পরীক্ষা এলেই শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়ে থাকে। 'পরীক্ষা' শব্দটিকে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর কাছে আতঙ্ক বললেও ভুল হবে না। পরীক্ষা দেওয়ার কথা শুনলেই অনেক পরীক্ষার্থীর বুক ধড়ফড় করে, মুখ শুকিয়ে যায়, মাথায় ভর
করে একরাশ দুশ্চিন্তা। অনেক
সময় অসুস্থও হয়ে পড়ে
অনেক পরীক্ষার্থী।
এ সময়ে সাধারণত যেসব উপসর্গ দেখা দেয় তা হলো- অস্থিরতা, ক্লান্তি ও দুর্বলতা, অদুধ্রা, হাত-পা অতিরিক্ত ঘামা, বুক ধড়ফড় করা, মুখ ও গলা শুকিয়ে যাওয়া, মেজাজ খারাপ হওয়া, জানা পড়া ভুলে যাওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হওয়া, বমিবমি ভাব হয়। এছাড়া হজম হয় না, হাত-পা ঘামে, জ্বর এসে যায়, বারবার বাথরুমে যায়, ঘন ঘন তৃষ্ণা ও ঘন ঘন প্রস্রাব
হওয়া, ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা ইত্যাদি।
তাই পরীক্ষা-পরবর্তী সময়ে পরীক্ষার্থীদের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা কমাতে অভিভাবকদের মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। পরীক্ষাভীতি দূর করবেন যেভাবে-
পরীক্ষা বিষয়টাকে সহজ-স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণ করা : পরীক্ষা বিষয়টাকে সহজ-স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। নিজের আশা কমাতে হবে। মূলত অতিরিক্ত আশা করার কারণে মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। আশা কমলে চাপও কমবে, এতে পরীক্ষাভীতিও কমে যাবে।
পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব না রাখা : শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাভীতির কারণে ফলাফলকেন্দ্রিক বিষণ্নতায় ভোগে। ভালো ফল করতে না পেরে অনেকের মধ্যে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়। তাদের মনে হয়, সে হয়তো অন্যদের তুলনায় কম যোগ্য। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখলে-কথা বললে ভেতর থেকে এমন হীনম্মন্যতা ও বিষণ্ন্নতা দূর হবে।
শিক্ষকদের ভূমিকা : শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করে তোলার দায়িত্ব শিক্ষকদের। শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষণপদ্ধতি যেন শিক্ষার্থীদের ভেতর বিদ্বেষমূলক প্রতিযোগিতা তৈরি না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের বোঝাতে হবে- তার শেখার ক্ষেত্রে আরও মনোযোগী হওয়া দরকার।
ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করা : শিক্ষার্থীর নেতিবাচক প্রবণতাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো থেকে তাকে বের হয়ে আসতে সহায়তা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জন্মাতে সহায়তা করাও শিক্ষার অন্যতম একটি উদ্দেশ্য। সে অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে পড়া বা খারাপ ছাত্র নয়।
আনন্দদায়ক অনুভূতি দেয় সেসব কাজ করা : পরীক্ষাভীতি শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক অনুভূতিকে বাধাগ্রস্ত করে। যেসব জায়গা পছন্দ সেখানে ঘুরতে যাওয়া। পরীক্ষার বিষয়টি ভুলে যেতে প্রিয় জায়গা, প্রিয় স্মৃতি মনে কল্পনা করা।
কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার মতো বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া : যদি কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে তা জানা জরুরির- প্রতিকূল পরিস্থিতি সামালাতে খেলাধুলায় আগ্রহী হওয়া। এছাড়া কোনো বাদ্যযন্ত্র শেখা, ছবি আঁকা শেখা- এসব কার্যক্রমগুলোতে বেশি বেশি
যুক্ত হওয়া।