রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সপ্তম শ্রেণির বাংলা

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
  ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
সপ্তম শ্রেণির বাংলা

৫ম অধ্যায় (১ম পরিচ্ছেদ)

দিনলিপির কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে-

ঙ্ দিনলিপি সাধারণত নিত্যদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখা হয়।

ঙ্ দিনলিপিতে তারিখ ও সময় উলেস্নখ করতে হয়।

ঙ্ সাধারণত দিনলিপির পরিসর সংক্ষিপ্ত হয়ে থাকে। তাই মূল বিষয়টি এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করতে হয়।

ঙ্ সাধারণত দিনলিপিতে ঘটনার বর্ণনা ধারাবাহিকভাবে লেখা হয়।

ঙ্ দিনলিপিতে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ নয়; বরং নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনাকে বর্ণনা করা হয়।

ঙ্ দিনলিপি মূলত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির বয়ান।

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন:দিনলিপি কাকে বলা হয়?

উত্তর:প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনাকে তারিখ অনুযায়ী লিখে রাখাকে দিনলিপি বলা হয়।

প্রশ্ন:দিনলিপিতে ব্যক্তির কী লেখা থাকে?

উত্তর:দিনলিপিতে ব্যক্তির প্রাত্যহিক জীবনে ঘটে যাওয়া বিশেষ কিছু ঘটনা লিখিত থাকে।

প্রশ্ন: বিশেষভাবে কোন প্রায়োগিক লেখা ব্যক্তিজীবনের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হতে পারে?

উত্তর: দিনলিপি ব্যক্তিজীবনের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হতে পারে।

প্রশ্ন:সাধারণত দিনলিপিতে ঘটনার বর্ণনা কীসের নিরিখে হয়ে থাকে?

উত্তর:সাধারণত দিনলিপিতে ঘটনার বর্ণনা নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে হয়ে থাকে।

প্রশ্ন: কোন প্রায়োগিক লেখায় ঘটনাকে ধারাবাহিক বর্ণনা করা হয়?

উত্তর:দিনলিপিতে ঘটনাকে ধারাবাহিক বর্ণনা করা হয়।

চিঠি

চিঠি বা পত্র হলো দূরে থাকা একজন মানুষের সঙ্গে আরেকজন মানুষের লিখিত উপায়ে যোগাযোগের একটি মাধ্যম। নানান কারণে আমাদের চিঠি লিখতে হয়। বিভিন্ন কারণে অনেক সময় আমাদের পরিবার-পরিজনের কাছ থেকে দূরে অবস্থান করার প্রয়োজন পড়ে। সে সময় তাদের কাছে চিঠি লিখলে তারা খুশি হয়।

এছাড়া বন্ধু-বান্ধবের কাছেও অনেক সময় আমাদের চিঠি লিখতে হয়। বিদ্যালয়ে কখনো কখনো প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদনপত্র লেখার প্রয়োজন হয়। এর বাইরে নিজেরা কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে আমন্ত্রণপত্র রচনার প্রয়োজন হয়। তাছাড়া এলাকার কোনো সমস্যা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেও সংবাদপত্রে পত্র লেখার দরকার হয়। তাই বিভিন্ন ধরনের চিঠি বা পত্র লিখতে জানা খুবই জরুরি।

চিঠি বা পত্র নানারকমের হতে পারে। যেমন: ব্যক্তিগত চিঠি, দরখাস্ত বা আবেদনপত্র ইত্যাদি। একেক ধরনের চিঠি লেখার সময়ে একেক ধরনের নিয়ম বা ছক মেনে চলতে হয়।

চিঠি লেখার সময় বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখা আবশ্যক। এগুলো হলো-

ঙ্ শুরুতে তারিখ এবং স্থানের নাম লিখতে হবে।

ঙ্ সম্বোধন দিয়ে চিঠি শুরু করতে হবে।

ঙ্ চিঠির প্রথম দিকে বয়স ও মর্যাদা অনুযায়ী সম্ভাষণ করে সালাম বা প্রণাম, শুভেচ্ছা বা শুভাশিস জানাতে হবে।

ঙ্ চিঠির বক্তব্য যতটা সম্ভব গোছানো, স্পষ্ট ও সহজ-সরল হতে হবে।

ঙ্ বক্তব্য শেষে বিদায় জানাতে হবে এবং নিচে প্রেরকের নাম লিখতে হবে।

ঙ্ এরপর চিঠিটি খামে ভরে এর ওপর প্রেরক ও প্রাপকের ঠিকানা লিখে ডাকযোগে পাঠাতে হবে।

চিঠির গঠনকাঠামো বা আঙ্গিক: চিঠির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোন অংশে কী লেখা হয় এবং কোন রীতিতে লেখা হয়, তার একটা নির্দিষ্ট ছক আছে। সেই ছককে বলা হয় গঠনকাঠামো বা আঙ্গিক। গঠনকাঠামোর দিক থেকে ব্যক্তিগত চিঠির দুটো অংশ থাকে।

