অষ্টম শ্রেণির বাংলা

প্রকাশ | ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন সহকারী শিক্ষক দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয় রাঙামাটি
প্রশ্ন : সাধারণ গদ্য রচনা থেকে ভাষণ কোন দিক থেকে আলাদা? উত্তর : ১. এখানে বাস্তব জীবনের ঘটনা তুলে ধরা হয়। ২. পূর্ববর্তী স্মৃতি চারণ করা হয়। ৩. ভাষণ উপস্থিত জনতা উপলক্ষে দেওয়া হয়। প্রশ্ন : কী কী উপলক্ষে ভাষণ দেওয়া হয়? উত্তর : যেসব কারণে ৭ মার্চ এর ভাষণ দেওয়া হয়- ১. বাংলা ভাষার জন্য দেয়া হয়। ২. বাঙালির মুক্তির জন্য দেয়া হয়। ৩. পকিস্তানের শোষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে এ ভাষণ দেয়া হয়। কেন প্রায়োগিক লেখা প্রশ্ন : '৭ মার্চের ভাষণ' শিরোনামের রচনাটিকে কী কী কারণে প্রায়োগিক লেখা বলা যায়? উত্তর : ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য যে ভাষণ প্রদান করেন সেই ভাষণটি ৭ মার্চ এর ভাষণ নামে পরিচিত। এই ভাষণটি বাস্তব জীবনের সাথে সম্পর্কিত। এখানে স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও ৭ মার্চ এর ভাষণে স্মৃতিচারণ করা হয়েছে। উপরিউক্ত কারনে, '৭ মার্চের ভাষণ' শিরোনাম এর রচনাটিকে প্রয়োগিক লেখা বলা হয়। ভাষণ ভাষণ এক ধরনের বক্তৃতা। কোনো তথ্য জানানোর জন্য, কোনো বিষয় উপস্থাপনের জন্য, কিংবা জনমত গঠনের জন্য ভাষণ দেওয়া হয়ে থাকে। ভাষণ লিখিত হতে পারে, তবে মুখে বলা বা পাঠ করার পরেই ভাষণ নামে চিহ্নিত হয়। যিনি ভাষণ দেন, তাঁকে বলে বক্তা। যারা ভাষণ শোনেন, তারা হলেন শ্রোতা। ভাষণ দেওয়ার সময়ে বক্তা সাধারণত শ্রোতাকে সম্বোধন করে থাকেন। ভাষণ এক ধরনের প্রায়োগিক রচনা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা আলোচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা প্রিয় শিক্ষার্থীরা, কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনার জন্য অবশ্যই আত্মবিশ্বাস ও কথাবার্তায় স্পষ্টতা ও প্রমিত রূপ ব্যবহার খুবই প্রয়োজন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা আলোচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনার জন্য কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। যেমন : -প্রথমে অনুষ্ঠান সম্পর্কে কিছু কথা বলতে হবে। -অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথিদের স্বাগতম ও সালাম জানাতে হবে। -তারপর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী অর্থাৎ অনুষ্ঠানে পারফর্ম যারা করবে তাদের স্বাগতম জানাতে হবে। -সঞ্চালনার সময় প্রমিত ও স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে হবে। -সবশেষ সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করতে হবে। নিচে একটি নমুনা দেয়া হলো। সুপ্রিয় দর্শক, শুরু হতে যাচ্ছে সবুজ সংঘ কর্তৃক আয়োজিত আজকের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গান নৃত্য আবৃত্তি কৌতুক জাদু সবকিছু মিলিয়েই আমাদের আজকের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, আশা করি আপনারা সকলেই উপভোগ করবেন। