মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১
ইতিহাস ও ঐতিহ্য

হোয়াইট হাউজ

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক
  ২০ মে ২০২৪, ০০:০০
হোয়াইট হাউজ

হোয়াইট হাউস বা সাদা বাড়ি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির দাপ্তরিক বাসভবন। ওয়াশিংটন, ডিসি'র পেনসিলভানিয়া এভিনিউয়ে অবস্থিত এই বাসভবনটি ১৭৯২ থেকে ১৮০০ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। জন অ্যাডামসের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব রাষ্ট্রপতিই এই বাসভবনে ছিলেন। এই ভবনের স্থপতি ছিলেন জেমস হোবান, তিনি আয়ারল্যান্ডের নাগরিক। ১৮০১ সালে টমাস জেফারসন হোয়াইট হাউসে উঠলে, তিনি ভবনের সামনের দিকের অংশ প্রসারিত করেন। তিনি ভবনটির সামনে দুইটি স্তম্ভসারি তৈরি করেছিলেন।

১৮১৪ সালে যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনী হোয়াইট হাউসকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। এ সময় বাসভবনটির পুরো অভ্যন্তরের অংশ এবং বাহিরের বেশ খানিকটা অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পুনর্নির্মাণ আরম্ভ হয়। ১৮১৭ সালের অক্টোবরে জেমস মন্‌রো এ আংশিক নির্মিত ভবনে ওঠেন। ১৮২৪ সালে ভবনের দক্ষিণ ভাগের এবং ১৮২৯ সালে উত্তর দিকের স্তম্ভগুলো নির্মিত হয়। ১৯০৯ সালে প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হাওয়ার্ড ট্যাফ্‌?ট্‌? ভবনের দক্ষিণ অংশ সম্প্রসারিত করেন এবং সর্বপ্রথম ওভাল অফিস প্রতিষ্ঠা করেন। ওভাল অফিস পরবর্তীতে ভবনের সম্প্রসারণের কারণে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। তৃতীয় তলার চিলেকোঠাটি ১৯২৭ সালে বাসযোগ্য করে তৈরি করা হয়। সামাজিক অনুষ্ঠানের অভ্যর্থনার জন্য ভবনটির পূর্ব দিকে একটি অংশ তৈরি করা হয়। তৈরিকৃত উভয় অংশই জেফারসনের নির্মিত স্তম্ভসারির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছিল।

ট্‌রুম্যান হোয়াইট হাউসের সংস্কারের পর আর কোনো স্থাপত্য পরিবর্তন করা হয়নি। কেনেডির পুনঃনির্বাচন থেকে প্রতি রাষ্ট্রপতি পরিবার হোয়াইট হাউসের ব্যক্তিগত অংশের কিছু পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু হোয়াইট হাউস সংরক্ষণ কমিটি থেকে পরিবর্তনের অনুমোদন নিতে হয়েছে। হোয়াইট হাউসের ঐতিহাসিকতা বজায় রাখার জন্য, কংগ্রেস অনুমোদিত এই কমিটি প্রতিটি পরিবার-সাধারণত ফার্স্টলেডির প্রতিনিধিত্বে কাজ করে।

হোয়াইট হাউস ওয়াশিংটনে প্রথম হুইলচেয়ারে- প্রবেশযোগ্য সরকারি ভবন হয়ে ওঠে। কারণ ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট পক্ষাঘাতগ্রস্ত অসুস্থতার কারণে একটি হুইলচেয়ার ব্যবহার করতেন।

রাষ্ট্রপতি সাধারণত সরকারি মোটরগাড়ি বা হেলিকপ্টারের মাধ্যমে হোয়াইট হাউস থেকে সরাসরি ভ্রমণ করে থাকেন। ১৯৫০-এর দশকে রাষ্ট্রপতি ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ার প্রথম হোয়াইট হাউস থেকে হেলিকপ্টারে করে যাতায়াত করেন।

মিসেস নিক্সনের প্রচেষ্টায় বাড়িতে ৬০০টির অধিক মূল্যবান বস্তুসামগ্রী আনা হয়।

কম্পিউটার ও প্রথম লেজার প্রিন্টার কার্টার প্রশাসনের সময় যোগ করা হয় এবং কম্পিউটার প্রযুক্তির ব্যবহার রিগ্যান প্রশাসনের সময় প্রসারিত করা হয়েছিল।

২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হোয়াইট হাউসের ছাদে সৌর প্যানেল একটি সেট স্থাপন করেন।

হাউজিং ভবনগুলো একত্রে হোয়াইট হাউসের কমপেস্নক্স নামে পরিচিত। এটা কেন্দ্রীয় নির্বাহী রেসিডেন্স, দু'পাশে ইস্ট উইং এবং ওয়েস্ট উইং দ্বারা পরিবেষ্টিত রয়েছে। প্রধান নকীব পরিবারের প্রত্যাহিক কাজকর্মকে রূপায়ন করেন। ভবনটি মূলত 'রাষ্ট্রপতির প্রাসাদ', 'প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ', বা 'রাষ্ট্রপতির ঘর' হিসেবে উলেস্নখ করা হয়। জনসাধারণের জন্য 'হোয়াইট হাউস' রেকর্ড করা হয়েছিল ১৮১১ সালে। একটি পৌরাণিক ঘটনায় আবির্ভূত হয়েছিল এটি। ওয়াশিংটনে নির্মিত কাঠামোটি পুড়ে যাওয়ার পর কাঠামোর পুনর্র্নির্মাণের সময়, সাদা রং প্রয়োগ করেছিল, সাদা রংটি তা আচ্ছাদন করেছিল। তাই ভবনটির নাম ওই রঙের নামে নামকরণ করা হয়েছিল। ১৯০১ সালে রাষ্ট্রপতি থিওডোর রুজভেল্ট দ্বারা কাগজপত্রে 'হোয়াইট হাউস-ওয়াশিংটন' নামটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত 'এক্সিকিউটিভ ম্যানশন' নামটি অফিসিয়াল কাজে ব্যবহার করা হতো। বর্তমান ছাপানো নাম-ঠিকানা শব্দ এবং ব্যবস্থা 'হোয়াইট হাউস' শব্দটির সঙ্গে 'ওয়াশিংটন' শব্দটির কেন্দ্রীভূত হয়ে ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট প্রশাসনিকভাবে ব্যবহার করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে