অনুচ্ছেদটির মূলভাব লেখো।
নরসিংদী জেলায় অবস্থিত উয়ারী-বটেশ্বর বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। ২০০০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্বের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এখানে খনন কাজ শুরু হয়। এখান থেকে পাওয়া যায় অনেক মূল্যবান প্রত্নসম্পদ। এগুলো বিশ্লেষণ করে বোঝা যায়, এখানে অনেক আগে উন্নত মানুষের বসবাস ছিল।
উয়ারী-বটেশ্বর হলো পাশাপাশি দুটি গ্রাম। এই দুই গ্রামে মাটি খননকালে নানা ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যেত। স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মোহাম্মদ হানিফ পাঠান ও তার ছেলে এ নিদর্শনগুলো সংগ্রহ করেন। প্রাপ্ত নির্দশনগুলো এ অঞ্চলে প্রাচীন জনপদের অস্তিত্বের প্রমাণ বহন করে।
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো।
পাহাড়পুর বিহারের আরেক নাম 'সোমপুর বিহার'। এটি রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার 'পাহাড়পুর' গ্রামে অবস্থিত। প্রায় ১৪শ বছর আগে বৌদ্ধধর্মের ভিক্ষুগণ এখানে থেকে ধর্মচর্চা করতেন আর শিষ্যদের শিক্ষা দিতেন। প্রকান্ড এই কীর্তি একসময় খালি পড়ে থাকে। ধারণা করা হয়, যুগ যুগ ধরে ধুলাবালি ও মাটি উড়ে এসে এর চারদিকে জমে। একসময় এটি মাটির স্তূপে ঢাকা পড়ে পাহাড়ের মতো হয়ে যায় বলে এর নাম পাহাড়পুর। মহাস্থানগড় বগুড়া জেলা থেকে ৮ কিমি উত্তরে অবস্থিত। ধর্মীয় দিক থেকে মহাস্থানগড় হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলমানদের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। এখানে টিলার মতো উঁচু দেখতে গোবিন্দভিটা নামের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। এই প্রত্নস্থলের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। এ নগরের প্রাচীন নাম ছিল পুন্ড্রবর্ধন, যাকে এখন পুন্ড্রনগরও বলা হয়। ধ্বংসাবশেষ খনন করে এখানে জৈন, হিন্দু, বৌদ্ধ ধর্মের পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের নিদর্শনও পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের এ ধরনের পুরাকীর্তিগুলো সংরক্ষণের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পাহাড়পুর, ময়নামতি ও মহাস্থানগড়ে এ ধরনের জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন থেকে নতুন প্রজন্মকে জ্ঞানার্জনে সহায়তা করে এই জাদুঘর। আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রছাত্রীরা এই ইতিহাসখ্যাত স্থানসমূহ পরিদর্শন করার মাধ্যমে তাদের জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ করতে পারে।
সঠিক উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখো।
১) সোমপুর বিহার দেখতে হলে তোমাকে বাংলাদেশের কোন বিভাগে যেতে হবে?
ক) ঢাকা খ) রাজশাহী
গ) সিলেট ঘ) খুলনা
উত্তর :খ) রাজশাহী;
২) মহাস্থানগড়ের আদি নাম কী?
ক) সোমপুর বিহার খ) পুন্ড্রবর্ধন
গ) রাজবন বিহার ঘ) গোবিন্দভিটা
উত্তর :(খ) পুন্ড্রবর্ধন;
৩) শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে-
ক) প্রত্নস্থলগুলো সংরক্ষণ করলে
খ) প্রত্নস্থলগুলোতে শিক্ষার্থীদের ভ্রমণ করালে
গ) প্রত্নস্থলে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করলে
ঘ) প্রত্নস্থলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখলে
উত্তর : (খ) প্রত্নস্থলগুলোতে শিক্ষার্থীদের ভ্রমণ করালে;
৪) গোবিন্দভিটার পাশ দিয়ে কোন নদীটি বয়ে গেছে?
ক) যমুনা খ) মেঘনা
গ) সুরমা ঘ) করতোয়া
উত্তর : করতোয়া
৫) জাদুঘর প্রত্ননিদর্শন কাদের জ্ঞানার্জনে সহায়তা করে?
ক) মুক্তিযোদ্ধা খ) নতুন প্রজন্ম
গ) শিক্ষক ঘ) পর্যটক
উত্তর : (খ) নতুন প্রজন্ম
নিচে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া হলো। উপযুক্ত শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করো।
শব্দ অর্থ
শিষ্য ছাত্র।
সমৃদ্ধ উন্নত।
পুরাকীর্তি কৃতিত্বের পরিচায়ক অতি পুরাতন প্রতিষ্ঠান।
সংরক্ষণ বিশেষ উদ্দেশ্যে রক্ষণাবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান। প্রকান্ড অতি বিশাল। পরিদর্শন মনোযোগ দিয়ে দেখা, পর্যবেক্ষণ।
ক) নীল তিমি এক প্রাণী।
খ) সালাম স্যারের তাকে সালাম দিল।
গ) পরিবেশ রক্ষার জন্য বন্যপ্রাণী খুব জরুরি।
ঘ) আমরা গতকাল জাদুঘরটি করেছি।
ঙ) সোনারগাঁ একসময় কাপড়ের ব্যবসার কারণে হয়েছিল।
উত্তর : ক) প্রকান্ড; খ) শিষ্য; গ) সংরক্ষণ; ঘ) পরিদর্শন; ঙ) সমৃদ্ধ।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো।
ক) সোমপুর বিহার কোন গ্রামে অবস্থিত? সোমপুর বিহারকে 'পাহাড়পুর' বলা হয় কেন তা চারটি বাক্যে লেখো।
উত্তর : সোমপুর বিহার পাহাড়পুর গ্রামে অবস্থিত।
সোমপুর বিহারে একসময় বৌদ্ধ ধর্মের চর্চা হলেও একসময় এটি খালি পড়ে থাকে। সম্ভবত যুগ যুগ ধরে ধুলাবালি উড়ে আসায় এটি একসময় সম্পূর্ণরূপে মাটির স্তূপে ঢাকা পড়ে যায়। তখন এর আকৃতি হয়ে যায় পাহাড়ের মতো। এ কারণেই এই পুরাকীর্তির নাম পাহাড়পুর।
খ) মহাস্থানগড় সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখো।
\হউত্তর : মহাস্থানগড় সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য :
১) মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।
২) মহাস্থানগড় রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত।
৩) মহাস্থানগড়ের পাশে রয়েছে করতোয়া নদী।
৪) মহাস্থানগড়ের ধ্বংসাবশেষ খনন করে জৈন, হিন্দু, বৌদ্ধ ও ইসলাম ধর্মের নানা নিদর্শন পাওয়া গেছে।
৫) মহাস্থানগড়ের প্রাচীন নাম পুন্ড্রবর্ধন।
পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়