অষ্টম শ্রেণির স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা

প্রকাশ | ২৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
প্রথম অধ্যায় আমার স্বাস্থ্য আমার সুরক্ষা 'স্বাস্থ্যই সম্পদ' এ কথাটি আমরা সবাই শুনেছি? স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে কি আমরা ভালো থাকি? কেমন যেন সবকিছু অন্যরকম হয়ে যায়। শরীর কিংবা মন ভালো না থাকলে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। কারও সঙ্গে কথা বলতেও ভালো লাগে না, শোনারও ধৈর্য্য থাকে না। এসব পরিস্থিতিতে কীভাবে ভালো থাকা যায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ের মাধ্যমে আমরা তাই শিখছি। প্রতিটি শ্রেণিতে এ বিষয়ে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে আরও যোগ্য হয়ে উঠছি। বইয়ের ৩নং পৃষ্ঠার ছকের সমাধান সুস্বাস্থ্য চর্চায় আমার পছন্দের ব্যক্তির কাজ -ভোরে ঘুম থেকে উঠা। -শরীরচর্চা করা। -বেশি করে পানি পান করা। -স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা। -অভিযোজন যোগ্যতা। -ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। -পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি। -ন্যায়পরায়ণতা। -বিবেকবোধ। এই কাজের প্রভাব -এতে দিনের সব কাজ সুষ্ঠুভাবে ভেবে চিন্তে করা যায়। -সময়ের অপচয় হয় না। -ভোরে ঘুম থেকে উঠে শরীরচর্চা বা হালকা ব্যায়াম করলে শরীর ও মন উভয়ই প্রফুলস্ন ও সুস্থ থাকে। -সুস্থ শরীর পাওয়ার জন্য পানি পানের বিকল্প নেই। দিনে -কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সুন্দর ত্বক ও চুল মজবুত হয়। -সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা অপরিহার্য। -এতে শরীর সবল, দেহ গঠন ও বৃদ্ধি সাধন হয়। -দৈনন্দিন জীবনে এই গুণের ফলে যেকোনো পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়ানো যায়। সহজেই পছন্দের পাত্র হওয়া যায়। -জীবনের প্রতিটি পরিস্থিতিতে একটি আশাবাদী মনোভাব থাকলে সফলতা অর্জন সহজ হয়। এতে আশপাশের মানুষও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দূরে থাকার শিক্ষা পাবে। -কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কঠিন কাজও সহজ হয়। -পরিশ্রমী ব্যক্তি আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী হয়। -ন্যায়পরায়ণতার গুণ ছাড়া কোনো মানুষ প্রকৃত মানুষ হতে পারে না। আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে ন্যায়পরায়ণতার গুণে গুণান্বিত হতে হবে। -পৃথিবীতে বিবেক হলো একজন মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বিবেকহীন মানুষ পশুর সমান। বিবেকবান মানুষ কখনোই অন্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে না। তাই একজন বিবেকবান মানুষ সর্বদাই প্রশংসিত ও সম্মানিত হয়। এর সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ব্যাপারে সচেতন হতে দৈনন্দিন জীবনে আমরা যে কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি সেগুলো পর্যবেক্ষণ করে লিপিবদ্ধ করব। এরপর তা আমাদের ভালো থাকাকে কীভাবে প্রভাবিত করছে তা বোঝার চেষ্টা করব। আমার দৈনন্দিন সময় বইয়ের ৪ ও ৫ নং পৃষ্ঠার ছকের সমাধান আমার দৈনন্দিন সময় আমাদের দৈনন্দিন ভালো থাকার পরিস্থিতিগুলো সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা ও পর্যালোচনা করবে। একই সঙ্গে যে ধরনের পরিস্থিতিতে ভালো থাকতে পারি না এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত পরিস্থিতিগুলো নিয়েও নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবে। তাহলে নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কী দেখতে পেলাম? শরীর, মন ও পারস্পরিক সম্পর্ক এর মধ্যে যে কোনো একটা খারাপ থাকলে আমাদের ভালো থাকা ব্যাহত হয়। আমার পছন্দের একজন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে তার দৈনন্দিন অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করে তথ্য লিপিবদ্ধ করব। এরপর দলগত আলোচনা করে সুস্বাস্থ্য চর্চায় তাদের এই কাজের প্রভাব ও কী কারণে এই ধরনের প্রভাব তৈরি হয় বলে মনে করছি তা নিয়ে আলোচনা ও উপস্থাপন করবে। নিজেদের এবং আমাদের পছন্দের ব্যক্তির কাজের পর্যালোচনা করে আমাদের যে উপলব্ধিগুলো হলো তা 'ভালো থাকার জন্য সহায়ক কাজ ও অভ্যাস' ছকে লিখব। বইয়ের ৬ নং পৃষ্ঠার ছকের সমাধান ভালো থাকার জন্য সহায়ক কাজ ও অভ্যাস ভালো কে না থাকতে চায়। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই চায় তার জীবন সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরপুর থাকুক। কিন্তু আমাদের কিছু বদঅভ্যাসের জন্য আমরা সবসময় ভালো থাকতে পারি না। তাই নিজেদের ভালো রাখার জন্য প্রথম পদক্ষেপটা নিজেকেই নিতে হবে। আমার মতে ভালো থাকার জন্য সবচেয়ে সহায়ক কাজটা হচ্ছে নিজের স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করা এতে মনের যত ভয়, দুর্বলতা সব নিমিষেই উধাও হয়ে যায়। আমরা মানুষ মাঝেমধ্যে অহংকারী হয়ে যাই। নিজেকে অনেক বড় মনে করি। অন্যদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করি। এতে করে আমরা কখনোই বড় হয়ে ওঠি না বা সম্মানের আসনেও অধিষ্ঠিত হতে পারি না। ভালো থাকার জন্য তাই আমাদের নিরঅহংকারী ও উদার মনমানসিকতার অধিকারী হতে হবে। প্রায়ই আমরা অন্যের দ্বারা আঘাত পেয়ে থাকি। তখন আমাদের উচিত সামনের মানুষটিকে ক্ষমাস্বরূপ দৃষ্টিতে দেখা। এতে নিজের মনেও শান্তি অনুভব করা যায়। অতি সাধারণ জীবনযাপন ভালো থাকার পূর্বশর্ত। জীবনে যত সাধারণ থাকা যায় জীবন তত গোছানো থাকে। আর গোছানো জীবন কখনই হতাশার জন্ম দেয় না। অতিরিক্ত চাওয়া-পাওয়া মানসিক অশান্তি সৃষ্টি করে। মানুষ লোভী হয়ে নিজেকে অন্যায়ের পথে ঠেলে দেয়। সাময়িক আরাম-আয়েশের জন্য নিজের নৈতিকতা বা চরিত্র নষ্ট করা কখনোই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাই জীবনে ভালো থাকতে হলে এবং অন্যকে ভালো রাখতে হলে ইতিবাচক চিন্তাভাবনার অধিকারী হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।