লিখিত গদ্যে প্রমিত ভাষার ব্যবহার
'রেলের পথ' গল্প থেকে সর্বনাম শব্দ খুঁজে বের করো এবং নিচের ছকের বাম কলামে লেখো। এরপর সর্বনামগুলোর প্রমিত রূপ ডান কলামে লেখো। কাজ শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে মিলিয়ে নাও এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো। একটি নমুনা উত্তর করে দেওয়া হলো।
একইভাবে গল্প থেকে ক্রিয়া শব্দ খুঁজে বের করো এবং লেখো। এরপর ক্রিয়াগুলোর প্রমিত রূপ লেখো। কাজ শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে মিলিয়ে নাও এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো। একটি নমুনা উত্তর করে দেওয়া হলো।
গল্পে ব্যবহৃত ক্রিয়া শব্দ শব্দের প্রমিত রূপ
আসিয়াছিল এসেছিল
যাইবার যাওয়ার
পড়িয়াছিলো পরেছিলো
হারাইয়াছিলো হারিয়েছিলো
দেখতেছিলো দেখেছিলো
সাধুরীতি
সাধুরীতি হলো লিখিত বাংলা ভাষার একটি সেকেলে রূপ। এই রীতিতে কেউ কথা বলত না, এটি ছিল কেবল লেখার ভাষা। এক সময়ে লিখিত ভাষার আদর্শ রূপ হিসেবে এটি ব্যবহৃত হতো। এই রীতিতে সর্বনাম ও ক্রিয়া শব্দের রূপ মুখের ভাষার তুলনায় অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ। উনিশ ও বিশ শতকের প্রচুর সাহিত্যকর্ম এই রীতিতে লেখা হয়েছে। ১৯৭২ সালে গৃহীত বাংলাদেশের সংবিধানও সাধুরীতিতে রচিত। 'রেলের পথ' গল্পটি সাধুরীতির একটি নমুনা।
সাধুরীতির বাক্যকে প্রমিত বাক্যে রূপান্তর
'রেলের পথ' গল্প থেকে সাধুরীতির কয়েকটি বাক্য লেখো এবং একইসঙ্গে বাক্যগুলোকে প্রমিত গদ্যরীতিতে রূপান্তর করো। কাজ শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করে নাও। একটি নমুনা-উত্তর করে দেওয়া হলো।
সাধুরীতির বাক্য
দিন গনিতে গনিতে অবশেষে যাইবার দিন আসিয়া গেল।
অপু জন্মিয়া অবধি কোথাও কখনো যায় নাই।
বড় জোর নবাবগঞ্জ যাইবার পাকা সড়ক-এই পর্যন্ত তাহার দৌড়।
সেবার তাদের রাঙ্গী-গাইয়ের বাছুর হারাইয়াছিল।
সে তাহার দিদির সঙ্গে দক্ষিণ মাঠে বাছুর খুঁজিতে আসিয়াছিল।
তাহার দিদি বলিল-বড্ড অনেক দূর বোধ হয় যাওয়া যাবে না।
তাহার সতৃষ্ণ দৃষ্টি কিছু দূরের দিকে আবদ্ধ ছিল; লোভও হইতেছিল, ভয়ও হইতেছিল।
প্রথম তাহারা একটুখানি এদিক ওদিক চাহিয়া দেখিল-কেহ তাহাদিগকে লক্ষ করিতেছে কি না।
এইখানে আসিয়া তাহারা পথ হারাইয়া ফেলিল।
প্রমিত রূপ
দিন গুনতে গুনতে অবশেষে যাওয়ার দিন এসে গেল।
অপু আজ অব্দি কোথাও কখনো যায় নি।
বড় জোর নবাবগঞ্জ যাওয়ার পাকা সড়ক-এই পর্যন্ত তাহার দৌড়।
ওই সময় তাদের লাল রঙের গাভির বাছুর হারিয়েছিলো।
সে তার দিদির সঙ্গে দক্ষিণ মাঠে বাছুর খুঁজতে এসেছিল।
তার দিদি বলল- বড্ড অনেক দূর বোধ হয় যাওয়া যাবে না।
তার সতৃষ্ণ দৃষ্টি কিছু দূরের দিকে আবদ্ধ ছিল; লোভও হচ্ছিলো, ভয়ও হচ্ছিলো।
প্রথম তারা একটু এদিক ওদিক চেয়ে দেখল-কেউ তাদেরকে লক্ষ করছে কি না।
এখানে এসে তারা পথ হারিয়ে ফেলল।
চতুর্থ অধ্যায় : প্রথম পরিচ্ছদ
'ব্যক্তিগত স্বার্থ ও সামাজিক স্বার্থ' রচনায় লেখক বলতে চেয়েছেন যে, আমাদের সমাজে একদিকে ব্যক্তিগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়া মানুষ যেমন রয়েছে, অন্যদিকে সামাজিক স্বার্থকে বড় করে দেখার মানুষও রয়েছে। যাদের কাছে ব্যক্তিগত স্বার্থ বেশি গুরুত্ব পায় তারা ধনী, বিষয়-সম্পত্তির মালিক হয়। আর তারা সর্বদা নিজেদের সুখ-দুঃখ নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
অন্যদিকে সামাজিক স্বার্থকে যারা গুরুত্ব দেন তারা হন দেশপ্রেমিক সমাজের কল্যাণই তাদের একান্ত চাওয়া-পাওয়া। লেখক মনে করেন তাদের ওপরই সমাজের মঙ্গল ও উন্নতি নির্ভর করে। লেখক এখানে মানুষ ও পশুর মধ্যে সূক্ষ্ণ পার্থক্য দেখাতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন- মানুষের জীবন চিন্তার দ্বারা বিকশিত হয়, অন্যদিকে পশুর একমাত্র উদ্দেশ্য দৈহিক প্রয়োজন মেটানো। প্রতিটি যুগেই মানুষের সামাজিক জীবনে একটা আদর্শ থাকে, আর এই আদর্শই নির্ধারণ করে দেয় শেষ পর্যন্ত সে কোন অবস্থানে যাবে।
বিভিন্ন গঠনের শব্দ খুঁজি : উপরের গদ্যাংশটি থেকে কমপক্ষে দুটি করে সমাস, উপসর্গ ও প্রত্যয়ের মাধ্যমে গঠিত শব্দ শনাক্ত করো। প্রথম কলামে শব্দ লিখবে, দ্বিতীয় কলামে শব্দটিকে ভাঙবে এবং তৃতীয় কলামে শব্দটি কীভাবে গঠিত তা লিখবে। লেখা হয়ে গেলে সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো। তিন ধরনের গঠিত শব্দের একটি করে উদাহরণ দেখানো হলো।
গঠিত শব্দ শব্দটি ভাঙলে যেমন হবে কীভাবে গঠিত
সমাজজীবন সমাজ + জীবন সমাসের মাধ্যমে
সম্প্রসারণ সম + প্রসারণ উপসর্গের মাধ্যমে
সামাজিক সমাজ + ইক প্রত্যয়ের মাধ্যমে
কাজের ধরন: দলগত।
কাজের উদ্দেশ্য: সমাসের ধারণা প্রয়োগ করে শিক্ষার্থীদের সমাসের সাহায্যে শব্দ গঠন করার দক্ষতা বৃদ্ধি করে-তোলা।
উপকরণ : পাঠ্যবই, খাতা, সাদা কাগজ, কলম প্রভৃতি।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়