পাঠ মূল্যায়ন
প্রশ্ন: দূরে থাকা একজন মানুষের সঙ্গে আরেকজন মানুষের লিখিত যোগাযোগের মাধ্যমকে কী বলে?
উত্তর:চিঠি বা পত্র।
প্রশ্ন: গঠনগত দিক থেকে চিঠির কয়টি অংশ রয়েছে?
উত্তর:দুটি অংশ।
প্রশ্ন:চিঠির শুরুতে কী লিখতে হয়?
উত্তর:তারিখ ও জায়গার নাম।
প্রশ্ন:চিঠির কোথায় বক্তব্য বিষয় লিখতে হয়?
উত্তর:মূল পত্রাংশ।
প্রশ্ন:চিঠির ভেতরের অংশ কয়টি ভাগে বিভক্ত?
উত্তর:পাঁচটি অংশে।
প্রশ্ন:চিঠির কোন দিকে সম্ভাষণ লিখতে হয়?
উত্তর:বাম পাশে।
প্রশ্ন:প্রেরক ও প্রাপকের ঠিকানা কোথায় লেখা হয়?
উত্তর:খামের ওপর।
প্রশ্ন: চিঠির কোথায় বিদায় সম্ভাষণ ও নাম-স্বাক্ষর লিখতে হয়?
উত্তর:পত্রের শেষে।
পাঠ্যবইয়ে প্রদত্ত চিঠিটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
প্রশ্ন:চিঠির শুরুতে 'মা' লেখাটি চিঠির কোন অংশকে নির্দেশ করে?
উত্তর: চিঠির শুরুতে 'মা' লেখাটি চিঠির সম্বোধন অংশকে নির্দেশ করে।
প্রশ্ন: 'আমার প্রতিশ্রম্নতি আমি কখনো ভুলব না।'্ত পাঠ্যবইয়ের চিঠির এই বাক্যটিতে লেখকের কোন আবেগ প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর:'আমার প্রতিশ্রম্নতি আমি কখনো ভুলব না।'- পাঠ্যবইয়ের চিঠির এই বাক্যটিতে লেখকের প্রতিশ্রম্নতি রক্ষার বিষয়ে দৃঢ়তা প্রকাশ পেয়েছে।
প্রশ্ন: চিঠির লেখক 'রক্তের নদীতে সাঁতার কাটি' কথাটি দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: উক্ত কথাটি দ্বারা চিঠির লেখক মুক্তিযুদ্ধের সময় রণাঙ্গনে তাদের সাহসী ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকাকে তুলে ধরেছেন। একসময় তিনি এতটাই সংবেদনশীল ছিলেন যে মুরগি জবাই করাও সহ্য করতে পারতেন না।
অথচ আজ দেশকে শত্রম্নমুক্ত করতে তিনি এতটাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে, পাশে রক্তাক্ত লাশ দেখেও ভয় করেন না। অজস্র মৃতু্য ও রক্তাক্ত পথ মাড়িয়েও তিনি আজ স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেন। পাশাপাশি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও সেখানে হৃদয়স্পর্শীভাবে ফুটে উঠেছে।
চিঠি লেখার ধারণা
চিঠি লেখার সময় বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখা আবশ্যক। এগুলো হলো-
ঙ্ শুরুতে তারিখ এবং স্থানের নাম লিখতে হবে।
ঙ্ সম্বোধন দিয়ে চিঠি শুরু করতে হবে।
ঙ্ চিঠির প্রথম দিকে বয়স ও মর্যাদা অনুযায়ী সম্ভাষণ করে সালাম বা প্রণাম, শুভেচ্ছা বা শুভাশিস জানাতে হবে।
ঙ্ চিঠির বক্তব্য যতটা সম্ভব গোছানো, স্পষ্ট ও সহজ-সরল হতে হবে।
ঙ্ বক্তব্য শেষে বিদায় জানাতে হবে এবং নিচে প্রেরকের নাম লিখতে হবে।
ঙ্ এরপর চিঠিটি খামে ভরে এর ওপর প্রেরক ও প্রাপকের ঠিকানা লিখে ডাকযোগে পাঠাতে হবে।
ব্যক্তিগত চিঠির দুটো অংশ থাকে।
যথা: ক. ভেতরের অংশ;
\হখ. বাইরের অংশ।
ক. চিঠির ভেতরের অংশ: চিঠির ভেতরের অংশ পাঁচটি ভাগে বিভক্ত। এগুলো হলো-
১. ঠিকানা: পত্রের ডান দিকে ওপরের কোনায় যেখান থেকে পত্র লেখা হচ্ছে, সেখানকার ঠিকানা লিখতে হবে।
