২য় অধ্যায়
আমরা মানুষ। জন্মের পর থেকেই প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছি। আমাদের প্রতিদিনের কাজগুলোকে প্রধানত চারটি ধাপে আলোচনা করতে পারি। প্রথম ধাপে নিজের সুস্থতা এবং বেঁচে থাকার জন্য জরুরি ও আবশ্যকীয় কাজ করি; যেমন- প্রত্যহ ঘুমানো, দাঁত ব্রাশ, রান্না করা, খাওয়া-দাওয়া, হাঁটাচলা, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি।
দ্বিতীয় ধাপে মানসিক প্রফুলস্নতা ও আনন্দ লাভের জন্য কাজ করি; যেমন- খেলাধুলা করা, বই পড়া, আড্ডা দেওয়া, বেড়াতে যাওয়া, গল্প-গুজব করা ইত্যাদি। তৃতীয় ধাপে নিজের জ্ঞান-বুদ্ধি ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কাজ করি; যেমন- শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। চতুর্থ ধাপে আমরা জীবিকা নির্বাহের লক্ষ্যে অর্থ উপার্জনের জন্য কিছু কাজ করি; যেমন- চাকরি, ব্যবসায় পোশাক তৈরি, রিকশা চালানো, কৃষিকাজ করা, মাছ ধরা ইত্যাদি। জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষ মূলত চতুর্থ ধাপের কাজগুলো করে থাকে। এজন্য চতুর্থ ধাপের কাজগুলো জীবিকা নির্বাহের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কিত হওয়ায়, এগুলো পেশা হিসেবে গণ্য হবে।
কিন্তু প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপের কাজগুলো মানুষের ব্যক্তিগত প্রয়োজন পূরণের লক্ষ্যে কিংবা আবশ্যকীয় কাজ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে; যেখানে অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহের উদ্দেশ্য অনুপস্থিত। এজন্য এসব কাজ পেশা হিসেবে বিবেচিত হবে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সময় এবং চাহিদার পরিবর্তনের কারণে প্রতিনিয়ত মানুষের পেশার পরিবর্তন হচ্ছে। পেশার এরূপ পরিবর্তনকে পেশার রূপ বদল বলা হয়। যেমন- গরু ও লাঙল দিয়ে হাল চাষের পরিবর্তে ট্রাক্টর ব্যবহার, গরুর গাড়ির পরিবর্তে সিএনজি ও অটোরিকশা, ঢেঁকি দিয়ে ধান বানার পরিবর্তে মেশিনে ধান বানা, পাল তোলা নৌকার পরিবর্তে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ব্যবহার ইত্যাদি।
প্রশ্ন:শারীরিক বা মানসিক কর্মকান্ডকে কী বলে?
উত্তর:কাজ।
প্রশ্ন : মানুষ অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে যে কাজ করে তাকে কী বলে?
উত্তর: পেশা।
প্রশ্ন : সমাজে প্রত্যেক পেশার মানুষের কাজ বা দায়িত্ব কী রূপ?
উত্তর: ভিন্ন।
প্রশ্ন : কাজের ভিন্নতার জন্য কীসের ভিন্নতা থাকে?
উত্তর: শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, যোগ্যতা ও দক্ষতায়।
প্রশ্ন : কোথায় সব পেশার মানুষের অবদান রয়েছে?
উত্তর: সমাজের সুষম উন্নয়নে।
প্রশ্ন : প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কীসের প্রয়োজন হয়?
উত্তর: বিভিন্ন পেশার মানুষ।
প্রশ্ন : বিদ্যালয়, হাসপাতাল, কারখানা ইত্যাদিকে কী বলে?
উত্তর: প্রতিষ্ঠান।
প্রশ্ন : ফসল ফলানোর জন্য কে জমি চাষ করেন?
উত্তর: কৃষক।
প্রশ্ন : নদীতে কে মাছ ধরেন?