যথা: ক. ভেতরের অংশ; খ. বাইরের অংশ।

ক. চিঠির ভেতরের অংশ: চিঠির ভেতরের অংশ পাঁচটি ভাগে বিভক্ত। এগুলো হলো-

১. ঠিকানা: পত্রের ডান দিকে ওপরের কোনায় যেখান থেকে পত্র লেখা হচ্ছে, সেখানকার ঠিকানা লিখতে হবে।

২. তারিখ: ঠিকানার ঠিক নিচে যে তারিখে পত্র লেখা হচ্ছে, সেই তারিখ দিতে হবে। তারিখ দুইভাবে লেখা যায়। যেমন- ১ জানুয়ারি ২০২৩ অথবা ০১.০১.২০২৩

৩. সম্ভাষণ: পত্রের বাম দিকে যাকে পত্র লেখা হচ্ছে তাকে উপযুক্ত সম্ভাষণ করতে হবে। গুরুজন কিংবা সমবয়সি বন্ধু-বান্ধবকে সম্বোধন করার ভাষা আলাদা। যেমন:

ক. গুরুজন আত্মীয় হলে: শ্রদ্ধেয় আব্বা, পরম পূজনীয় বাবা, শ্রদ্ধাভাজনাসু মা ইত্যাদি।

খ. গুরুজন আত্মীয় না হলে: মান্যবরেষু, শ্রদ্ধাস্পদেষু, শ্রদ্ধেয়, শ্রদ্ধাভাজনেষু (মেয়েদের বেলায়: মাননীয়াসু, শ্রদ্ধাস্পদাসু, শ্রম্বেয়া, শ্রদ্ধাভাজনাসু ইত্যাদি)

গ. সমবয়সি বন্ধুদের বেলায়: প্রিয় আনিস, প্রীতিভাজন সোহ্লে, প্রীতিভাজনেষু, বন্ধুবরেষু (মেয়েদের বেলায় প্রিয় নীলিমা, প্রীতিভাজনীয়াসু) ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে কেবল নাম লিখেও সম্বোধন করা চলে। যেমন: সাজু, তোর পাঠানো চিঠি ও বই গতকালের ডাকে পেয়েছি।

ঘ. সম্পর্কে বা বয়সে ছোটদের সম্বোধনে: স্নেহের মারুফ, স্নেহভাজন গৌতম, স্নেহাস্পদেয়, কল্যাণীয়। (মেয়েদের বেলায়: স্নেহের নীলা, স্নেহভাজনীয়াসু, কল্যাণীয়াসু) ইত্যাদি।

৪. মূল পত্রাংশ: এরপর এক বা একাধিক অনুচ্ছেদে পত্রের মূলবক্তব্য গুছিয়ে লিখতে হয়। বক্তব্যের প্রথমে বা শেষে কুশল- সংক্রান্ত প্রশ্ন (কেমন আছ?) বা প্রত্যাশা। আশা করি, তোমরা সবাই ভালো আছ) থাকতে পারে। বিদায় সম্ভাষণ ও নাম স্বাক্ষর বক্তব্য শেষ হলে পত্রের শেষ দিকে সমাপ্তিসূচক পদ সালামান্তে, প্রণামান্তে, শুভেচ্ছান্তে ইত্যাদি লেখা হয়। তারপর সম্পর্ক অনুসারে বিনীত, স্নেহধন্য, প্রীতিধন্য, প্রীতিমুগ্ধ, (মেয়েদের বেলায়: বিনীতা, স্নেহধন্যা, প্রীতিধন্যা, প্রীতিমুগ্ধা), তোমারই, তোরই, আপনারই, শুভাকাঙ্ক্ষী বা শুভার্থী লিখে তার নিচে নিজের নাম লেখা হয়। আগে এ ক্ষেত্রে ইতি লেখা হতো। এখন অনেকেই লেখেন না

খ. চিঠির বাইরের অংশ: চিঠির বাইরে খামের বা পোস্টকার্ডের ডান দিকে প্রাপকের (যিনি পাবেন তার) নাম ও ঠিকানা লিখতে হয়। আর বাম দিকে লিখতে হয় প্রেরকের (যিনি চিঠি পাঠাচ্ছেন তার) নাম। বাংলাদেশে বা পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষায়ই ঠিকানা লেখা চলে। তবে সাধারণভাবে বিদেশে চিঠি লিখলে ঠিকানা ইংরেজিতে লেখা উচিত।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে