শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১

অষ্টম শ্রেণির বাংলা

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
  ১২ মে ২০২৪, ০০:০০
অষ্টম শ্রেণির বাংলা

তৃতীয় অধ্যায় : তৃতীয় পরিচ্ছেদ

তথ্যমূলক লেখা

যেসব বৈশিষ্ট্য থাকলে কোনো লেখাকে তথ্যমূলক লেখা বলা যায়, সেসব বৈশিষ্ট্যের মধ্য থেকে তিনটি বৈশিষ্ট্য নিচে লেখো। লেখার পরে সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো।

তথ্যমূলক লেখার বৈশিষ্ট্য

-বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য পরিবেশন করা হয়।

-তথ্য উপস্থাপনের আগে তথ্যের সত্যতা যাচাই করা হয়।

-জানা অজানা নানা বিষয় তুলে ধরা হয়।

মুহম্মদ শহীদুলস্নাহ (১৮৮৫-১৯৬৯) বিখ্যাত ভাষাবিদ। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে এমএ ডিগ্রি এবং প্যারিসের সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সংস্কৃত ও বাংলা' বিভাগে তিনি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তাঁর লেখা বইয়ের মধ্যে আছে 'বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত', 'বাংলাভাষার ব্যাকরণ', 'বাংলা সাহিত্যের কথা' ইত্যাদি। 'আঞ্চলিক ভাষার অভিধান' তাঁর সম্পাদিত একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিধান।

ইবনে বতুতার ভ্রমণ

ইবনে বতুতা মরক্কোর তানজাহ শহরে ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ১৩২৬ খ্রিষ্টাব্দে ২২ বছর বয়সে হজের উদ্দেশ্যে তিনি জন্মভূমি থেকে রওনা হন। ভূমধ্যসাগরের তীরস্থ আফ্রিকার প্রধান প্রধান শহরগুলো ভ্রমণ শেষে তিনি মিসরে উপস্থিত হন। সেখান থেকে আলেকজান্দ্রিয়া বন্দরে পৌঁছে মক্কা শরিফে যাওয়ার উদ্যোগ নেন। সেই দেশের রাজা তখন মোগলদের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন।

ইবনে বতুতা সেজন্য সেখানে কোনো জাহাজ না পেয়ে পুনরায় মিসরে ফিরে আসেন। সেখান থেকে তিনি সিরিয়া যান। দামেস্কে গিয়ে হাদিসের বিদ্যায় দক্ষতা লাভ করেন। তাঁর শিক্ষকগণের মধ্যে দুজন বিদুষী রমণীও ছিলেন। তারপর তিনি সেখান থেকে গত বছরের হজের সংকল্প পূরণের জন্য প্রথমত মদিনা শরিফে উপস্থিত হন। পরে মক্কা শরিফে গিয়ে হজ সম্পন্ন করেন।

ইবনে বতুতার ভ্রমণ গল্পের শব্দের অর্থ

উদ্যোগ : প্রস্তুতি।

বিদুষী : বিদ্বান (নারীবাচক)।

তীরস্থ : তীরবর্তী।

বৃত্তান্ত : বিবরণ।

সওয়ারী : আরোহী।

স্মারকলিপি : সম্মিলিত আবেদনপত্র।

পদানত : পরাজিত।

বংশোদ্ভূত : বংশে জন্ম নেওয়া।

এই রচনায় ব্যবহৃত স্থান নাম

আফগানিস্তান : আন্দরাব, কুন্দুস, কুরাম পাস, গজনি, চরখ, পাঞ্জ শির, পারোয়ান, পাশাই, হিরাত।

আফ্রিকা : আলেকজান্দ্রিয়া, উলস্নুজা, ক্রিমিয়া, জাঞ্জিবার, তানজাহ, তুনিস, ফেজ, মরক্কো, মশহদ, মিসর।

আরব দেশ : ইয়ামেন, এডেন, ওমান, জাফর, জেদ্দা, দামেস্ক, মদিনা, মাসকাট, সিরিয়া, হাজরামাউত।

ইউরোপ : বুলগার, সরায়, সার্ভনিয়া, স্পেন, হাজী তুরখান।

ইন্দোনেশিয়া : সুমাত্রা।

ইরাক : ওয়াসেত, কির্মাশ, কুফা, নাজাফ আশরাফ, বশরা, বাগদাদ, মারভিন, রওয়াক।

ইরান : ইয়াজ্জাদ, ইস্পাহান, গায়রুন, নয়শাবুর, শিরাজ, শুশতার, হরমুজ।

উজবেকিস্তান : বোখারা।

কাজাখাস্তান : কাজাখ।

তুরস্ক : আনাতোলিয়ায়, বুরসা।

মিয়ানমার : পেগু।

ভারত : অযোধ্যা, আমরোহা, উজ্জয়িনী, কনৌজ, কন্ধার, কামরূপ, কালিকট, কাশ্মীর, কোইল, কোলাম, গোয়া, গোয়ালিয়র, ঘোঘা, চন্দেরী, তালপাত, দৌলতাবাদ, পাকপট্টন, বাহারুচ, বিজনোর, বিয়ানা, মাদুরাই, মালাবার, মুলতান, লাহিরী, শালিয়াত, সপ্তগ্রাম, হানুর।

পড়ে কী বুঝলাম

'ইবনে বতুতার ভ্রমণ' রচনার ভিত্তিতে নিচে কয়েকটি প্রশ্ন দেওয়া আছে। তোমার একজন সহপাঠীর সাথে এগুলো নিয়ে আলোচনা করো এবং সংক্ষেপে উত্তর তৈরি করো।

প্রশ্ন : এই রচনায় ইবনে বতুতাকে কী ধরনের ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে?

উত্তর : এই রচনায় ইবনে বতুতা কে ঞৎধাবষবৎ বা ভ্রমণকারী, হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মাত্র ২২ বছর বয়সে হজের উদ্দেশ্যে রওনা করে দীর্ঘ ২৮ বছরে তিনি ৯৫ হাজার মাইল ভ্রমণ করেন।

প্রশ্ন : 'কিন্তু দেশে ফিরেও তিনি স্থির থাকতে পারেননি।' -কী কারণে ইবনে বতুতা স্থির থাকতে পারেননি বলে মনে করো?

উত্তর : ইবনে বতুতা প্রথম ভ্রমণ শুরু করেন হজ করার উদ্দেশ্যে মাত্র ২২ বছর বয়সে। এর পরের ২৫ বছর তিনি এশিয়া, আফ্রিকাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে ২৫ বছর পর দেশে আসেন। দেশে ফিরেই তিনি সুদান ভ্রমণে বের হন।

তাই কবি বলেছিলেন 'কিন্তু দেশে ফিরেও তিনি স্থির থাকতে পারেন নি'।

প্রশ্ন : দেশে কিংবা দেশের বাইরে ভ্রমণের ব্যাপারে তোমার কোনো অভিজ্ঞতা, ইচ্ছা বা মতামত থাকলে তা উলেস্নখ করো।

উত্তর : বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। বাংলাদেশের পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এর অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। গত বছর আমরা পুরো পরিবার পঞ্চাগড় গিয়েছিলাম কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য। এবার শীতের ছুটিতে দেশের বাহিরে দার্জিলিং যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে।

লেখা নিয়ে মতামত

'ইবনে বতুতার ভ্রমণ' রচনাটির যেসব বক্তব্য নিয়ে তোমার মতামত রয়েছে, বা মনে প্রশ্ন জেগেছে, তা নিচের ছকে লেখো। কাজ শেষে কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো।

পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে