১০. নোয়াখালী জেলা : নোয়াখালী জেলা প্রাচীন নাম ছিল ভুলুয়া। নোয়াখালী সদর থানার আদি নাম ছিল সুধারাম। ইতিহাসবিদদের মতে, একবার ত্রিপুরার পাহাড় থেকে প্রবাহিত ডাকাতিয়া নদীর পানিতে ভুলুয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভয়াবহভাবে পস্নাবিত হয়ে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে ১৬৬০ সালে একটি বিশাল খাল খনন করা হয়, যা পানিপ্রবাহকে ডাকাতিয়া নদী থেকে রামগঞ্জ, সোনাইমুড়ি ও চৌমুহনী হয়ে মেঘনা এবং ফেনী নদীর দিকে প্রবাহিত করে। এই বিশাল খালকে নোয়াখালীর ভাষায় 'নোয়া (নুতুন) খাল' বলা হতো এর ফলে 'ভুলুয়া' নামটি পরিবর্তিত হয়ে ১৬৬৮ সালে নোয়াখালী নামে পরিচিতি লাভ করে।
১১. রাঙামাটি জেলা : রাঙামাটি জেলা নামকরণ সম্পর্কে বিলু কবীরের লেখা 'বাংলাদেশ জেলা : নামকরণের ইতিহাস' বই থেকে জানা যায় তা হলো- এ এলাকায় পর্বতরাজি গঠিত হয়েছিল টারশিয়রি যুগে। এ যুগের মাটির প্রধান ব্যতিক্রম এবং বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর রঙ লালচে বা রাঙা। এই এলাকার গিরিমৃত্তিকা লাল এবং মাটিও রাঙা বলেই এ জনপদের নাম হয়েছে রাঙামাটি। প্রকৃতিসূচক এ নামকরণটির বিষয়ে অন্য প্রচলিত কথা পরম্পরা হলো- বর্তমান রাঙামাটি জেলা সদরের পূর্বদিকে একটি ছড়া ছিল, যা এখন হ্রদের মধ্যে নিমজ্জিত। এ হ্রদের স্বচ্ছ পানি যখন লাল বা রাঙামাটির ওপর দিয়ে ঢাল বেয়ে প্রপাত ঘটাত, তখন তাকে লাল দেখাত। তাই এ ছড়ার নাম হয়েছিল 'রাঙামাটি'। এ জেলা সদরের পশ্চিমে আরো একটি ছড়া ছিল। অনুরূপ কারণে তার নাম দেয়া হয়েছিল 'রাঙাপানি'। এই দুই রাঙা ছড়ার মোহনার বাঁকেই গড়ে উঠেছে বর্তমান জেলাশহর। যা মূলত ছিল অনাবাদি টিলার সমষ্টি এবং বহু উপত্যকার এক নয়নাভিরাম বিস্ময়ভূমি। এ দুটি ছড়া রাঙামাটি ও রাঙাপানি থেকে 'রাঙামাটি' জেলার নামকরণ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ১৯৮৩ সালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা গঠন করা হয়।
শিক্ষা জগৎ ডেস্ক য়