ষষ্ঠ শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
শূণ্যস্থান পূরণ ৬. যদি আমি অনিরাপদ বোধ করি বা যেকোনো বিশেষ জরুরি পরিস্থিতিতে ---- প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নিতে পারি। উত্তর : আইন। ৭. আমি যখন অন্যদের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলব তখন ---- প্রকাশ পাবে। উত্তর : আত্মবিশ্বাস। সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন প্রশ্ন : আমরা কেন আমাদের অনুভূতি ও প্রয়োজনের কথা অন্যকে বলতে পারি না? উত্তর : আমাদের মনের মধ্যে ভয়, দ্বিধা ও সংকোচ লুকিয়ে থাকার কারণে আমরা মনের কথা খুলে বলতে পারি না। প্রতিটি মানুষের মনের ভেতর কিছু অনুভূতি থাকে যা কেউ কেউ প্রকাশ করতে পারে কেউ পারে না। যারা পারে না তাদের মনে দ্বিধা ও ভয় কাজ করে বেশি। এগুলো দূর করে কীভাবে কথা গুছিয়ে বলতে হয় তা তারা জানে না। প্রশ্ন : অদৃশ্য বাবল বলতে কী বোঝানো হয়েছে? উত্তর :অদৃশ্য বাবল বলতে ব্যক্তিগত সীমানাকে বোঝানো হয়েছে। বাবলের মতোই প্রতিটি মানুষকে ঘিরে একটি অদৃশ্য বাবল থাকে। সেটি হলো আমাদের ব্যক্তিগত সীমানার বাবল। আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত সীমানায় প্রবেশ করার অধিকার কারোরই নেই- হোক সে ছোট, সমবয়সী বা বয়সে বড়। প্রশ্ন : নিরাপদ স্পর্শ বলতে কী বোঝায়? উত্তর : যে স্পর্শে অস্বস্তি অনুভব হয় না তাকে নিরাপদ স্পর্শ বলে। নিরাপদ স্পর্শ এমন হতে পারে আমার মা আমাকে জড়িয়ে ধরল, ক্লাসে ভালো করায় আমার শিক্ষক মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন, বিশ্বস্ত বন্ধুর হাত ধরে ঘুরে বেড়ালাম। একেক জনের সাথে নিরাপদ স্পর্শ একেক ধরনের হয়। আমার মা কপালে চুমু দিলেও আমি হয়তো আমার বন্ধুকে চুমু দিতে দিব না। তবে সেই একই বন্ধুর সাথে হাত ধরে ঘুরতে হয়তো আমার অস্বস্তি লাগবে না। তাই নিরাপদ স্পর্শ হতে হবে স্বস্তিদায়ক। প্রশ্ন : দক্ষতা কী? উত্তর : দক্ষতা হলো কোনো ব্যক্তির কাজ করার ক্ষমতা বা অনুভূতি প্রকাশ করার ক্ষমতা। অন্যভাবে বলতে গেলে নির্দিষ্ট অবস্থায় সর্বনিম্ন সময়ের মধ্যে কোনো কাজ নিখুঁতভাবে সম্পাদন করতে পারাই হলো দক্ষতা। এ দক্ষতা শুধু কাজের মধ্যেই থাকবে এমন নয়। এটি আচরণের মধ্যেও থাকতে পারে। সুন্দরভাবে কাজ করা, সুন্দরভাবে কথা বলা, গুছিয়ে কথা বলা, সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা সবই দক্ষতার পরিচয়। দক্ষতা না থাকলে কেউ তার কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করতে পারে না। প্রতিটি কাজের মধ্যেই দক্ষতার প্রয়োজন হয়। প্রশ্ন : আত্মবিশ্বাস বলতে কী বোঝ? উত্তর : আত্মবিশ্বাস হলো আপনার দক্ষতা এবং দক্ষতা সম্পর্কে একটি মনোভাব। প্রতিটি মানুষের তার নিজের কাজ ও আচরণের প্রতি বিশ্বাস থাকতে হয়। নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা রেখে এগিয়ে যাওয়ার নামই আত্মবিশ্বাস। এটি মানুষের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য। এই আত্মবিশ্বাস কম থাকলে ব্যর্থ হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। কোনো কাজেই তখন সফলতা আসে না। তাই আমাদের মধ্যে অবশ্যই আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। প্রশ্ন : বলিষ্ঠতার ধারণা দাও। উত্তর : কথা বা কাজে চপলতা থাকলে তাকে বলিষ্ঠতা বলে। এটি মানুষের একটি বড় গুণ। কার সাথে কীভাবে কথা বলবে, কোন কাজ কীভাবে করবে প্রভৃতি সবকিছুর মধ্যে দক্ষতা প্রকাশ পায় বলিষ্ঠ আচরণের মাধ্যমে বলিষ্ঠ ব্যক্তিরা কোনো কাজেই বা কোনো কথা বলতেই ভয় পায় না। তারা যথার্থ স্থানে যথার্থ কাজ বা কথাটি বলতে পারে। প্রশ্ন : দ্বিধা কী? উত্তর : দ্বিধা হলো কথা বা কাজে সংকোচবোধ করা। কোনো ব্যক্তির মনে দ্বিধা বেশি থাকলে তারা অন্যের সামনে কথা বলতে তাদের মনের অনুভূতি ও পছন্দের কথা জানাতে লজ্জা পায়। দ্বিধাহীন হৃদয় মানুষকে একধাপ এগিয়ে নিযয়ে যায়। তাই কীভাবে মনের ভেতর থেকে দ্বিধা দূর করা যায় তার কৌশল আয়ত্ত করতে হবে। প্রশ্ন : জরুরি সেবা কী? উত্তর : যেসব জরুরি সমস্যায় তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ থানা পুলিশের/ফায়ার সার্ভিসের/এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মোবাইর নম্বর থাকে না বা তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা সম্ভবপর হয়ে উঠে না সেই সময় যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে শুধু ৯৯৯ এ কল দিয়ে যে সেবা পাওয়া যায় তাকে জরুরি সেবা বলা হয়। প্রশ্ন : সহমর্মিতা কী? উত্তর : বন্ধুরা বন্ধুদের ভালোবাসে, তারা বন্ধুদের কষ্ট দিতে চায় না। তাদের অনুভূতি ও আচরণের দ্বারা অন্য বন্ধুরা উপকৃত হয়। তাদের এই মনোভাবকে সহমর্মিতা বলে। সহমর্মী হলে একে অপরের প্রতি সম্মানবোধ ও সহযোগিতার মনোভাব তৈরি হয়। তখন সম্পর্কের মধ্যে ভালোলাগা, শ্রদ্ধাবোধ, দায়িত্বশীলতা ও কৃতজ্ঞতাবোধ কাজ করে। প্রশ্ন : সহমর্মিতার সুবিধা উলেস্নখ কর। উত্তর : সহমর্মী আচরণ আমাদের মনে শান্তি দেয়। আমরা আনন্দ পাই। সহমর্মিতা আচরণে আমরা ভালোবাসাবোধ করি। মনে শক্তি পাই। আমাদের প্রতি তাদের এমন অনুভূতি ও আচরণ দ্বারা আমরা উপকৃত হই। সহমর্মী হলে আমরা একে অপরকে সম্মান করতে পারি, প্রত্যেককে আপন লাগে। সম্পর্কের মধ্যে সন্তুষ্টি কাজ করে, জোরদার হয়। ফলে দ্বন্দ্ব ও ঝগড়াবিবাদ কমে যায়। নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব তৈরি হয়। একে অপরের সমস্যায় পাশে থাকি, দায়িত্ববোধ বাড়ে। সহমর্মী আচরণের ফলে মানুষের মধ্যে অসম্মান ও হয়রানিমূলক আচরণ, উত্ত্যক্তকরণ, যৌন হয়রানিমূলক আচরণের প্রবণতা কমে যায়। সম্পর্কের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ, দায়িত্বশীলতা ও কৃতজ্ঞতাবোধ বাড়ে।