২. তারিখ: ঠিকানার ঠিক নিচে যে তারিখে পত্র লেখা হচ্ছে, সেই তারিখ দিতে হবে। তারিখ দুইভাবে লেখা যায়। যেমন- ১ জানুয়ারি ২০২৩ অথবা ০১.০১.২০২৩
৩. সম্ভাষণ: পত্রের বাম দিকে যাকে পত্র লেখা হচ্ছে তাকে উপযুক্ত সম্ভাষণ করতে হবে। গুরুজন কিংবা সমবয়সি বন্ধু-বান্ধবকে সম্বোধন করার ভাষা আলাদা। যেমন:
ক. গুরুজন আত্মীয় হলে: শ্রদ্ধেয় আব্বা, পরম পূজনীয় বাবা, শ্রদ্ধাভাজনাসু মা ইত্যাদি।
খ. গুরুজন আত্মীয় না হলে: মান্যবরেষু, শ্রদ্ধাস্পদেষু, শ্রদ্ধেয়, শ্রদ্ধাভাজনেষু (মেয়েদের বেলায়: মাননীয়াসু, শ্রদ্ধাস্পদাসু, শ্রম্বেয়া, শ্রদ্ধাভাজনাসু ইত্যাদি)
গ. সমবয়সি বন্ধুদের বেলায়: প্রিয় আনিস, প্রীতিভাজন সোহ্লে, প্রীতিভাজনেষু, বন্ধুবরেষু (মেয়েদের বেলায় প্রিয় নীলিমা, প্রীতিভাজনীয়াসু) ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে কেবল নাম লিখেও সম্বোধন করা চলে। যেমন: সাজু, তোর পাঠানো চিঠি ও বই গতকালের ডাকে পেয়েছি।
ঘ. সম্পর্কে বা বয়সে ছোটদের সম্বোধনে: স্নেহের মারুফ, স্নেহভাজন গৌতম, স্নেহাস্পদেয়, কল্যাণীয়। (মেয়েদের বেলায়: স্নেহের নীলা, স্নেহভাজনীয়াসু, কল্যাণীয়াসু) ইত্যাদি।
৪. মূল পত্রাংশ: এরপর এক বা একাধিক অনুচ্ছেদে পত্রের মূলবক্তব্য গুছিয়ে লিখতে হয়। বক্তব্যের প্রথমে বা শেষে কুশল- সংক্রান্ত প্রশ্ন (কেমন আছ?) বা প্রত্যাশা। আশা করি, তোমরা সবাই ভালো আছ) থাকতে পারে। বিদায় সম্ভাষণ ও নাম স্বাক্ষর বক্তব্য শেষ হলে পত্রের শেষ দিকে সমাপ্তিসূচক পদ সালামান্তে, প্রণামান্তে, শুভেচ্ছান্তে ইত্যাদি লেখা হয়। তারপর সম্পর্ক অনুসারে বিনীত, স্নেহধন্য, প্রীতিধন্য, প্রীতিমুগ্ধ, (মেয়েদের বেলায়: বিনীতা, স্নেহধন্যা, প্রীতিধন্যা, প্রীতিমুগ্ধা), তোমারই, তোরই, আপনারই, শুভাকাঙ্ক্ষী বা শুভার্থী লিখে তার নিচে নিজের নাম লেখা হয়। আগে এ ক্ষেত্রে ইতি লেখা হতো। এখন অনেকেই লেখেন না
খ. চিঠির বাইরের অংশ: চিঠির বাইরে খামের বা পোস্টকার্ডের ডান দিকে প্রাপকের (যিনি পাবেন তার) নাম ও ঠিকানা লিখতে হয়। আর বাম দিকে লিখতে হয় প্রেরকের (যিনি চিঠি পাঠাচ্ছেন তার) নাম। বাংলাদেশে বা পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষায়ই ঠিকানা লেখা চলে। তবে সাধারণভাবে বিদেশে চিঠি লিখলে ঠিকানা ইংরেজিতে লেখা উচিত।
চিঠি লেখার সময় শব্দ চয়নে ও বাক্য প্রয়োগে সচেতন হতে হবে। এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে, যাতে পাঠক পরিতৃপ্তি পান। প্রতিটি বাক্য হবে সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে।
এছাড়াও পরিস্থিতির সূক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ লেখাকে আকর্ষণীয় করে তোলে। তাই সেদিকে লক্ষ রেখে চিঠি লিখতে হবে। ডায়েরি, রোজনামচা, দিনলিপি, দিনপঞ্জিকা এগুলো যেহেতু প্রায়োগিক লেখা, তাই এসব বিষয়ের মাধ্যমে নিজের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হবে।