পঞ্চম শ্রেণির বাংলা
প্রকাশ | ০৬ জুন ২০২৪, ০০:০০
রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
ভাবুক ছেলেটি
বিরামচিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদ পুনঃলিখন
সঠিক স্থানে বিরামচিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি আবার লেখো।
আকাশে মেঘ ডাকে বিদু্যৎ চমকায় বাজ পড়ে কেন এমন হয় অবাক বিস্ময়ে ভাবে সে
উত্তর :আকাশে মেঘ ডাকে। বিদু্যৎ চমকায়। বাজ পড়ে। কেন এমন হয়? অবাক বিস্ময়ে ভাবে সে।
এককথায় প্রকাশ/ক্রিয়াপদের চলিতরূপ লিখন
এককথায় প্রকাশ করো:
ক) অধ্যাপনা করেন যিনি = অধ্যাপক
খ) বিশেষ খ্যাতি আছে যার = বিখ্যাত
গ) কোনো কিছু খেয়াল করে দেখা = পর্যবেক্ষণ
ঘ) জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাপূর্ণ = পান্ডিত্যপূর্ণ
ঙ) মূল্য আছে যার = মূল্যবান
চ) অত্যন্ত কষ্ট করে যা করতে হয় = দুরূহ
ছ) গাছ বেড়ে ওঠা মাপার যে যন্ত্র = ক্রেস্কোগ্রাফ
জ) বিজয়ের নিমিত্তে যে স্তম্ভ = বিজয়স্তম্ভ
ক্রিয়াপদের চলিতরূপ লেখো:
ভাঙিয়া, পড়িতে, চমকাইয়া, জানাইলেন, করিয়াছেন।
উত্তর :
সাধু রূপ চলিত রূপ
ভাঙিয়া - ভেঙে
পড়িতে - পড়তে
চমকাইয়া - চমকে
জানাইলেন - জানালেন
করিয়াছেন - করেছেন
বাক্যে সাধুরীতির ক্রিয়াপদের চলিতরূপ :
সাধুরূপ
বাড়ির কাজকর্ম তেমন করিতে হয় না।
আকাশ বিদু্যৎ চমকে বাজ পড়িলে অবাক বিস্ময়ে ভাবে।
ঝড়ে গাছপালা ভাঙিয়া গেলে বাবাকে প্রশ্ন করে।
ছেলেটির পড়াশোনার হাতেখড়ি হইয়াছিল বাড়িতেই।
জগদীশচন্দ্র বসু নানান বিষয়ে গবেষণা করিয়াছেন।
চলিতরূপ
বাড়ির কাজকর্ম তেমন করতে হয় না।
আকাশ বিদু্যৎ চমকে বাজ পড়লে অবাক বিস্ময়ে ভাবে।
ঝড়ে গাছপালা ভেঙে গেলে বাবাকে প্রশ্ন করে।
ছেলেটির পড়াশোনার হাতেখড়ি হয়েছিল বাড়িতেই।
জগদীশচন্দ্র বসু নানান বিষয়ে গবেষণা করেছেন।
বিপরীত/সমার্থক শব্দ লিখন
নিচের শব্দগুলোর বিপরীত শব্দ লেখো :
দুরন্ত, আগ্রহ, স্থায়ী, কল্যাণ, সফল।
উত্তর :
মূল শব্দ বিপরীত শব্দ
দুরন্ত - শান্ত
আগ্রহ - অনাগ্রহ
স্থায়ী - অস্থায়ী
কল্যাণ - অকল্যাণ
সফল - ব্যর্থ
নিচের শব্দগুলোর সমার্থক শব্দ লেখো :
বৃষ্টি, গাছ, দুরন্ত, সকল, আমন্ত্রণ, মৃতু্য।
উত্তর :
মূল শব্দ সমার্থক শব্দ
বৃষ্টি - বরিষণ, বারিধারা।
গাছ - উদ্ভিদ, তরু।
দুরন্ত - অশান্ত, চঞ্চল।
সফল - সার্থক, কৃতকার্য।
আমন্ত্রণ - নিমন্ত্রণ, দাওয়াত।
মৃতু্য - জীবনাবসান, মরণ।
বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু
