১. বান্দরবন জেলা : বান্দরবন জেলার নামকরণ নিয়ে একটি কিংবদন্তি আছে, এলাকার বাসিন্দাদের মুখে প্রচলিত রূপকথায় অত্র এলাকায় এ সময় অসংখ্য বানর বাস করত। আর এই বানরগুলো শহরের প্রবেশমুখে ছড়ার পাড়ে প্রতিনিয়ত লবণ খেতে আসত। এক সময় অতি বৃষ্টির কারণে ছড়ার পানি বৃদ্ধি পেলে বানরের দল ছড়া পাড় থেকে পাহাড়ে যেতে না পারায় একে অন্যকে ধরে সারিবদ্ধভাবে ছড়া পার হয়। বানরের ছড়া পারাপারের এ দৃশ্য দেখতে পায় এই জনপদের মানুষ। এ সময় থেকে জায়গাটি 'ম্যাঅকছি ছড়া' হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। মার্মা ভাষায় ম্যাঅক শব্দটির অর্থ হলো বানর আর ছি শব্দটির অর্থ হলো বাঁধ। কালের প্রবাহে বাংলা ভাষাভাষীর সাধারণ উচ্চারণে এ এলাকার নাম বান্দরবন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তবে মার্মা ভাষায় বান্দরবনের প্রকৃত নাম 'রদ ক্যওচি চিম্রো'।
২. ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা : ১৯৮৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তার আগে এটি কুমিলস্না জেলার একটি মহকুমা ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নামকরণ নিয়ে একাধিক মত প্রচলিত আছে। এস এম শাহনূর প্রণীত 'নামকরণের ইতিকথা' থেকে জানা যায়, সেন বংশের রাজত্বকালে এই অঞ্চলে অভিজাত ব্রাহ্মণকুলের বড়ই অভাব ছিল। যার ফলে এ অঞ্চলে পূজা অর্চনার জন্য বিঘ্নতার সৃষ্টি হতো। এ সমস্যা নিরসনের জন্য সেন বংশের রাজা লক্ষণ সেন আদিসুর কন্যকুঞ্জ থেকে কয়েকটি ব্রাহ্মণ পরিবারকে এ অঞ্চলে নিয়ে আসেন। তাদের মধ্যে কিছু ব্রাহ্মণ পরিবার শহরের মৌলভী পাড়ায় বাড়ি তৈরি করে। সেই ব্রাহ্মণদের বাড়ির অবস্থানের কারণে এ জেলার নামকরণ ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয় বলে অনেকে বিশ্বাস করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আঞ্চলিক উচ্চারণ 'বাউনবাইরা'। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিকৃত নাম 'বি-বাড়িয়া' বহুল প্রচলিত। যার ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থার উত্তরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসন হতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং ২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন হতে সকল ক্ষেত্রে বি-বাড়িয়ার পরিবর্তে 'ব্রাহ্মণবাড়িয়া' লেখার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।