উত্তর: জেলে।
প্রশ্ন : উৎপাদনের জন্য কে কারখানায় কাজ করেন?
উত্তর: শ্রমিক।
প্রশ্ন : গরুর গাড়ির চালককে কী বলা হয়?
উত্তর: গাড়োয়ান।
শূন্যস্থান পূরণ
১. শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে করে।
উত্তর: পড়াশোনা।
২. অনেকে যাত্রী পরিবহনের জন্য চালান।
উত্তর: বাস।
৩. ফসল ফলানোর জন্য জমি চাষ করেন।
উত্তর: কৃষক।
৪. জেলেরা নদীতে ধরেন।
উত্তর: মাছ।
৫. উদ্দেশ্য সাধনের জন্য শারীরিক ও কর্মকান্ডই হচ্ছে কাজ।
উত্তর: মানসিক।
৬. মানুষ উপার্জনের জন্য কাজ করে।
উত্তর: অর্থ।
৭. অর্থের মাধ্যমে নির্বাহ করে।
উত্তর: জীবিকা।
৮. প্রত্যেক পেশার মানুষের কাজ।
উত্তর: ভিন্ন।
৯. দেশের উন্নয়নে সব পেশার মানুষের অবদান রয়েছে।
উত্তর: সুষম।
১০. সুস্থভাবে বাঁচতে একজন প্রয়োজন।
উত্তর: চিকিৎসকের।
১১. সময় বদলায়, সাথে বদলায়।
উত্তর: পেশা।
১২. যেকোনো পেশায় কাজ করতে প্রয়োজন হয়।
উত্তর: দক্ষতার।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
প্রশ্ন : কাজ কী?
উত্তর: কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য শারীরিক বা মানসিক কর্মকান্ডকে কাজ বলে।
প্রশ্ন : পেশা কী?
উত্তর: মানুষ অর্থ উপার্জনের জন্য যে কাজ করে এবং তার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে তাকে পেশা বলে।
প্রশ্ন : সমাজে প্রত্যেক পেশার মানুষের কাজ বা দায়িত্ব কেমন?
উত্তর: সমাজে প্রত্যেক পেশার মানুষের কাজ বা দায়িত্ব ভিন্ন।
প্রশ্ন : প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কীসের প্রয়োজন হয়?
উত্তর: প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বিভিন্ন পেশার মানুষের প্রয়োজন হয়।
প্রশ্ন : মোবাইল ব্যাংকিং বলতে কী বোঝ?
উত্তর: মোবাইলের মাধ্যমে ব্যাংক তার গ্রাহকদের যে ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করে তাকে মোবাইল ব্যাংকিং বলে। মোবাইল ব্যাংকিং হচ্ছে আধুনিক ব্যাংকিং-এ নতুনতম সংযোজন। এটি এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে গ্রাহক অর্থ জমা, উত্তোলন, স্থানান্তর এবং বিল পরিশোধসহ অন্যান্য লেনদেন করতে পারে। যার ফলে গ্রাহক ব্যাংকে না গিয়ে যেকোনো স্থান থেকে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারে।
প্রশ্ন : সময়ের পরিবর্তনে কী পরিবর্তিত হয়?
উত্তর: সময়ের পরিবর্তনে স্থানীয় ও দেশীয় পেশা পরিবর্তিত হয়।
প্রশ্ন : যেকোনো পেশার ক্ষেত্রেই কীরূপ দক্ষতা অর্জন করতে হয়?
উত্তর: যেকোনো পেশার ক্ষেত্রেই যেসব দক্ষতা অর্জন করতে হয় তা হলো সূক্ষ্ণভাবে চিন্তা করা, সমস্যার সমাধান করা, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা, ফলপ্রসূ যোগাযোগ করা, প্রয়োজনে অভিজ্ঞ/অন্যের সহায়তা নেওয়া, নতুন কিছু তৈরি/উদ্ভাবন করা প্রভৃতি।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়