তৃতীয় অধ্যায়
প্রশ্ন : নন্দিনী চুলায় বসানো হাঁড়ি থেকে পানিকে গ্যাসের মতো উড়ে যেতে দেখল। এই প্রক্রিয়াকে কী বলে? এরূপ পানির কয়েকটি অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে লেখো।
উত্তর : নন্দিনী চুলায় বসানো হাঁড়িতে তাপ দিলে পানি জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়। এভাবে তরল থেকে বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাষ্পীভবন বলে।
তাপ প্রয়োগ ও ঠান্ডা করার মাধ্যমে পানি এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তিত হয়। যেমন-
১. বরফে তাপ দিলে তা পানিতে পরিণত হয়।
২. পানিকে তাপ দিলে তা জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়।
৩. জলীয়বাষ্পকে ঠান্ডা করা হলে তা ঘনীভূত হয়ে পানিতে পরিণত হয়।
৪. পানিকে শীতল করা হলে তা কঠিন বরফে পরিণত হয়।
প্রশ্ন :পানিদূষণের প্রধান কারণ কোনটি বলে তুমি মনে কর? পানিদূষণের পাঁচটি প্রভাব উলেস্নখ কর।
উত্তর : মানুষের কর্মকান্ডই হলো পানিদূষণের প্রধান কারণ। পানিদূষণের পাঁচটি প্রভাব হলো-
১. জলজ প্রাণী মারা যায়।
২. জলজ খাদ্যশৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে।
৩. মানুষ ডায়রিয়া বা কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়।
৪. আর্সেনিকযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে হাতে-পায়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
৫. দূষিত পানিতে বসবাসকারী মাছের মাধ্যমে মানুষের দেহে ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন : অমিতদের বাগানের গাছটিতে কত ভাগ পানি রয়েছে? এই পানি গাছটিতে কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হয় তার চারটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : অমিতদের বাগানের গাছটির দেহে প্রায় ৯০ ভাগ পানি রয়েছে। এই পানি গাছটি যেসব কাজে ব্যবহার করে তা হলো-
র. সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরিতে গাছটি পানি ব্যবহার করে।
রর. গাছটি মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ করে পানির সাহায্যে।
ররর. পানি গাছটির দেহের বিভিন্ন অংশে পুষ্টি উপাদান পরিবহণ করে।
রা. প্রচন্ড গরমে পানি উদ্ভিদটির দেহ শীতল করতে সাহায্য করে।
চতুর্থ অধ্যায়
প্রশ্ন : মানুষ কীভাবে বায়ুপ্রবাহকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করে?
উত্তর : মানুষ বিভিন্নভাবে বায়ুপ্রবাহকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করে। যেমন :-
\হর. বিদু্যৎ উৎপাদনের জন্য বড় বড় চরকা বা টারবাইন ঘুরাতে বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করা হয়।
\হরর. হেয়ার ড্রায়ারের বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করা হয় ভেজা চুল শুকানোর কাজে।
\হররর. ভেজা কাপড় শুকানোর কাজে।
\হরা. হাতপাখা বা বৈদু্যতিক পাখার বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করা হয় শরীর ঠান্ডা রাখতে।
া. বায়ুপ্রবাহকে নৌকা চালানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন : মানুষের স্বাস্থ্যের উপর বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাবসমূহ কী? বায়ুদূষণ প্রতিরোধের তিনটি উপায় লেখো।
উত্তর : মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বায়ুদূষণ ক্ষতিকর। এর ফলে মানুষ ফুসফুসের ক্যানসার, শ্বাসজনিত রোগ, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
বায়ুদূষণ প্রতিরোধের তিনটি উপায় নিম্নরূপ :
র. প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার কমিয়ে, পুনর্ব্যবহার করে ও রিসাইকেল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দূষণ প্রতিরোধ করা যায়।
রর. ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে এবং গাছ লাগানোর মাধ্যমেও বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করা যায়।
\হররর. শক্তির ব্যবহার কমিয়ে অর্থাৎ জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহার না করে বায়ুদূষণ কমানো যায়।
প্রশ্ন :বায়ুদূষণের কারণ কী?