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে আমি (নিজের নাম বলবে) আছি আপনাদের সাথে। ১. চলুন শুরুতেই গানের জগতে হারিয়ে যাই, এখন গান পরিবেশন করতে মঞ্চে আসছেন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী... আসমা বেগম। [(আসমা বেগম বা তুমি যাকে ডাকবে সে মঞ্চে এসে গান শুনাবে) গান পরিবেশন শেষ হলে তাকে ধন্যবাদ জানাবে।] ২. কবিতা আমাদের মনের কথা বলে, কবিতার প্রত্যেকটি শব্দ যেন হৃদয়কে ব্যাকুল করে, জাগিয়ে তোলে আমাদের বোথ শক্তিকে, তাইতো এবার কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন করবেন অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী... ওমর ফারুক আমি মঞ্চে ওমর ফারুককে কবিতা আবৃত্তি করার জন্য অনুরোধ করছি। ৩. গান হলো, কবিতা আবৃত্তি হলো এবার আমরা নৃত্য পরিবেশনায়। তাই এখন আপনাদের সামনে নৃত্য পরিবেশন করবেন অত্র প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাথীবৃন্দ ... আয়েশা, মারওয়া, শাকিল, সাকিব ও মফিজ। আমি মঞ্চে তাদেরকে নৃত্য পরিবেশন করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। ৪. এখন আপনাদের সামনে বক্তব্য রাখবেন অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি-- জনাব মো. আহম্মদ তপন। আমি তাকে তার মূল্যবান বক্তব্য রাখার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। [এভাবে ধাপে ধাপে মঞ্চে তোমরা তোমাদের আয়োজিত সকল প্রোগ্রামগুলো যারা পারফর্ম করবে তাদের ডাকবে ও শেষে ধন্যবাদ জানাবে।] [অনুষ্ঠান শেষ করার জন্য নিচের মতো করে গুছিয়ে শেষ করবে] তোমার সঞ্চালনা দর্শক দেখতে দেখতে সময় ফুরিয়ে যায়, তেমনি আমাদের আজকের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ইতি টানার সময় এসে গেলো। তবে যাওয়ার আগে একটি গানের সুরে সুরে আমরা বিদায় নেবো, এবারে গান পরিবেশন করতে মঞ্চে আসছেন শিল্পী ফারুক চৌধুরী। নিজের অভিজ্ঞতার বিবরণ- প্রিয় শিক্ষার্থীরা, নিজের অভিজ্ঞতার বিবরণ কিভাবে করতে হয় তার একটি নমুনা সমাধান দেয়া হলো। নমুনা হিসেবে আমি নির্ধারণ করেছি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণে আমার অভিজ্ঞতা। চলো নিচে তার সমাধান কেমন হবে তা দেখে নেয়া যাক। একটি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণে আমার অভিজ্ঞতা ঐতিহাসিক স্থান বলতে সেই স্থানকে বোঝায় যেটি ইতিহাসের স্বাক্ষর বহন করে। মানুষের মন কৌতুহলী; তা অজানাকে জানতে ও অদেখাকে দেখতে চায়। ঐতিহাসিক স্থানের ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহ আরও বেশি। ছোটবেলা থেকেই আমাদের দেশের ঐতিহাসিক স্থানগুলো দেখার আগ্রহ আমার প্রবল। গত শরৎকালীন ছুটিতে আমি একটি বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থান 'বাগেরহাট' দর্শনের সুযোগ পেয়েছিলাম। আমি সেখানে আমার বন্ধুকে নিয়ে গিয়েছিলাম। বাগেরহাটের আর্কষণীয় ঐতিহাসিক স্থানগুলো হলো্তখানজাহান আলীর মাজার, খানজাহান আলীর দীঘি, ষাট গম্বুজ মসজিদ এবং ঘোড়া দীঘি। সব ক'টি স্থানই দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। খানজাহান আলীর মাজারটি কারুকাজ সংবলিত একটি সুন্দর একতলা ভবন। চৈত্র মাসের পূর্ণিমা রাতে মাজারের পাশে এক বিরাট মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ মাজারের সামনে একটি বিশালায়তনের দীঘি রয়েছে। এ দীঘিতে দুর্লভ প্রজাতির কুমির রয়েছে, যা পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। আমি ষাট গম্বুজ মসজিদও পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে জানতে পারি মসজিদটি ষাট গম্বুজ নামে পরিচিত হলেও এ গম্বুজ ৭৭টি। ধারণা করা হয় খান-ই-জাহান পনেরশ' শতকে এটি নির্মাণ করেন। প্রায় পাঁচশ বছর পরও এর স্থাপত্যশৈলী এক অপার বিস্ময়। মুঘল স্থাপত্যের নির্দশন এ মসজিদটি অনেক সুন্দরভাবে সজ্জিত। এ কারুকার্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। ঘোড়া দীঘিটিও বিশাল। এটি ষাট গম্বুজ মসজিদের নিকটে অবস্থিত। বাগেরহাট সত্যিই একটি ঐতিহাসিক স্থান। আমি বাগেরহাট ত্যাগ করেছি কিন্তু সে স্মৃতি আজও আমার মনে পড়ে।