বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সপ্তম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
  ২১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
সপ্তম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা

সপ্তম অধ্যায়

নেতিবাচক অভিজ্ঞতা :

১. আমার ছবি আঁকা সুন্দর হয়নি বলে কোনো এক সমবয়সি আমাকে নিয়ে বিদ্রম্নপ করেছিল।

২. ফুটবল খেলার সময় আমার এক সমবয়সি আমাকে ধাক্কা দিয়েছিল এবং আমি হাতে প্রচ- ব্যথা পেয়েছিলাম।

৩. আমার এক সমবয়েসি আমাকে প্রায়ই মোটা বলে উপহাস করত।

৪. শ্রেণিকক্ষে স্যার বোর্ডে একটি অঙ্ক সমাধান করতে বলেছিলেন। আমি অঙ্কটি ভুল করায় ক্লাসের অনেকেই হাসাহাসি করেছিল।

৫. আমার এক সমবয়সি আমাকে ধূমপান করতে বলায় আমি প্রতিবাদ করেছিলাম, তখন সে আমাকে মেরেছিল।

৬. আমার এক সহপাঠী আমাকে মোবাইলে ভিডিও গেইম খেলার কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিল।

৭. আমার এক সহপাঠী আমাকে স্কুল পালাতে বাধ্য করেছিল।

৮. স্কুলের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আমার দল পরাজিত হয়েছিল। অনেক সহপাঠী বলল আমার উপস্থাপনা সুন্দর হয়নি তাই দল হেরেছে।

আমার ওপরে এর নেতিবাচক প্রভাব :

১. এরপর থেকে সবার সামনে ছবি আঁকতে আমি অস্বস্তি বোধ করি।

২. এরপর থেকে ফুটবল খেলতে খুব ভয় পাই।

৩. এরপর থেকে সমবয়সিদের সাথে মেশার আগ্রহ কমে গেছে। মানসিক চাপে থাকি।

৪. এরপর থেকে স্যার বোর্ডে কোনো সমাধান করতে বললে অহেতুক ভয় কাজ করে।

৫. এরপর থেকে অন্যায় দেখলে বাসায় বাবা-মাকে বলে দিই কিন্তু প্রতিবাদ করতে সাহস পাই না।

৬. এরপর থেকে মোবাইলে ভিডিও গেইম খেলার প্রতি আমার আসক্তি কাজ করে।

৭. এরপর থেকে মাঝে মাঝে স্কুল পালাতে ইচ্ছে করে।

৮. এরপর থেকে যেকোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে হতাশা কাজ করে।

অভিজ্ঞতা-৩ মূল বই : পৃষ্ঠা ১৪৪

তোমার জীবনে তোমার কোনো এক সহপাঠীর অমূল্য অবদানের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এবং ওই সহপাঠীর প্রতি তোমার অনুভূতি জানিয়ে একটি চিঠি লেখ। (স্বাস্থ্য সুরক্ষা বই : পৃষ্ঠা ১৪৪)

উত্তর : আমার নাম 'ক'। আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। আমার সহপাঠীর নাম 'ব'। আমার খুব বিশ্বস্ত সহপাঠী ও বন্ধু। যার সাথে আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে একসাথে একই সেশনে পড়ালেখা করেছি। তার বাবা চাকরির সুবাদে অন্য জায়গায় বদলি হওয়ায় সেও আমাদের স্কুল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে তার বাবার কর্মস্থলের পাশে

\হঅন্য একটি স্কুলে চলে যায়। আমার সহপাঠীর সাথে আমার রয়েছে অনেক ইতিবাচক অভিজ্ঞতা এমতাবস্থায় তার প্রতি আমার অনুভূতি জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছি, যা নিচে উপস্থাপিত হলো-

