'কত দিকে কত কারিগর'
গল্পটি সৈয়দ শামসুল হকের (১৯৩৫-২০১৬) লেখা। সৈয়দ শামসুল হক কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও নাটক রচনা করেছেন। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবদান রাখার কারণে তাকে সব্যসাচী লেখক বলা হয়। তার লেখা উলেস্নখযোগ্য বইয়ের মধ্যে আছে- 'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়', 'নূরলদীনের সারাজীবন' ইত্যাদি। তিনি সিনেমার জন্যও কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও গান লিখেছেন।
'কত দিকে কত কারিগর' গল্পটি পড়ার সময়ে প্রমিত উচ্চারণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
গল্পটি পড়া শেষ হলে এবার নিচের শব্দার্থগুলো দেখে নিই।
অবিশ্বাস্য: যা বিশ্বাস করা যায় না।
আঁচড়: দাগ টানা।
আর্ট: ছবি আঁকা ও অন্যান্য শিল্প।
আর্টিস্ট: শিল্পী।
ইতস্তত: দ্বিধা।
এক খামচা চুল: পাঁচ আঙুলের এক খামচিতে তোলা বা একমুঠ চুল।
একটিপ: একটুখানি।
কাদার তাল: কাদার পিন্ড।
কারিগর: যারা হাতে জিনিস বানান।
কুমোর: মাটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানানো যাদের পেশা।
কৌতূহল: অবাক, জিজ্ঞাসা।
খোদাই করা নকশা: কেটে কেটে বানানো নকশা।
চান্দ সওদাগর:বেহুলা-লখিন্দরের কাহিনির একটি চরিত্র।
ছাঁচ: কোনো কিছু বানানোর কাঠামো।
ছোকরা: ছেলে।
জয়নুল আবেদীন:বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী।
জ্যাঠা: চাচা।
ঝাপসা: অস্বচ্ছ, অস্পষ্ট।
তরফ: পক্ষ।
দামড়া: বলদ গরু।
নিরাসক্ত: আবেগহীন, নির্লিপ্ত।
পাটা: মাটির ফলক।
বাঁশবনে আচ্ছন্ন: বাঁশগাছ দিয়ে ভরা।
বেণীবন্ধনরত: বেণী বাঁধছে এমন।
ভাঁটি: মাটির তৈরি জিনিস পোড়ানোর বড় চুলা।
ময়ূরপঙ্খি নৌকা: যে নৌকার সামনের দিকটা ময়ূরের মুখের মতো নকশা করা।
মওলানা ভাসানী: বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ।
লালন ফকির: বাংলা ভাষার একজন বিখ্যাত লোককবি ও গায়ক।
শ্যেন: তীক্ষ্ন, বুনো।
সন্দিগ্ধ: সন্দেহ ভরা।
সমুখের: সামনের।
সরা: মাটির ঢাকনা।
সানকি: মাটির থালা।
সূক্ষ্ণ: মিহি, সরু।
যতিচিহ্ন
দৈনন্দিন জীবনে আমরা নানা প্রয়োজনে কথা বলি। লক্ষ করলে দেখা যায়, এসময় আমরা একটানা বলি না। বক্তব্য বিষয়টিকে স্পষ্ট করার জন্য কথার নানা অংশে আমরা একটুখানি থামি, এরপর আবারও বলতে শুরু করি। তবে এই থামার সময় সব জায়গায় একরকম হয় না।
এই যে, কথার বিভিন্ন অংশে প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা থামি- এ বিষয়টিকে বোঝানোর জন্য বাক্যে নানা রকম চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। থামার সময় নির্দেশক এ সকল চিহ্নকে যতিচিহ্ন বলে। যতিচিহ্ন বাক্যকে বোধগম্য, সাবলীল ও শ্রম্নতিমধুর করে তোলে।
কথা বলার সময় একটি বাক্য বলে আমরা একটু থামি তারপর আরেকটি বাক্য শুরু করি। কোনো বাক্যে আমরা কোনো কিছুর বিবরণ দিই, কোনো বাক্যে আমরা কোনো কিছু জানতে চাই, কোনো বাক্যে আমরা বিস্ময়ের ভাব প্রকাশ করি। আবার কোনো কথার অর্থ স্পষ্ট করার জন্য একই বাক্যের মাঝখানেও মাঝে মাঝে থামতে হয়।
লেখার সময় এই থামা বা বিরতিকে বোঝানোর জন্য কিছু চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। ভাব ও অর্থকে স্পষ্ট করার জন্য বাক্যের মধ্যে ও শেষে যেসব চিহ্ন ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে বলা হয় যতিচিহ্ন। যতিচিহ্ন বক্তব্যকে বা লেখার ভাষাকে বোধগম্য, সুস্পষ্ট ও সুবিন্যস্ত করে। এগুলোকে ছেদচিহ্ন বা বিরামচিহ্নও বলা হয়।
পাঠ মূল্যায়ন
প্রশ্ন : ভাব ও অর্থ স্পষ্ট করার জন্য বাক্যের মধ্যে ও শেষে যেসব চিহ্ন ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে কী বলে?
