জেলার নামকরণ

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
ঢাকা বিভাগ ৪. গোপালগঞ্জ জেলা : গোপালগঞ্জ জেলা শহরের রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস। অতীতের রাজগঞ্জ বাজার আজকের জেলা গোপালগঞ্জ। আজ থেকে প্রায় শতাব্দীকাল আগে শহর বলতে যা বোঝায় তার কিছুই এখানে ছিল না। এর পরিচিতি ছিল শুধু একটি ছোট্ট বাজার হিসেবে। এ অঞ্চলটি মাকিমপুর স্টেটের জমিদার রানী রাসমণির এলাকাধীন ছিল। উলেস্নখ্য, রানী রাসমণি একজন জেলের মেয়ে ছিলেন। সিপাই মিউটিনির সময় তিনি একজন উচ্চপদস্থ ইংরেজ সাহেবের প্রাণ রক্ষা করেন। পরে তারই পুরস্কার হিসেবে ব্রিটিশ সরকার রাসমণিকে মাকিমপুর স্টেটের জমিদারী প্রদান করেন এবং তাকে রানী উপাধিতে ভূষিত করেন। রানী রাসমণির এক নাতির নাম ছিল নব-গোপাল তিনি তার স্নেহাস্পদ নাতির নাম এবং পুরনো ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য নাতিন নামের 'গোপাল' অংশটি প্রথমে রেখে তার সঙ্গে রাজগঞ্জের 'গঞ্জ' যোগ করে এ জায়গাটির নতুন নামকরণ করেন গোপালগঞ্জ। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর জেলার মহকুমা থেকে গোপালগঞ্জ জেলা সৃষ্টি হয়। ৫. কিশোরগঞ্জ জেলা : ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে কিশোরগঞ্জ মহকুমার জন্ম হয়। মহকুমার প্রথম প্রশাসক ছিলেন মি. বকসেল। বর্তমান কিশোরগঞ্জ তৎকালীন জোয়ার হোসেনপুর পরগনার অন্তর্ভুক্ত ছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকেও কিশোরগঞ্জ এলাকা 'কাটখালী' নামে পরিচিত ছিল। ইতিহাসবিদদের ধারণা ও জনশ্রম্নতি মতে এ জেলার জমিদার ব্রজকিশোর মতান্তরে নন্দকিশোর প্রামাণিকের 'কিশোর' এবং তার প্রতিষ্ঠিত হাট বা গঞ্জের 'গঞ্জ' যোগ করে কিশোরগঞ্জ নামকরণ করা হয়। ৬. মাদারীপুর জেলা : মাদারীপুর জেলা একটি ঐতিহাসিক সমৃদ্ধ জনপদ ছিল। পঞ্চদশ শতাব্দীতে সাধক হজরত বদরুদ্দিন শাহ মাদারের (র.) নামানুসারে এই জেলার নামকরণ করা হয়। প্রাচীনকালে মাদারীপুরের নাম ছিল ইদিলপুর। ১৯৮৪ সালে মাদারীপুর জেলা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ৭. মানিকগঞ্জ জেলা : সংস্কৃত 'মানিক্য' শব্দ থেকে মানিক শব্দটি এসেছে। মানিক হচ্ছে চুনি পদ্মরাগ। গঞ্জ শব্দটি ফরাসি। অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে সুফি দরবেশ মানিক শাহ সিংগাইর উপজেলার মানিকনগরে আসেন এবং খানকা প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেন। কারো মতে দুর্ধর্ষ পাঠান সর্দার মানিক ঢালীর নামানুসারে মানিকগঞ্জ নামের উৎপত্তি। আবার কারো মতে, নবাব সিরাজ উদ-দৌলার বিশ্বাস ঘাতক মানিক চাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তার নামানুসারে ১৮৪৫ সালের মে মাসে মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ হয়। মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ সম্পর্কিত উলেস্নখ্য তিনটি পৃথক স্থানীয় জনশ্রম্নতি রয়েছে। এর কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি, তবে মানিক শাহের নামানুসারে মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ সম্পর্কিত জনশ্রম্নতি এবং ঘটনাপ্রবাহ থেকে যে চিত্র পাওয়া যায় তাই সঠিক বলে ধরা হয়।