করোটিয়া, টাঙ্গাইল

১৭ ফেব্রম্নয়ারি, ২০২৩

প্রিয় বন্ধু মীনা,

আমার শুভেচ্ছা নিও। আশা করি তুমি ভালো আছো। তোমাকে অনেকদিন দেখি না। আজ তোমার কথা বারবার মনে পড়ছে। তাই তোমাকে লিখতে বসলাম। স্কুলের অন্যান্য বন্ধুদের মধ্যে তুমিই ছিলে আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তোমার সাথে খেলাধুলা করেছি, গল্পগুজব করেছি, একসাথে বেড়াতে গিয়েছি, নানারকম সমস্যার সমাধান করেছি। আমার মনের কথা সবসময় তোমাকে বলেছি। তোমার সাথে আমার জীবনের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।

তোমার মনে আছে ষষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার কয়েক মাস আগে আমি ফুটবল খেলে পায়ে প্রচন্ড ব্যথা পেয়েছিলাম। প্রায় পনেরো দিন আমি স্কুলে যেতে পারিনি। তুমি স্কুল ছুটির পর নিয়মিত আমার বাসায় চলে আসতে। স্যার ক্লাসে কী পড়িয়েছে তা আমাকে জানাতে। পড়াগুলো আমাকে বুঝিয়ে দিতে। যার কারণে আমি বার্ষিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছিলাম।

তোমার সেই উপকারের কথা আমি আজও ভুলিনি। কখনো ভুলব না। তোমার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তুমি আমাকে চিঠি লিখে তোমার সব খবর জানাবে। আমি চাই আমাদের বন্ধুত্ব সারাজীবন অটুট থাকুক। আমার স্কুল ছুটি হলে তোমাদের বাসায় বেড়াতে যাব। তুমিও সময় করে চট্টগ্রাম বেড়াতে এসো।

তোমার আব্বা আম্মাকে সালাম দিও। তোমার ছোট ভাইকে আমার আদর ও ভালোবাসা দিও। পরিশেষে তোমার সুন্দর জীবন কামনা করে শেষ করছি।

ইতি।

তোমার বন্ধু

রাজু

অষ্টম অধ্যায়

আমরা একা বাস করতে পারি না। জন্মের পরেই আমরা বেড়ে উঠি পরিবারে। ধীরে ধীরে যখন বড় হই, সমবয়সি এবং বিদ্যালয়ের সহপাঠীদের সাথে আমাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমরা নিয়মিত সমবয়সি ও সহপাঠীদের সাথে একত্রিত হই, খেলাধুলা করি, গল্পগুজব করি, পড়াশোনাসহ আরও কত কি করি।

এ ধরনের সম্পর্কের মধ্য দিয়ে আমরা খুঁজে পাই বিশ্বস্ত সম্পর্কগুলোর। যাদের সাথে থাকে আমাদের অনেক ইতিবাচক অভিজ্ঞতা। এই বিশ্বস্ত সম্পর্কগুলোর সাথে গড়ে ওঠে আমাদের বন্ধুত্ব। আবার অনেক সমবয়সি ও সহপাঠীর নেতিবাচক আচরণ বাধা সৃষ্টি করে বিশ্বস্ত বন্ধুত্ব তৈরিতে।

আমরা আমাদের সমবয়সি ও সহপাঠীদের সাথে সুন্দর সম্পর্কের যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করব। আমাদের সম্পর্কের প্রতি আন্তরিকতা, বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব এবং পারস্পরিক কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়ে বিশ্বস্ত সম্পর্ক চিরকাল অটুট রাখব।

যারা নেতিবাচক আচরণ করে আমাদের প্রভাবিত করে তাদের প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার কৌশলগুলো প্রয়োগ করব এবং তাদের সীমাবদ্ধতাগুলো দূর করে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলে সবাই মিলেমিশে বসবাস করব। প্রয়োজনে বিশ্বস্ত সম্পর্ক ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নেব।

অভিজ্ঞতা-১ মূল বই : পৃষ্ঠা ১৩৬

তোমরা সমবয়সিদের সাথে তোমাদের জীবনের দুটি অভিজ্ঞতা শেয়ার কর এর মধ্যে একটি ইতিবাচক এবং অন্যটি নেতিবাচক। তবে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবে যার সাথে এটি হয়েছে তার নাম বা পরিচয় না বলে শুধু ঘটনাটি উলেস্নখ করবে।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে