ষষ্ঠ অধ্যায়
প্রশ্ন :ফাতিমা কেন পাখিটির মৃতু্য মেনে নিতে পারছিল না?
উত্তর : ফাতিমা টিয়া পাখিটির মৃতু্য মেনে নিতে পারছিল না কারণ পাখিটি ছিল তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। সে তার সাথে সারাদিন সময় কাটাত। পাখিটি নিয়ে তার অনেক পরিকল্পনা/স্বপ্ন ছিল। পাখিটির মৃতু্যতে ফাতিমার সব পরিকল্পনা, স্বপ্ন ও কাছের বন্ধু শেষ হয়ে গেল। তাই সে মেনে নিতে পারছিল না।
প্রশ্ন : এমন তিনটি পরিস্থিতির কথা লিখি যা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।
উত্তর : ১। জন্ম, ২। মৃতু্য, ৩। প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
কেস ৪ : মনিকা গোমেজ প্রতিদিন বিদ্যালয়ে হেঁটে হেঁটে যাতায়াত করে। একদিন সে তার বাবার কাছে একটি সাইকেলের বায়না ধরল। তার বাবা তাকে বললেন, যদি সে এবার বার্ষিক পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে পাস করে, তবেই তাকে সাইকেল কিনে দেবেন। মনিকা তো বেশ খুশি। সে বরাবরই ভালো ছাত্রী। সে খুব উৎসাহ নিয়েই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করল। বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্টের দিন দেখা গেল তার ফলাফল আশানুরূপ হয়নি।
রেজাল্ট আশানুরূপ না হওয়া সত্ত্বেও বাবা তার জন্য সাইকেল কিনে আনলেন। তবু তাকে খুশি দেখা গেল না। সে দিনকে দিন পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে যেতে লাগল। তার মনে হতে লাগল- সে আর কখনোই ভালো কিছু করতে পারবে না। মনিকা সারাদিন নিজের ঘরে থাকা শুরু করল, সবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিল, এমনকি কষ্ট পেয়ে সে নিজের পছন্দের কাজগুলো করা বা পছন্দের জিনিসগুলো নিয়ে খেলা বন্ধ করে দিল।
প্রশ্ন : মনিকার এই আচরণ কি তাকে ভবিষ্যতে ভালো ফল এনে দেবে?
উত্তর : মনিকার এই আচরণ তাকে ভবিষ্যতে ভালো ফল এনে দিবে না। কারণ সে অল্পতেই ভেঙে পড়ে।
প্রশ্ন : তুমি মনিকার জায়গায় থাকলে কী করতে?
উত্তর : আমি মনিকার জায়গায় থাকলে আগের থেকে আরও অনেক ভালো পড়াশোনা করতাম। কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট পাওয়ার জন্য শতভাগ চেষ্টা চালিয়ে যেতাম। মন খারাপ করে থাকতাম না এবং আমি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতাম।
সপ্তম অধ্যায়
সমাজে একসাথে বসবাস করতে, নিজের প্রয়োজন ও অনুভূতি প্রকাশে যোগাযোগ অপরিহার্য। কারণ তথ্য ও মনের ভাব প্রকাশের উপায় হলো যোগাযোগ। যোগাযোগ বাচনিক বা মৌখিক এবং অবাচনিক বা অমৌখিক হতে পারে।
বাচনিক ও অবাচনিক উভয় যোগাযোগই একসূত্রে গাঁথা। কারণ অবাচনিক যোগাযোগ বাচনিক যোগাযোগের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। যেমন- একজন ছাত্র টিফিন পিরিয়ডে হঠাৎ অসুস্থতার কারণে বাড়ি যেতে চাচ্ছে, শিক্ষক কিন্তু সেই ছাত্রের অঙ্গভঙ্গি, চেহারার অভিব্যক্তি ইত্যাদিও পর্যবেক্ষণ করবেন। কারণ অসুস্থ হলে তার মধ্যে সেটা প্রকাশ পাবে।
প্রত্যেক যোগাযোগের পেছনে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকে। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ উপায়ে ও সহমর্মী হয়ে নিজের চিন্তা, অনুভূতি ও প্রয়োজন প্রকাশ করতে পারলে সেক্ষেত্রে যোগাযোগের উদ্দেশ্য সফল হয়।
