শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

সপ্তম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
  ১৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
সপ্তম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা

ষষ্ঠ অধ্যায়

আমি যেভাবে রাগ প্রকাশ করি, তা নিয়ে কি আমি সন্তুষ্ট? এতে কি আমার সমস্যার সমাধান হয়?

আমি যেভাবে রাগ প্রকাশ করি তাতে আমি সন্তুষ্ট নই। আমার এই রাগ করার ফলে আমার সমস্যার সমাধান হয় না।

অভিজ্ঞতা-১০ মূল বই : পৃষ্ঠা ১০৪

তোমার সহপাঠীদের কাছ থেকে তাদের সাক্ষাৎকার বিষয়ে জান এবং নিচের ছকটি পূরণ কর। (স্বাস্থ্য সুরক্ষা বই : পৃষ্ঠা ১০৪)

উত্তর : আমার সহপাঠীর কাছ থেকে সাক্ষাৎকার নিয়ে নিচের ছকটি পূরণ করা হলো-

রাগের অভিজ্ঞতা

লাবিব ক্রিকেট খেলায় ব্যাটিং ও বোলিং-এ খুবই পারদর্শী। আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতায় সে কয়েকবার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গ্রহণ করেছে। কিন্তু এবারের আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলার দিন তার সাথে অধিনায়কের দ্বন্দ্ব থাকার কারণে তাকে বোলিং দেওয়া হয়নি এবং ব্যাটিং-এও নামতে দেওয়া হয়নি।

আচরণ

-চোখ বড় বড় করে তাকাচ্ছিল।

-কান লাল হয়ে গিয়েছিল।

-গলার স্বর পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল।

-হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রাখছিল।

চোখ লাল হয়ে গিয়েছিল।

-কপাল কুঁচকিয়ে রাখছিল।

-বারবার হাত ছোড়াছুড়ি করছিল।

অভিজ্ঞতা-১১ মূল বই : পৃষ্ঠা ১০৫, ১০৬, ১০৭ ও ১০৮

নিচে দুঃখ-কষ্ট নিয়ে চারটি কেস বা ঘটনা দেওয়া হলো। কেস বা ঘটনা পড়ে তার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। (স্বাস্থ্য সুরক্ষা বই : পৃষ্ঠা ১০৫, ১০৬, ১০৭ ও ১০৮)

কেস ১ : আনন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক দাবা প্রতিযোগিতার ফাইনালে সপ্তম শ্রেণির দুজন শিক্ষার্থী 'ক' এবং 'খ' মুখোমুখি হয়। দুজনেই প্রতিযোগিতার প্রতিটি ম্যাচ দাপটের সাথে জয়লাভ করে ফাইনালে নিজেদের জায়গা করে নেয়। ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে 'ক' জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, 'ক' ও তার বন্ধুরা প্রায়ই 'খ' এর সাথে সকলের সামনে এটি নিয়ে ঠাট্টা করে। সময়-অসময়ে 'খ' এর সামনে গিয়ে হাসাহাসিও করে।

শুধু তাই নয়, তারা স্কুলের দেয়ালে 'খ' কে বিদ্রম্নপ করে নানা কথা লিখে রাখে। এতে 'খ' প্রচন্ড কষ্ট পায়, কারণ ছোটবেলা থেকে তার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে দাবাড়ু হওয়ার এবং নিজের দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনার। কিন্তু সহপাঠীর বিপক্ষে পরাজিত হয়ে সে মানসিকভাবে ভেড়ে পড়ে। সে বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেয় এবং দুঃখে নিজের দাবার সেট ভেঙে ফেলে। পরিবারের লোকজন বিষয়টি লক্ষ করেন। পরবর্তীতে তার অভিভাবকেরা বিদ্যালয় পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রশ্ন : 'ক' ও তার বন্ধুরা যে আচরণ করেছিল তুমি কি তার সাথে একমত, নাকি একমত নও? কেন?

