আমাদের মুক্তিযুদ্ধ
প্রশ্ন: পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালি জনগণের ওপর বিভিন্ন অত্যাচার ও নিপীড়ন করে। ওই নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংঘটিত পাঁচটি প্রতিবাদ আন্দোলনের নাম লেখ।
উত্তর : উক্ত নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংঘটিত পাঁচটি প্রতিবাদ আন্দোলন হলো-
ক) ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন।
খ) ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন।
গ) ১৯৬৯ সালের গণঅভু্যত্থান।
ঘ) ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়।
ঙ) ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু।
প্রশ্ন: জাহেদ সাহেব মুক্তিযুদ্ধের সময় শত্রম্নপক্ষের গতিবিধি সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতেন। জাহেদ সাহেব কোন বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন? এ বাহিনীর সদস্যরা কোথায় প্রশিক্ষণ নিয়েছিল? উক্ত বাহিনী সম্পর্কে তিনটি বাক্য লেখ।
উত্তর : জাহেদ সাহেব গেরিলা বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এ বাহিনীর সদস্যরা ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। গেরিলা বাহিনী সম্পর্কে তিনটি বাক্য হলো-
১ . সংগঠনগতভাবে ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন মিলে ১১ হাজার সদস্যের গেরিলা বাহিনী গঠন করে।
২ . গেরিলা বাহিনী 'অ্যাকশন গ্রম্নপ' ও 'ইন্টেলিজেন্স গ্রম্নপ'- এ বিভক্ত ছিল।
৩ . 'অ্যাকশন গ্রম্নপ' অস্ত্র বহন করত এবং সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিত ও 'ইন্টেলিজেন্স গ্রম্নপ' শত্রম্নপক্ষের গতিবিধি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করত।
প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য ১৯৭১ সালের ১১ জুলাই একটি বাহিনী গঠন করা হয়। বাহিনীটির নাম কী? বাহিনীটি কয়টি ব্রিগেড ফোর্সে বিভক্ত ছিল? বাহিনীটির সম্পর্কে তিনটি বাক্য লেখ।
উত্তর : বাহিনীটির নাম মুক্তিবাহিনী। মুক্তিবাহিনী তিনটি বিগ্রেড ফোর্সে বিভক্ত ছিল। মুক্তিবাহিনীর সম্পর্কে তিনটি বাক্য হলো-
১ . এ বাহিনীর প্রধান ছিলেন জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী।
২ . এ বাহিনী যুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার্থে সারাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে।
৩. এ বাহিনীকে নিয়মিত ও অনিয়মিত বাহিনীতে ভাগ করা হয়েছিল।
প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধের কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশে একটি সরকার গঠিত হয়। এ সরকার কী নামে পরিচিত ছিল? এ সরকারের রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন? মুক্তিযুদ্ধে এ সরকারের ভূমিকা তিনটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : এ সরকার মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত ছিল। সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে তিনটি বাক্য হলো-
১. মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় মুক্তিবাহিনী গঠন করে।
২. এ সরকারের অনুপ্রেরণায় অগণিত মানুষ দেশকে মুক্ত করতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
৩. দেশে ও বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত ও সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্ন. 'অপারেশন সার্চলাইট' কী? অপারেশন সার্চলাইট পরিচালিত হয়েছিল কেন? অপারেশন সার্চলাইটের তিনটি ফলাফল লেখ।
উত্তর : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙালির ওপর যে অতর্কিত আক্রমণ করে, তার নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন সার্চলাইট। নিরীহ বাঙালিদের হত্যা করার জন্য অপারেশন সার্চলাইট পরিচালিত হয়েছিল। অপারেশন সার্চলাইটের তিনটি ফলাফল হলো-
১. অনেক নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়।
২. নির্বিচারে লুটতরাজ ও ধরপাকড় চালানো হয়।
৩. মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
প্রশ্ন. ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয় কেন? পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : যে কারণে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয় তা নিচে পাঁচটি বাক্য লেখা হলো-
১. শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য।
২. শহীদদের স্মরণ করার জন্য।
৩. মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান স্বীকার করা।
৪. শহীদদের পরিবারের প্রতি সহমর্মী হওয়ার জন্য।
৫. বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করা।
প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে পাকিস্তানি বাহিনী একটি বিশেষ হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে। এ হত্যাযজ্ঞটি কখন পরিচালিত হয়? এর মূল উদ্দেশ্য কী ছিল? এ হত্যাযজ্ঞে শহীদ হয়েছেন এমন তিনজনের নাম লেখ।
উত্তর : ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এ হত্যাযজ্ঞটি পরিচালিত হয়। বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে এবং বিশ্বের বুকে তারা মাথা উঁচু করে না দাঁড়াতে পারে সে উদ্দেশ্যেই এ হত্যাযজ্ঞটি পরিচালিত হয়েছিল। এ হত্যাযজ্ঞে শহীদ তিনজন হলেন-
১. অধ্যাপক আনোয়ার পাশা
২. অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী
৩. সাংবাদিক শহীদুলস্না কায়সার
প্রশ্ন. স্কুলে বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। উক্ত দিবস কত তারিখে পালিত হয়? দিবসটির তাৎপর্য চারটি বাক্য লেখ।
উত্তর : স্কুলে উদযাপিত দিবসটি অর্থাৎ বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর পালিত হয়।
১৬ ডিসেম্বরের তাৎপর্য সম্পর্কে চারটি বাক্য-
১. এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল।
২. এই দিনে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র।
৩. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তা অর্জিত হয় ১৬ ডিসেম্বরে।
৪. এই দিনে আমরা পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হই।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়