\হউত্তর : বায়ুদূষণের একটি বড় কারণ হলো মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ড। এর ফলে বায়ুতে বিভিন্ন ধরনের গ্যাস নির্গত হয়। কলকারখানা ও যানবাহন থেকে এসব গ্যাস বায়ুতে আসে। গাছপালা পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন ধোঁয়া থেকেও বায়ু দূষিত হয়। যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও মলমূত্র ত্যাগের কারণে বায়ুতে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং বায়ু দূষিত হয়।
প্রশ্ন : ভেজা কাপড় যত দ্রম্নত সম্ভব শুকানো প্রয়োজন। কিন্তু বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। ঘরের ভেতর কীভাবে আমরা দ্রম্নত কাপড় শুকাতে পারি।
উত্তর : সাধারণত আমরা ঘরের বাইরে রোদে কাপড় শুকাতে দেই। কিন্তু বাইরে বৃষ্টি হলে তখন আমাদের কাপড় শুকানোর ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। এক্ষেত্রে আমরা বায়ুপ্রবাহকে কাজে লাগিয়ে ভেজা কাপড় শুকাতে পারি। কেননা বায়ুপ্রবাহ ভেজাবস্তু থেকে দ্রম্নত পানি সরিয়ে নিতে সাহায্য করে। আর এ জন্য আমরা বৈদু্যতিক পাখার বাতাসের মাধ্যমে বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি করতে পারি এবং কাপড়গুলো দ্রম্নত শুকাতে পারি।
\হপ্রশ্ন : রিসাইকেল প্রক্রিয়া কীভাবে বায়ুদূষণ কমাতে পারে?
উত্তর : রিসাইকেল হলো একবার ব্যবহৃত দ্রব্য প্রক্রিয়াকরণ করে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে তোলা। আমাদের ব্যবহারের বিভিন্ন গৃহস্থালি দ্রব্য যেমন : কৌটা, বোতল, বাক্স, নানা রকম প্যাকেট ইত্যাদি ব্যবহারের পর সাধারণত ফেলে দেওয়া হয়। এসব বস্তু মাটিতে মেশে না বলে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ফলে বায়ু মারাত্মকভাবে দূষিত হয়। কিন্তু এই জিনিসগুলো ফেলে না দিয়ে যদি একটু মেরামত ও প্রক্রিয়াকরণ করা হয়, তাহলে তা আবার ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। ফলে তা দ্বারা বায়ুদূষণের কোনো সুযোগ থাকবে না। তাছাড়া বিভিন্ন বস্তু নতুন করে তৈরি করতে অধিক প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন- জীবাশ্ম-জ্বালানি ব্যবহৃত হয় যা বায়ুদূষণ ঘটায়। কিন্তু রিসাইকেলের মাধ্যমে বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করলে নতুন করে তৈরি করার প্রয়োজন কমে যাবে। এভাবে রিসাইকেল প্রক্রিয়া বায়ুদূষণ
কমাতে পারে।
প্রশ্ন : কী কী কারণে বায়ু দূষিত হয়? মানুষ কীভাবে বায়ুদূষণ করছে?
\হউত্তর : মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ড বায়ুদূষণের একটি বড় কারণ। বিশেষ করে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুতে বিভিন্ন ধরনের গ্যাস নির্গত হয়। কলকারখানা ও যানবাহন থেকে এসব গ্যাস বায়ুতে আসে। গাছপালা পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন ধোঁয়া থেকেও বায়ু দূষিত হয়। যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও মলমূত্র ত্যাগের কারণে বায়ুতে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং বায়ু দূষিত হয়।
\হমানুষ বায়ুদূষণের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কেননা তারা যেখানে-সেখানে ইটের ভাটা তৈরি করছে, যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলছে এবং মলমূত্র ত্যাগ করছে, বড় বড় কলকারখানা গড়ে তুলছে অথচ এর বর্জ্য ফেলার সুব্যবস্থা করছে না। এভাবেই মানুষ বায়ুকে দূষিত করছে।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়