উত্তর : যতিচিহ্ন।
প্রশ্ন : শ্বাসবিরতি নির্দেশ করা ও বক্তব্যের অর্থবোধে সহায়তা করা কার কাজ?
উত্তর : যতিচিহ্নের।
প্রশ্ন : যতিচিহ্নের অন্য নাম কী?
উত্তর : বিরাম চিহ্ন।
প্রশ্ন : এক বলার দ্বিগুণ সময়কাল থামতে হয় কোন যতিচিহ্নে?
উত্তর : সেমিকোলন।
প্রশ্ন : দাঁড়িচিহ্নের অপর নাম কী?
উত্তর : পূর্ণচ্ছেদ।
প্রশ্ন : উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগ করতে গেলে কোন চিহ্ন ব্যবহার করতে হয়?
উত্তর : কোলন চিহ্ন।
প্রশ্ন : সমজাতীয় একাধিক শব্দ পর পর থাকলে কোন চিহ্ন ব্যবহৃত হয়?
উত্তর : কমা।
প্রশ্ন : বিবৃতি ও অনুজ্ঞাবাচক বাক্যের শেষে কোন যতিচিহ্ন ব্যবহার করা হয়।
উত্তর : দাঁড়ি।
প্রশ্ন : একটি অনুচ্ছেদ লেখো যেখানে বিভিন্ন রকম যতিচিহ্নের ব্যবহার আছে।
নির্দেশনা : প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বা স্কুলে বা বাড়িতে তুমি বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখো নিশ্চয়ই! সেখান থেকে কোনো একটি বিষয় নিয়ে তোমার নিজের মতো করে একটি অনুচ্ছেদ লেখো ও সেখানে সঠিকভাবে বিভিন্ন ধরনের যতিচিহ্ন ব্যবহার করো। তোমার লেখাটি শ্রেণিশিক্ষককে দেখাও।
উত্তর : আরজু পাখিকে বলে পাখি, একটু নিচে নামো! তোমার সাথে কথা কই। আমাকে স্কুলে নিয়ে যাবে? সাবু, সোমেন ওরা কেউ নিয়ে গেল না। তুমি নিয়ে যাও না! তোমার ডানায় ভর করে চলে যাব। কী হলো? নেমে গেলে কেন? মেঘ আমায় নিয়ে যাও না। তোমার কোলে বসে চলে যাব স্কুলে। কী বলছ? ভিজে যাবো? ভিজলাম। আবার শুকিয়ে যাব তবুও তো স্যার বুঝবেন, ছোটো পাখি চন্দনা, এই যে শালিক আমাকে দেখতে পাচ্ছ না? আমি একলা বসে আছি। আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আমার সাথে কথা বলো না- চন্দনা আমায় নিল না, মেঘ আমায় নিল না- শালিক আমার সাথে কথা বলে না।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়