সপ্তম শ্রেণির বাংলা
প্রকাশ | ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
৬ষ্ঠ অধ্যায় :২য় পরিচ্ছেদ
পরিবর্তিত শব্দগুলো নিচে লেখো। একই সঙ্গে শব্দগুলোর প্রমিত রূপ পাশে দেখাও। একটি করে দেখানো হলো।
কবিতায় ব্যবহৃত শব্দ :
আমায়, আধ, পেলেম, গেলেম
নাও, মোদের, লিখা
শব্দের প্রমিত রূপ :
আমাকে, আধা, পেলাম, গেলাম
নৌকা, আমাদের, লেখা
কবিতা ও ছড়ার সম্পর্ক
কবিতার সঙ্গে ছড়ার মিল রয়েছে অনেক জায়গায়। তবে এই মিলের ভেতরেও কবিতার মধ্যে ছড়াকে আলাদা করে চেনা যায়।
১. কবিতায় মিল-শব্দ থাকে। কোনো কবিতায় লাইনের শেষে মিল-শব্দ নাও থাকতে পারে। তবে ছড়ায় অবশ্যই লাইনের শেষে মিল-শব্দ থাকে।
২. কবিতার মতো ছড়াতেও শব্দরূপের পরিবর্তন হয়।
৩. কবিতা তাল দিয়ে দিয়ে পড়া যায়। এই তাল কখনো ধীর গতিতে পড়ে, কখনো দ্রম্নত গতিতে পড়ে। আবার কোনো কোনো কবিতায় তাল একেবারেই থাকে না। তবে ছড়া অবশ্যই তাল দিয়ে পড়া যায়। আর সেই তালও পড়ে খুব ঘন ঘন।
প্রশ্ন : ছড়া কী? ছড়া কাকে বলে?
উত্তর : ছড়া মূলত শিশুদের জন্য বানানো কবিতা। ছড়ার প্রতি জোড়া লাইনের শেষে মিল-শব্দ থাকে এবং দুত তালে পড়া যায়। ছড়ার আয়তন সাধারণত ছোটো হয়। ছড়ার লাইনগুলোও আকারে ছোটো হয়ে থাকে। কবিতার মতো ছড়াও যে কোনো বিষয় নিয়ে রচিত হতে পারে। অনেক সময়ে অকারণ বা অর্থহীন বিষয় নিয়েও আবোল-তাবোল ছড়া লেখা হয়। যারা ছড়া লেখেন তাদের বলে ছড়াকার।
ষষ্ঠ অধ্যায় :প্রথম পরিচ্ছেদ
নোলক কবিতা
'নোলক' কবিতায় কবি আল মাহমুদ 'নোলক' শব্দটিকে রূপক অর্থে ব্যবহার করেছেন। নোলক আবহমান বাঙালি মায়েদের নাকের অলঙ্কার হলেও এটি শুধু তার অর্থগত আর সৌন্দর্যের কারণেই গুরুত্বপূর্ণ না, গুরুত্বপূর্ণ আরো বড় কারণে।
কবি এখানে আক্ষরিক অর্থের নোলক খোঁজেনি, খুঁজেছেন এর ঐতিহ্য এবং ঐশ্বর্যকে। একটা সময়ে বাংলাদেশের নদীভরা মাছের সমাহার ছিল। আর আজ সেই নদীতে মাছ তো নেই-ই বরং নদীগুলোই বিলুপ্তির পথে। বাংলার অপরূপ বন-অরণ্য এখন আর চোখে পড়ে না। চারদিকে কৃত্রিমতা ছড়িয়ে গেছে। খেত ভরা ফসল নেই, গোলা ভরা ধান নেই।
একটা সময় এই বাংলাদেশের চারদিক ছিল ঐশ্বর্য্য আর সমৃদ্ধি। মানুষ মাছভাত খেয়ে জীবন ধারণ করত, সুখে ছিল। কিন্তু এখন চারদিক পাহাড়ের মতো শূন্যতা বিরাজ করছে। কবি তার মায়ের নোলক খোঁজার মধ্য দিয়ে মূলত বাংলাদেশের এই হারানো ঐশ্বর্য্যকেই খুঁজতে চেয়েছেন।
কবি পরিচিতি
কবি : আল মাহমুদ
জন্ম---মৃতু্য : ১১ জুলাই, ১৯৩৬্ত ১৫ ফেব্রম্নয়ারি, ২০১৯
উলেস্নখযোগ্য সাহিত্যকর্ম : লোক লোকান্তর, কালের কলস, সোনালী কাবিন, মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো, আরব্য রজনীর রাজহাঁস, বখতিয়ারের ঘোড়া, অদৃশ্যবাদীদের রান্নাবান্না, ত্রিশেরা, উড়াল কাব্য।
পুরস্কার/সম্মাননা : বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৮), একুশে পদক (১৯৮৬)।
কবিতা বুঝি
শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী তোমরা দলে ভাগ হও। 'নোলক' কবিতায় কী বলা হয়েছে, তা দলে আলোচনা করে বোঝার চেষ্টা করো। কোন দল কেমন বুঝতে পেরেছে, তা যাচাই করার জন্য এক দল অপর দলকে প্রশ্ন করবে। এজন্য আগেই দলে আলোচনা করে কাগজে প্রশ্নগুলো লিখে রাখো। (মূল বইয়ের ১৩০ নম্বর পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন : 'নোলক' কবিতার কবির নাম কী?
উত্তর : 'নোলক' কবিতার কবির নাম- আল মাহমুদ।
প্রশ্ন : কবি কোথায় তার মায়ের সোনার নোলক খুঁজে বেড়ান?
উত্তর : কবি সারা বাংলাদেশে তার মায়ের সোনার নোলক খুঁজে বেড়ান।
প্রশ্ন : কবি নদীর কাছে তার মায়ের নোলক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে নদী কী উত্তর দেয়?
উত্তর : নদী তার শরীরে হাত দিতে নিষেধ করে, কারণ তার সমস্ত শরীর বোয়াল মাছে ভরা।
প্রশ্ন : তিতাস নদী কবির মায়ের নোলকের সন্ধান কোথায় দিয়েছিল?
উত্তর : তিতাস নদী কবিকে সন্ধান দিয়েছিল যে, যেখানে শাদা পালক বকরা থাকে, সেখানে তার মায়ের নোলক আছে।
প্রশ্ন : কবি কার কাছে তার মায়ের গয়না ফেরত চেয়ে মিনতি করেন?
উত্তর : কবি বনের কাছে তার মায়ের গয়না ফেরত চেয়ে মিনতি করেন।
প্রশ্ন : কবি বনকে কী বলে সম্বোধন করেন?
উত্তর : কবি বনকে 'ভাই' বলে সম্বোধন করেন।
প্রশ্ন : বন তার সবুজ চুলে কী পরে?
উত্তর : বন তার সবুজ চুলে ফুল পরে।
প্রশ্ন : বন কবিকে তার মায়ের নোলকের পরিবর্তে কী দিতে চায়?
উত্তর : বন কবিকে তার মায়ের নোলকের পরিবর্তে ফুলের গন্ধ দিতে চায়।
প্রশ্ন : হরিণের কাছে নোলকের সন্ধান চাইলে তারা কী করে?
উত্তর : হরিণ পাতার ফাঁকে মুখ বাঁকিয়ে রাখে।
প্রশ্ন : কবি কী ছাড়া ঘরে ফিরবেন না?
উত্তর : কবি তার ময়ের গয়না ছাড়া ঘরে ফিরবেন না।
প্রশ্ন : কবি কেন তার মায়ের গয়না ছাড়া ঘরে ফিরতে চান না?
উত্তর : নোলক বা গয়না কবিার মায়ের অতি প্রিয় বস্তু। সেটা হারিয়ে গেছে, তাই মায়ের মুখ আজ অলংকারহীন, মলিন। কবির দায়িত্ব হচ্ছে মায়ের সেই হারিয়ে যাওয়া অলংকার খুঁজে বের করা। কারণ মায়ের মুখের লাবণ্য ও মাকে খুশি করার জন্য গয়না খুব প্রয়োজন। তাই কবি গয়না ছাড়া ঘরে ফিরে যেতে চান না।
প্রশ্ন : 'নোলক' কবিতায় প্রকৃতির কোন কোন উপকরণের নাম উলেস্নখ রয়েছে?
উত্তর : 'নোলক' কবিতায় নদী, সবুজ বন, পাখি, হরিণ, পাহার ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপকরণের নাম রয়েছে।
প্রশ্ন : 'নোলক' কবিতায় নোলক শব্দটির মাধ্যমে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : 'নোলক' কবিতায় নোলক শব্দটির মাধ্যমে আমাদের অতীত ঐতিহ্যকে বোঝানো হয়েছে।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়