অষ্টম শ্রেণির বাংলা

প্রকাশ | ২৪ মে ২০২৪, ০০:০০

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন সহকারী শিক্ষক দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয় রাঙামাটি
তৃতীয় অধ্যায় : প্রথম পরিচ্ছেদ প্রায়োগিক লেখা যেসব বৈশিষ্ট্য থাকলে কোনো লেখাকে প্রায়োগিক লেখা বলা যায়, সেসব বৈশিষ্ট্যের মধ্য থেকে তিনটি বৈশিষ্ট্য নিচে লেখো। লেখার পরে সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো। প্রায়োগিক লেখার বৈশিষ্ট্য ১. প্রায়োগিক লেখা বাস্তব জীবনের সাথে সম্পর্কিত। ২. প্রায়োগিক লেখার ক্ষেত্রে স্বাস কাল-পাত্র বিবেচনায় রাখতে হয়। ৩. প্রায়োগিক লেখায় স্মৃতিচারণ করা হয়। প্রায়োগিক লেখার উদ্দেশ্য ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রায়োগিক লেখা সম্পর্কে জেনেছি। একেক ধরনের প্রায়োগিক লেখা একেক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। নিচের ছকের বাম পাশের কলামে যোগাযোগের কিছু উদ্দেশ্য দেওয়া হলো। উদ্দেশ্য পূরনের জন্য কী ধরনের প্রায়োগিক লেখা প্রয়োজন হতে পারে, তা নিচের ছকের ডান পাশের কলামে লেখো। এরপর সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো। প্রায়োগিক লেখা : ভাষণ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির পিতা। ভাষা-আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য তিনি বহুবার কারাবরণ করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তাঁর রচিত তিনটি বইয়ের নাম 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী', 'কারাগারের রোজনামচা' ও 'আমার দেখা নয়াচীন'। ভাষণটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান থেকে সংকলন করা হয়েছে। ভাষণের প্রেক্ষাপট ১৯৬৯-এর গণঅভু্যত্থানের ফলে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ক্ষমতাচু্যত হন। এরপর ক্ষমতায় এসে নতুন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। নির্বাচনের ফল অনুযায়ী পাকিস্তানের সরকার গঠন করার কথা ছিল আওয়ামী লীগের। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ষড়যন্ত্র শুরু করে। সেই ষড়যন্ত্রের প্রতিক্রিয়ায় পূর্ববাংলার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ঘটনার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণটিকে 'বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য' হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ৭ মার্চ ভাষণ শব্দের অর্থ আরটিসি : রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স; গোলটেবিল বৈঠক। ব্যারাক : সেনাছাউনি। ইউনেস্কো : জাতিসংঘের একটি সংস্থা। উইড: প্রত্যাহার। মার্শাল ল : সামরিক শাসন। শাসনতন্ত্র : সংবিধান। সুপ্রিমকোর্ট : সর্বোচ্চ আদালত। সেক্রেটারিয়েট : সচিবালয়। সেমি-গভর্নমেন্ট : আধা সরকারি। হাইকোর্ট : উচ্চ আদালত। ওয়াপদা : পানি ও বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ড। জজকোর্ট : জেলা আদালত। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি : জাতীয় সংসদ। পড়ে কী বুঝলাম '৭ মার্চের ভাষণ' রচনার ভিত্তিতে নিচে কয়েকটি প্রশ্ন দেওয়া আছে। তোমার সহপাঠীর সঙ্গে প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করো, সংক্ষেপে এগুলোর উত্তর তৈরি করো এবং উপস্থাপন করো। উপস্থাপনার শেষে শিক্ষকের পরামর্শ অনুযায়ী সংশোধন করো। প্রশ্ন : এই ভাষণের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কথা নিজের ভাষায় লেখো। উত্তর : ১. এই ঐতিহাসিক ভাষণে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ঘটনা উলেস্নখ করা হয়। ২. ১৯৫২ সালের ভাষা অন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৬৬ এর ৬ দফা, ১৯৬৯ এর গণঅভুথ্যান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। ৩. মুক্তির সংগ্রাম এর আহ্বান জানানো হয়। প্রশ্ন : বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণে কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে? উত্তর : ১৯৫২ সাল থেকে বাংলার দামাল ছেলেরা বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। এরপর ১৯৭১ সালে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয় এবং অবশেষে আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। তাই এ ভাষণ বাংলার মানুষের মুক্তিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।