উত্তর : 'ক' ও তার বন্ধুরা 'খ' এর সাথে যে আচরণ করেছিল তার সাথে আমি একমত নই। কারণ এতে 'খ' খুবই কষ্ট পেয়েছে। মনোবল হারিয়ে ফেলেছে। তার যে দাবাড়ু হওয়ার স্বপ্ন ছিল তা নষ্ট হয়ে গেছে।

প্রশ্ন : তুমি 'খ' এর জায়গায় থাকলে কী করতে?

উত্তর : আমি 'খ' এর জায়গায় থাকলে 'ক' ও তার বন্ধুদের বিনয়ের সহিত বলতাম এরকম ঠাট্টা না করতে। আমি আরও ভালোভাবে দাবা অনুশীলন করতাম এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যেতাম। নিজেই নিজেকে বোঝাতাম খেলায় হার জিত থাকবেই এবং লোকেরা পিছনে অনেক কথা বলবে। এ কথাগুলো ইতিবাচক হিসেবে ধরে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

কেস ২ : রহিম ও করিম একে অপরের ভালো বন্ধু। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের সাথে যুক্ত থাকায় রহিম নাচে ও গানে পারদর্শী হয়ে ওঠে। বিদ্যালয়ের সকলের কাছে সে পরিচিত মুখ। রহিম এসব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে করিম এ ধরনের কোনো সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে নিজেকে যুক্ত না করায় সে এসবের থেকে পিছিয়ে পড়ে।

করিমের অন্য কোনো বন্ধু না থাকায় করিম নিজেকে বন্ধুহীন মনে করে এবং রহিমের প্রতি তার একধরনের অভিমান তৈরি হয়। সে রহিমের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করে। মাঝে মাঝে রহিমের সাথে নিজের অজান্তেই দুর্ব্যবহার করে বসে এবং এর সাথে আর বন্ধুত্ব রাখবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রশ্ন : রহিমের প্রতি করিমের আচরণকে তুমি কীভাবে দেখছ?

উত্তর : রহিমের প্রতি করিমের আচরণকে আমি নেতিবাচক আচরণ হিসেবে দেখছি।

প্রশ্ন : তুমি করিমের জায়গায় থাকলে কী করতে?

উত্তর : আমি করিমের জায়গায় থাকলে রহিমের সাথে সাথে নিজেকেও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে যুক্ত করে নিতাম। দুই বন্ধু মিলে সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামে সব জায়গায় সুনাম অর্জন করার চেষ্টা করতাম। আমি না পারলেও সবসময় রহিমের পাশে থেকে তাকে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করতাম।

কেস ৩ : ফাতিমা গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে নানার বাড়ি বেড়াতে যায়। সেখানে তার মামা তাকে একটি টিয়া পাখি উপহার দেন। প্রথমে সে পাখিটির প্রতি আকৃষ্ট না হলেও দিনকে দিন পাখিটি তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হয়ে ওঠে। দিনের অধিকাংশ সময় সে পাখিটির সাথে কাটায়। পাখিটির খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে গোসল করানো, কথা শেখানো সবকিছুই সে দেখাশোনা করতে শুরু করে।

পাখিটিকে নিয়ে ফাতিমা অনেক পরিকল্পনা করে- পাখির জন্য সুন্দর খাঁচা বানাবে, তাকে নিজের বাসায় নিয়ে যাবে, বন্ধু-বান্ধবদের দেখাবে আরও কত কি! হঠাৎ একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে যে পাখিটি মারা গেছে। এই বিষয়টি কোনোভাবেই সে মানতে পারে না, অনেক কান্নাকাটি করে, এমনকি খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে সে নিজের রুমে বসে থাকে। কারো সাথে কথাবার্তা বলে না। তার বাবা তাকে আরেকটি টিয়া পাখি এনে দেন। কিন্তু তারপরেও সে মন খারাপ করে অন্যমনস্ক হয়ে থাকে।

পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে