পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

প্রকাশ | ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন : পানিদূষণ রোধে তোমার প্রতিবেশীদের জন্য পাঁচটি পরামর্শ উলেস্নখ কর। উত্তর : পানিদূষণ রোধে আমার প্রতিবেশীদের জন্য পাঁচটি পরামর্শ উলেস্নখ করা হলো- ১. গৃহস্থালি ও খাদ্যের আবর্জনা, বর্জ্য পদার্থ পানিকে দূষিত করে। তাই এসব ময়লা-আবর্জনা রান্না ঘরের নিষ্কাশন নালায় না ফেলে ডাস্টবিনে বা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। ২. পানিতে সাবান, ডিটারজেন্ট বা অন্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারে পানিদূষণ ঘটে। এগুলো ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। ৩. রোগীর জামা-কাপড় ও মলমূত্র পানি দূষিত করে এবং পানিবাহিত রোগ ছড়ায়। জলাশয়ের পানিতে এসব ধোয়া থেকে বিরত থাকতে বলব। ৪. পানিতে পলিথিন ও পস্নাস্টিকসামগ্রী, বিভিন্ন ধাতব পদার্থ, টিনের কৌটা ইত্যাদি ফেলা যাবে না। ৫. পয়োপ্রণালির আবর্জনা, ড্রেনের পানি, কলকারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য পানি দূষিত করে। এগুলো যেন জলাশয়ের পানিতে মিশতে না পারে সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে। প্রশ্ন : পানিচক্র কাকে বলে? পানিচক্রের উপায় তিনটি বাক্যে লেখ। উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুমন্ডলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তাকে পানিচক্র বলে। পানিচক্রের তিনটি উপায় নিম্নরূপ : র. জলীয়বাষ্প : সাগর ও নদীর পানি বাষ্পীভূত হয়ে জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়। রর. পানির বিন্দু : বাষ্পীভূত পানি উপরে উঠে ঠান্ডা ও ঘনীভূত হয়ে পানির বিন্দুতে পরিণত হয়। ররর. বৃষ্টিপাত : ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির বিন্দু একত্রিত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে এবং এই মেঘের পানিকণা বড় হয়ে বৃষ্টিপাত হিসেবে পুনরায় ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। প্রশ্ন : পানিদূষণের দুটি কারণ এবং তিনটি ক্ষতিকর প্রভাব লেখ। উত্তর : পানিদূষণের দুটি কারণ নিম্নরূপ : র. মানুষের কর্মকান্ড : কৃষি ক্ষেত্রে কীটনাশক ব্যবহার করলে তা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে খাল-বিল ও নদীর পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে। রর. প্রাকৃতিক কারণ : মাটির নিচে আর্সেনিকের খনি থাকে যা ভূগর্ভের পানি স্তরের সংস্পর্শে এসে পানি দূষিত করে। পানিদূষণের তিনটি ক্ষতিকর প্রভাব নিম্নরূপ : র. পানিদূষণের ফলে জলজ প্রাণী মারা যায়। রর. জলজ খাদ্যশৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে। ররর. দূষিত পানি পান করে মানুষ ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। প্রশ্ন : পানিদূষণ কী? পানিদূষণের চারটি কারণ লেখ। উত্তর : প্রাকৃতিক পানিতে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ মিশে যখন আমাদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে পড়ে তাকে পানিদূষণ বলে। পানিদূষণের চারটি কারণ নিম্নরূপ : র. কৃষিকাজে ব্যবহৃত কীটনাশক, কলকারখানার রাসায়নিক দ্রব্য, গৃহস্থালির বর্জ্যের মাধ্যমে পানি দূষিত হয়। রর. নদী বা পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো এবং কাপড়-চোপড় ধোয়ার কারণে পানি দূষিত হয়। ররর. কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর মলমূত্র, বিছানাপত্র ও জামা পুকুর, নদী ও খাল-বিলে ধুলে রোগ-জীবাণু মিশে পানি দূষিত হয়। রা. মাটির নিচে আর্সেনিকের খনি থাকে যা ভূগর্ভের পানির সংস্পর্শে এসে পানিকে দূষিত করে। প্রশ্ন : মিতুদের পুকুরের পানি দূষিত হওয়ার পরও তারা এ পানি পান করে। এতে তাদের কী ধরনের রোগ হতে পারে? পুকুরের পানিদূষণ রোধে মিতুদের কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? চারটি বাক্য লেখো। উত্তর : দূষিত পানি পান করার ফলে মিতুদের ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগ হতে পারে। পুকুরের পানি দূষণরোধে মিতুদের যেসব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা হলো- ১. রান্নাঘরের নিষ্কাশন নালায় গৃহস্থালি আবর্জনা না ফেলা। ২. পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো থেকে বিরত থাকা। ৩. পুকুরে কাপড়-চোপড় না ধোয়া। ৪. পানিতে ভাসমান ময়লা-আবর্জনা কুড়িয়ে পানি পরিষ্কার রাখা। প্রশ্ন : রবিনদের বাড়ির কয়েকজন সদস্য হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত। এটি কী ধরনের রোগ? এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দূষণের মানবসৃষ্ট দুটি কারণ ও দুটি ফলাফল উলেস্নখ কর। উত্তর : ডায়রিয়া একটি পানিবাহিত রোগ। পানিদূষণের মানবসৃষ্ট দুটি কারণ হলো- ১. কৃষিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার। ২. নদী বা পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো এবং কাপড়-চোপড় ধোয়া। পানিদূষণের দুটি ফলাফল হলো- ১. জলজ প্রাণী মারা যায়। ২. জলজ খাদ্যশৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে। প্রশ্ন : লাবণ্য ভোরে ঘুম থেকে জেগে গাছের পাতায় বিন্দু বিন্দু পানি দেখতে পেল। সেগুলো কী? কীভাবে তৈরি হয়? উত্তর : লাবণ্য ভোরে গাছের পাতায় যে পানির বিন্দু দেখতে পায় তার নাম শিশির। বাতাসে থাকা জলীয়বাষ্পের ঘনীভবনের মাধ্যমে শিশির তৈরি হয়। বাতাসের জলীয়বাষ্প ঠান্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয়। বাষ্প থেকে তরলে পরিণত হওয়ার এ প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন বলে। রাতের বেলা তাপ বিকিরণের কারণে পৃথিবী শীতল হয়। তার ফলে গাছের পাতা ও পরিবেশের অন্য উপাদানও ঠান্ডা হয়। তখন বাতাস ঠান্ডা কোনো বায়ুর সংস্পর্শে এলে বাতাসে থাকা জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি বিন্দুতে পরিণত হয়। গাছের পাতায় জমা এই পানিই হলো শিশির। প্রশ্ন : পৃথিবীতে পানি এক উৎস থেকে অন্য উৎসে চক্রাকারে ঘোরে। এই চক্রকে কী বলে? বেঁচে থাকার জন্য পানি কেন প্রয়োজন ৪টি বাক্যে লেখ। উত্তর : পৃথিবীতে পানি এক উৎস থেকে অন্য উৎসে চক্রাকারে ঘোরে। এই চক্রকে পানিচক্র বলে। বেঁচে থাকার জন্য পানির প্রয়োজনীয়তা ৪টি বাক্যে লেখা হলো- ১. পানি আমাদের শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখে। ২. আমরা যে পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করি তা পানির সঙ্গে দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। ৩. স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। ৪. পানি খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়