৪র্থ অধ্যায়
২. ফেস্টুন
ব্যানারের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ হলো ফেস্টুন। সাধারণত ওপর থেকে নিচের দিকে ঝোলানো যায় এমন সেস্নাগান-সংবলিত কাগজ বা কাপড়ের টুকরা হলো ফেস্টুন। এটি দেখতে আয়তাকার। মূলত, মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কাগজ বা কাপড়ে লিখে এটি তৈরি করা হয়। প্রচার-প্রচারণার জন্য ভবনের দেয়ালে, বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের মঞ্চের দুই পাশে, গাছে বা খুঁটিতে ফেস্টুন টানানো হয়।র্ যালি ও মিছিলে ফেস্টুন হাতে বহন করা হয়।
ফেস্টুনের বৈশিষ্ট্য
ফেস্টুনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেগুলো হলো-
ঙ্ ফেস্টুন দেখতে আয়তাকার।
ঙ্ ফেস্টুন সহজে বহনযোগ্য।
ঙ্ ফেস্টুন তৈরির খরচ তুলনামূলক কম।
ঙ্ ফেস্টুন টেকসই হয়।
ফেস্টুন তৈরির কৌশল
ফেস্টুন তৈরির জন্য বেশ কিছু কৌশল রয়েছে। সেগুলো হলো-
ঙ্ ফেস্টুনের বিষয়বস্তু ঠিক করে নিতে হবে।
ঙ্ বিষয়বস্তু অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাপে কাগজ বা কাপড় কেটে নিতে হবে।
ঙ্ লেখার জন্য কাগজ, কাপড়, স্কেল, কলম, পেনসিল, রং, তুলি, ঝোলানোর জন্য দড়ি বা সুতা প্রভৃতি সংগ্রহ করতে হবে।
ঙ্ বিষয়বস্তু অনুযায়ী লেখা লিখতে হবে।
ঙ্ ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োজনীয় ছবি আঁকতে হবে।
পাঠ মূল্যায়ন
প্রশ্ন : সাধারণত ওপর থেকে নিচের দিকে ঝোলানো যায় এমন সেস্নাগান-সংবলিত কাগজ বা কাপড়ের টুকরাকে কী বলে?
উত্তর : ফেস্টুন।
প্রশ্ন : ফেস্টুন কেন ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : প্রচার-প্রচারণার জন্য।
প্রশ্ন : ফেস্টুন কীসের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ?
উত্তর : ব্যানারের।
প্রশ্ন : ফেস্টুন দেখতে কেমন?
উত্তর : আয়তাকার।
৩. পোস্টার
পোস্টার হলো কাগজে ছবি এবং শব্দের একটি মুদ্রিত নকশা। যা দৃশ্যমান প্রদর্শনীর মাধ্যম হিসেবে কোনো বিষয়বস্তু প্রচারের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। অর্থাৎ প্রচারণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো পোস্টার। বর্তমানে পোস্টারের মাধ্যমে প্রচারণা ব্যাপক জনপ্রিয়। পোস্টারের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রচারণা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের প্রচারণা, বিভিন্ন পণ্যের প্রচারণা ইত্যাদি করা হয়।
প্রচার-প্রচারণার জন্য পোস্টার ব্যবহারের ইতিহাস বহু পুরনো। কাগজ আবিষ্কৃত হওয়ার পূর্বে মানুষ দেয়ালে, পাথরে, গাছে বিভিন্ন নিয়মকানুন, রীতিনীতি, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, সরকারি নির্দেশসহ নানাবিধ বিষয় লিখে বা সংকেত দিয়ে রাখত। এই বিষয়টিই প্রাক্-আধুনিক যুগে পোস্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ভারতবর্ষে ছাপানো পোস্টার ব্যবহার শুরু হয়েছে ১৭৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্ষমতা দখলের পর। সে সময় সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি দেবদেবীর ছবিও পোস্টার আকারে প্রকাশ করা হতো।
পোস্টারের ধরন
পোস্টার বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন :
ঙ্ রাজনৈতিক প্রচারণামূলক পোস্টার
ঙ্ সামাজিক সচেতনতামূলক পোস্টার
ঙ্ বিনোদনমূলক পোস্টার
ঙ্ শিক্ষামূলক পোস্টার
ঙ্ ধর্মীয় প্রচারণামূলক পোস্টার
ঙ্ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনমূলক পোস্টার
পোস্টার তৈরির উপকরণ
পোস্টার তৈরির জন্য কাগজ, কলম, মার্কার, পেনসিল, আঠা ইত্যাদি উপকরণের প্রয়োজন হয়।
পোস্টার তৈরির কৌশল
ঙ্ পোস্টারের বিষয়বস্তু ঠিক করে নিতে হবে।
ঙ্ বিষয়বস্তু অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাপে কাগজ কেটে নিতে হবে।
ঙ্ পোস্টারের শুরুতে শিরোনাম দিতে হবে।
ঙ্ শিরোনামের নিচে মূল বিষয়বস্তু লিখতে হবে।
ঙ্ ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োজনীয় ছবি যোগ করতে হবে।
ঙ্ নিচে প্রচারকের নাম-ঠিকানা দিতে হবে।
পাঠ মূল্যায়ন
প্রশ্ন : কাগজে ছবি এবং শব্দের মুদ্রিত নকশাকে কী বলে?
উত্তর : পোস্টার।
প্রশ্ন : পোস্টার কেন তৈরি করা হয়?
উত্তর : কোনো বিষয়বস্তু প্রচারের উদ্দেশ্যে।
প্রশ্ন : কাগজ আবিষ্কৃত হওয়ার পূর্বে মানুষ কোথায় নানাবিধ বিষয় লিখত?
উত্তর : দেয়ালে, পাথরে ও গাছে।
প্রশ্ন : ভারতবর্ষে ছাপানো পোস্টার ব্যবহার শুরু হয়েছে কত সালে?
উত্তর : ১৭৫৭ সালে।
প্রশ্ন : পোস্টারের একটি ধরনের নাম লেখো।
উত্তর : শিক্ষামূলক পোস্টার।
প্রশ্ন : পোস্টার তৈরির জন্য কী কী প্রয়োজন হয়?
উত্তর : কাগজ, কলম, মার্কার, আঠা ইত্যাদি।
৪. পস্ন্যাকার্ড
পস্ন্যাকার্ড হলো মুদ্রিত বা হাতে লেখা একটি নোটিশ, যা দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য প্রকাশ্যে বহনযোগ্য। পস্ন্যাকার্ড বহনের জন্য এর হাতল লাগানো থাকে। সাধারণত শক্ত কাগজ, ধাতব পাত, কাঠ বা পস্নাস্টিক পর্দায় লিখে পস্ন্যাকার্ড তৈরি করা হয়। বিভিন্ন মিছিল, শোভাযাত্রা, সমাবেশ প্রভৃতিতে অংশগ্রহণকারীদের পস্ন্যাকার্ড বহন করতে দেখা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন স্টেশন কিংবা জনবহুল স্থানে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যও পস্ন্যাকার্ড কাজে লাগে।
পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়