বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১

দ্বাদশ শ্রেণির সমাজকর্ম (দ্বিতীয় পত্র)

মনিরুল হক রনি, প্রভাষক, সমাজকর্ম বিভাগ, সাভার সরকারি কলেজ, সাভার, ঢাকা
  ০৪ মে ২০২৪, ০০:০০
দ্বাদশ শ্রেণির সমাজকর্ম (দ্বিতীয় পত্র)

বাংলাদেশে সরকারি সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম

৮১. অনুচ্ছেদে নির্দেশিত প্রতিষ্ঠানটির নাম কী?

ক) নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ে

খ) সমাজসেবা অধিদপ্তরে

গ) শ্রম মন্ত্রণালয়ে

ঘ) তথ্য মন্ত্রণালয়ে

উত্তর :খ) সমাজসেবা অধিদপ্তরে

৮২. উক্ত প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমের উপকার ভোগীরা হলেন-

র. প্রতিবন্ধী ব্যক্তি

রর. এসিডদগ্ধ নারী

ররর. বিধবা নারী ও বয়স্ক জনগণ

নিচের কোনটি সঠিক?

ক) র ও রর খ) র ও ররর

গ) রর ও ররর ঘ) র, রর ও ররর

উত্তর : ঘ) র, রর ও ররর

৮৩. শহর সমাজসেবা কর্মসূচিতে কোন পদ্ধতির প্রয়োগ করা হয়?

ক) সমাজকর্ম খ) মনোবিজ্ঞান

গ) সমাজবিজ্ঞান ঘ) নৃবিজ্ঞান

উত্তর : ক) সমাজকর্ম

৮৪. জাতীয় পর্যায়ে শহর সমাজসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করেন কে?

ক) সহকারী পরিচালক খ) উপ-পরিচালক

গ) সিনিয়র উপ-পরিচালক ঘ) পরিচালক

উত্তর :গ) সিনিয়র উপ-পরিচালক

৮৫. কোন পদ্ধতির প্রয়োগ শহর সমাজসেবা কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়?

ক) ব্যক্তি সমাজকর্ম পদ্ধতির

খ) দল সমাজকর্ম পদ্ধতির

গ) সমষ্টি উনয়ন পদ্ধতির

ঘ) সমষ্টি সংগঠন পদ্ধতির

উত্তর :ঘ) সমষ্টি সংগঠন পদ্ধতির

বাংলাদেশে মৌলিক মানবিক চাহিদা

১. রফিক সিডরে মারা যাওয়ায় তার পরিবার অতিকষ্টে

জীবন-যাপন করছে। পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি

হওয়ায় রফিকের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চলে না।

এমন কি স্বাস্থ্যহীনতা ও পুষ্টিহীনতারও শিকার হচ্ছে।

উপরন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসারের ব্যয়ভার

মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।

ক. 'ঈড়সসড়হ ঐঁসধহ ঘববফং' গ্রন্থের লেখক কে?

খ. মৌল মানবিক চাহিদা হিসেবে শিক্ষার গুরুত্ব লিখ।

গ. উদ্দীপকে উলেস্নখিত রফিকের পরিবারে মৌল

মানবিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থতা থেকে কী কী সমস্যা

সৃষ্টি হতে পারে? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকে উলিস্নখিত সমস্যাসমূহ মোকাবিলায়

সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধর।

উত্তর :ক. 'ঈড়সসড়হ ঐঁসধহ ঘববফং' গ্রন্থের লেখক হলেন শার্লট টোলে।

খ. মৌল মানবিক চাহিদা হিসেবে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।

শিক্ষা এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে

ইতিবাচক ও নেতিবাচক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ধারণা সুস্পষ্ট হয়। এ আলোয় আলোকিত মানুষ যে কোনো ধরনের অন্যায় থেকে নিজেকে বিরত রাখে এবং ভালো কাজে নিয়োজিত হয়। শিক্ষা মানুষকে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গ. উদ্দীপকে উলেস্নখিত রফিকের পরিবারের মৌল মানবিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থতা থেকে নিরক্ষরতা, স্বাস্থ্যহীনতা, পুষ্টিহীনতা, অপরাধ প্রবণতার মতো সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

মানুষের সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলোকে মৌল মানবিক চাহিদা বলে।

খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিত্তবিনোদন এ চাহিদার অন্তর্গত। এ চাহিদার অপূরণ থেকে বিভিন্ন রকমের আর্থ-সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। উদ্দীপকের রফিকের পরিবার সে ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে।

উদ্দীপকের রফিক সিডরে মারা গেছে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় তার মৃতু্যতে পরিবারের মৌল মানবিক চাহিদা পূরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রফিক মারা যাওয়ার পর তার সন্তানরা কোনোরকমে জীবনধারণ করলেও লেখাপড়া করতে পারছে না। অথচ শিক্ষার চাহিদা পূরণ না হলে নিরক্ষরতার মতো সমস্যা সৃষ্টি হবে। আবার স্বাস্থ্যহীনতা, পুষ্টিহীনতা, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য, কুসংস্কার ইত্যাদি সমস্যারও অন্যতম কারণ নিরক্ষরতা। অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসারের ব্যয়ভার মেটাতে রফিকের পরিবারের সদস্যরা হিমশিম খাচ্ছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে অনেকেই মৌল মানবিক চাহিদা পূরণ করার জন্য অবৈধ পথ বেছে নেয়। ফলে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ বাড়ে। তাই বলা যায়, মৌল মানবিক চাহিদা পূরণের ব্যর্থতা থেকে রফিকের পরিবারে ওপরে আলোচিত সমস্যা দেখা দেবে।

ঘ. উদ্দীপকে রফিকের পরিবারের মাধ্যমে নিরক্ষরতা,

স্বাস্থ্যহীনতা, পুষ্টিহীনতা, অপরাধপ্রবণতার মতো সমস্যার কথা উঠে এসেছে যেগুলো মোকাবিলায় সরকারের সুনির্দিষ্ট কিছু কার্যক্রম রয়েছে।

শিক্ষা মানুষের অন্যতম মৌলিক মানবিক অধিকার।

বাংলাদেশ সরকার নাগরিকের এ অধিকার নিশ্চিত করতে প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করেছে।

এছাড়া সরকারিভাবে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত

বিনামূল্যে বই বিতরণ; মেয়েদের জন্য দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উপবৃত্তি চালু; প্রাথমিক ও মাধ্যমিক খাতে বৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধির মতো বিভিন্ন কর্মসূচিও গৃহীত হয়েছে। এছাড়া জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর আওতায় সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থাকে (প্রথম থেকে উচ্চতর ডিগ্রি) ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে নিরক্ষরতা ছাড়াও রফিকের পরিবারে স্বাস্থ্যহীনতা, পুষ্টিহীনতা, অপরাধপ্রবণতার মতো সমস্যাও লক্ষ করা যায়। এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১১-১৬ মেয়াদে ৫১,০৮২.৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টিখাত উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায় হয়। সাধারণ মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেলা ও উপজেলায় প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে (মোট ৪৮২টি হাসপাতাল) মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি, ভিটামিন এ ক্যাপসুল সপ্তাহ প্রভৃতি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এসএমএস এর মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়া এ ধরনের দরিদ্র পরিবারের জন্য সরকারিভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিও চালু আছে।

এ খাতে সরকার ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকার বিভিন্ন

ভাতা বাবদ ২৩,৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। সার্বিক আলোচনা থেকে তাই বলা যায় উদ্দীপকে উলিস্নখিত শিক্ষা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা মোকাবিলায় সরকার গৃহীত কর্মসূচিগুলো ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে