে গেছে আটিয়াবাড়ী গ্রামে। এরপর গন্ধরপুর, কোমরসই ও কাদিরাবাদের মাঝ দিয়ে প্রভাবিত হয়ে সোনাইল গ্রামের পশ্চিম দিয়ে মহারাজপুর ঘাটের উত্তরে করতোয়ার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। বর্ষাকাল ছাড়া এ নদীতে পানি থাকে না। তাই লোকজন নাম দিয়েছে 'মরা নদী'। এ নদীর তীরে কাদিরাবাদ মদনখালী স্থানে কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে।
৬. টোপা : ঘাঘট নদ থেকে টোপা নদীর উৎপত্তি। উৎপত্তিস্থল থেকে রংপুর ক্যাডেট কলেজের কিছু দূরে রংপুর-বগুড়া সড়কের বড় ব্রিজের নিচ দিয়ে মাহিগঞ্জের দিকে চলে গেছে। এককালে মাহিগঞ্জের পশ্চিমে এ নদীর তীরে বড় বন্দর গড়ে উঠেছিল। বর্তমানে মাহিগঞ্জের ধারটি ভরাট হয়ে গেছে। ১৭৮৭ সালের ভূমিকম্পে এ নদীর গতিপথ পূর্বমুখী হয়ে মানস নদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
৭. ধাইজান : নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার দড়িভেজা বিলের স্রোত থেকে ধাইজান নদের উৎপত্তি। এটি জলঢাকা-কিশোরগঞ্জ প্রবাহিত হয়ে কিশোরগঞ্জের যমুনেশ্বরীতে পতিত হয়েছে। এর 'মরা ধাইজান' নামে একটি শাখা আছে, যা কিশোরগঞ্জের ধাইজান নদ থেকে উৎপত্তি এবং অবশেষে বদরগঞ্জ উপজেলার যমুনেশ্বরীতে পতিত হয়েছে।