অভিজ্ঞতা-১ (দলগত) মূল বই : পৃষ্ঠা ১১৬
ছোট ছোট দলে নিজের একটি অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা কর। সেখানে যা যা উলেস্নখ করবে সেগুলো হলো : (স্বাস্থ্য সুরক্ষা বই : পৃষ্ঠা ১১৬)
১. আমার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি উলেস্নখযোগ্য ঘটনা।
আমার নাম রাজু। আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। আমরা চারজন সহপাঠী মিলে একটি দল গঠন করেছি। এই দলে আমার নিজের একটি অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করেছি। আলোচনার মধ্যে যা উঠে এসেছে তা নিচে উপস্থাপিত হলো-
তখন আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তাম। বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতে যেয়ে পায়ে প্রচন্ড ব্যথা পেয়েছিলাম। তখন আমার দুই বন্ধু আমাকে অতিদ্রম্নত এলাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল এবং আমার বাবাকে খবর দিয়েছিল।
২. ঘটনার ফলে আমার কী কী চিন্তা ও অনুভূতি হয়েছিল :
চিন্তা : গাড়িতে করে হাসপাতালে যাওয়ার সময় আমার চিন্তা হচ্ছিল এই ভেবে যে, আমি বোধহয় আর কখনো হাঁটতে পারব না। হাঁটতে না পারলে আমি বন্ধুদের সাথে আর খেলতে পারব না। আমার সহপাঠী ও সমবয়সিরা আমাকে নিয়ে উপহাস করবে।
অনুভূতি : আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম। পায়ের ব্যথার কষ্ট পেয়েছিলাম। নিজের ওপর খুব রাগ হচ্ছিল এই ভেবে যে, কেন ফুটবল খেলতে গেলাম। ফুটবল না খেললে এই ব্যথা পেতাম না।
৩. আমি তখন কী আচরণ করেছিলাম :
আচরণ : আমার দুই বন্ধু, যারা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল, আমার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছিল তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলাম। এ ঘটনার পরে তাদের প্রতি আন্তরিকতা ও ভালোবাসা অনেক বেড়ে গেছে। তারা দুজনেই এখন আমার খুব ভালো বন্ধু।
অভিজ্ঞতা-২ (একক) মূল বই : পৃষ্ঠা ১১৯
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বইয়ের 'গল্প বিশ্লেষণ করি' অংশের গল্পটি এককভাবে পড় এবং নিচের দেওয়া হকের প্রশ্নগুলো পড়ে উপরের গল্প অনুযায়ী উত্তর তৈরি কর ও কাজ শেষে উত্তরগুলো নিয়ে সহপাঠী/বন্ধুর সাথে আলোচনা কর। (স্বাস্থ্য সুরক্ষা বই : পৃষ্ঠা ১১৯)
উত্তর : আমার নাম 'ক'। আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। আমি গল্পটি পড়েছি। পরবর্তীতে ছকের প্রশ্নগুলো পড়ে গল্প অনুযায়ী উত্তর তৈরি করেছি। কাজ শেষে বন্ধুর সাথে আলোচনা করেছি। নিচে উপস্থাপন করা হলো-
এই ঘটনায় অনিমেষের কী কী আচরণ ওর বন্ধুরা উলেস্নখ করতে পেরেছে-
অনিমেষ দেরি করে এসেছে।
কাজে আন্তরিকতা নেই।
অন্যের ওপর নির্ভরশীল।
নিজের কোন অনুভূতি প্রকাশ করেছে
রাগ, উদ্বেগ, বিরক্তি ও ভয়
অনুভূতির সাথে সম্পর্কিত কোন কোন প্রয়োজন প্রকাশ করেছে-
কাল সকালে অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে অনুশীলনের সময় হবে না।
অনিমেষের অংশের সবটুকু না পেলে অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করা যাবে না।
আজকের (মঙ্গলবারের) মধ্যেই অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করতে হবে। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়