সূচনা : জগদ্বিখ্যাত প্রথম বাঙালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু। তিনি অদৃশ্য আলোর ধর্ম, বেতার যন্ত্র ও গাছের প্রাণ আবিষ্কার করেছেন। একই সঙ্গে তিনি একজন সাহিত্যিকও ছিলেন।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন : জগদীশচন্দ্র বসুর জন্ম ময়মনসিংহে ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর। তার বাবার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে। তার পড়াশোনার হাতেখড়ি হয়েছিল বাড়িতেই। তারপর প্রাথমিক স্কুল ও ময়মনসিংহ জিলা স্কুল পড়াশোনা করেন। এরপর কলকাতায় সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে ১৯৭৪ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৮৭৮ সালে এফএ এবং
১৮৮০ সালে বিজ্ঞান শাখায় বিএ পাস করে তিনি ডাক্তারি পড়তে যান বিলাতে। ডাক্তারি পাস করে তিনি ১৮৮১ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে ট্রাইপস্ পাস করেন। এরপর লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বছর বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন : ১৮৮৫ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞান অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। পাশাপাশি বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষণার কাজ করতে থাকেন। ১৯১৬ সালে অবসর গ্রহণের পর তিনি 'ইমিরেটাস প্রফেসর' পদ লাভ করেন।
আবিষ্কার : বিনা তারে শব্দ প্রেরণের 'ক্রিস্টাল রিসিভার' নামক বেতার যন্ত্র তিনি আবিষ্কার করেন। তিনি বেশি পরিচিতি লাভ করেন 'গাছেরও প্রাণ আছে'- এ সত্য প্রমাণ করে। আবিষ্কার করেন গাছ বেড়ে ওঠার যন্ত্র 'ক্রেস্কোগ্রাফ'। এ ছাড়া গাছের দেহের উত্তেজনার বেগ মাপার যন্ত্র 'রিজোনাস্ট রেকর্ডার'। তার গবেষণার প্রধান ক্ষেত্র ছিল 'বিদু্যৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ' ও 'অদৃশ্য আলোকের ধর্ম'। তার এ সব নির্ভুল আবিষ্কারে চমৎকৃত হন বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, বিজ্ঞানী অলিভার লজ ও লর্ড কেলভিন।
সাহিত্যকীর্তি : জগদীশচন্দ্র বসু বাংলাতেও বই লিখেছেন। তার লেখা 'নিরুদ্দেশের কাহিনী' বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি। 'অব্যক্ত' ও 'অদৃশ্য আলোক' তার আর একটি লেখা গ্রন্থ।
\হউপাধি লাভ : লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় ১৮৯৬ সালে তাকে ডিএসসি (উড়পঃড়ৎ ড়ভ ঝপরবহপব) ডিগ্রি প্রদান করে। এরপর ভারত সরকার 'নাইট' ও ব্রিটিশ সরকার সিএসই উপাধি দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৩৫ সালে তাকে ডিএসসি ডিগ্রি প্রদান করে। বিজ্ঞান শিক্ষা ও চর্চার ক্ষেত্রে তার সফলতা ছিল গ্যালিলিও নিউটনের সমকক্ষ।
উপসংহার : স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ১৯১৭ সালের ৩০ নভেম্বর কলকাতায় 'বসু বিজ্ঞান মন্দির' প্রতিষ্ঠা করেন। মৃতু্যর পূর্ব পর্যন্ত তিনি সেখানে গবেষণা পরিচালনা করেন। এই সফল বিজ্ঞানী ও বাঙালির গৌরব ১৯৩৭ সালের ২৩ নভেম্বর গিরিডিতে মৃতু্যবরণ করেন। তিনি মারা গেলেও পৃথিবীর প্রায় সব মানুষের মনে যুগ যুগ ধরে অমর হয়ে থাকবেন তার কৃতকর্মের জন্য।