দশম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্র

প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

আতাউর রহমান সায়েম সহকারী শিক্ষক, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
সুভা ১২. প্রকৃতি কীভাবে সুভার ভাষার অভাব পূরণ করেছিল? উত্তর : প্রকৃতির বিভিন্ন শব্দ ও কোলাহল দিয়ে প্রকৃতি সুভার ভাষার অভাব পূরণ করেছিল। নদীর কলধ্বনি, পাখির ডাক, মাঝির গান, লোকের কোলাহল ইত্যাদি দিয়ে প্রকৃতি সুভার ভাষার অভাব পূরণ করে দেয়। সে সময় পেলেই নদীর পাড়ে এসে বসত। প্রকৃতির নানান উপাদান নিজের সব ভাষা নিয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো সুভার হৃদয়ে আছড়ে পড়ে। এই ভাষার বিস্তার যেন বিশ্বব্যাপী। কারণ প্রকৃতির এই ভাষা বিশ্বব্যাপীই প্রচলিত। তাই প্রকৃতির বিভিন্ন শব্দের মধ্য দিয়ে সুভার ভাষার অভাব পূরণ করেছিল। ১৩. সুভার সাথে গাভী দুটির সম্পর্ক কেমন ছিল? উত্তর : সুভার অন্তরঙ্গ বন্ধু হলো গাভী দুটি। এদের নাম সর্বশী ও পাঙ্গুলি। এদের সাথে সুভার অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। সুভা কখনো এদের আদর করত এবং কখনো ভর্ৎসনা করত- এরা সব বুঝত। সুভা নিয়মিত তিনবার গোয়ালঘরে গেলেও অনিয়মিতভাবে অনেকবার যেত। এমনটি সুভার মনের ভাষাও এরা বুঝত। সুভার মর্মবেদনা এরা বুঝতে পারত। সুভার বাহুতে শিং ঘষে সুভাকে এরা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করত। সুভার কথাহীন করুণ সুর এরা ভালো করে চিনত। সুভাকে এরা বন্ধুই মনে করত। ১৪. বিড়ালটি সুভার কাছে গিয়ে কী করত? উত্তর : বিড়ালটি সুভার কাছে গিয়ে আদর নিত। সুভার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে বিড়ালটিও রয়েছে। সুভা বসে থাকলে বিড়ালটি যখন-তখন নিঃসংকোচে এসে তার গরম কোলে বসে সুখ নিদ্রার আয়োজন করত। সুভা গলায় ও পিঠে হাত বুলিয়ে দিলে বিড়ালটির ঘুমিয়ে পড়তে সুবিধা হয়, ইঙ্গিতে সেটি তাও প্রকাশ করত। ১৫. 'সে ভাষাবিশিষ্ট জীব'- বুঝিয়ে লেখ। উত্তর : সুভার গুটিকয়েক বন্ধুর মধ্যে প্রতাপ একজন, যে কথা বলতে পারে। তাই লেখক তাকে ভাষা বিশিষ্ট জীব বলেন। সুভা কথা বলতে পারে না। সে জন্মবোবা। পরিবার ও প্রতিবেশীর থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয় সুভা। সখ্য গড়ে তোলে বাড়ির দুটি গাভী, ছাগল, বিড়াল, গাছপালা ও নদীর সাথে। কারণ এরাও সুভার মতো ভাষাবিহীন। কিন্তু এর বাইরেও তার আরও একজন বন্ধু আছে, যে উন্নত শ্রেণির জীব, সে ভাষাবিশিষ্ট প্রাণী। গোঁসাইদের ছোট ছেলে, প্রতাপ তার নাম। প্রকৃতি এবং পশুপাখি ছাড়াও কোনো মানুষ যে সুভার বন্ধু, একথা প্রকাশ করতেই লেখক উক্তিটি করেছেন। ১৬. সুভা মনে মনে কী কল্পনা করত? উত্তর : সুভা মনে মনে জলকুমারী হওয়ার কথা কল্পনা করত। সুভা কল্পনা করত সে যদি জলপরী হতো, তাহলে জল থেকে উঠে সাপের একটা মণি ঘাটে রেখে আসত। প্রতাপ তার তুচ্ছ মাছ ধরা ছেড়ে সাপের মাথার সেই মণি নিয়ে জলে ডুব দিত। তারপর পাতালে গিয়ে দেখত রুপার অট্টালিকার সোনার পালঙ্কে সুভা বসে আছে। সে পাতালপুরীর একমাত্র রাজকন্যা। সে পাতালপুরীর রাজকন্যা না হয়ে ভুল করে বাণীকণ্ঠের পারিবারে জন্ম নিয়েছে। সে মনে মনে এগুলো কল্পনা করত। কারণ সে প্রতাপকে আশ্চর্য করে দিতে চাইত। ১৭. পূর্ণিমার রাতে সুভা কী করেছিল? উত্তর : পূর্ণিমার রাতে সুভা নিজেকে চেনার চেষ্টা করেছিল। পূর্ণিমার রাতে একদিন সুভা দরজা খুলে ভয়ে ভয়ে মুখ বের করে দিয়ে পূর্ণিমা দেখছিল। তার মনে হয়েছিল এই পূর্ণিমা রাতও যেন তার মতো একা এবং নির্বাক। সে নিজের অস্তিত্ব এবং নিজের বেড়ে ওঠা সম্পর্কে অনুভূতি লাভ করে। অনেক কিছু বুঝতে চায়, কথা বলতে চায় কিন্তু পারে না। চারদিকের সমস্ত নির্জনতা যেন তাকে ছাপিয়ে ওঠে। আর এই নিস্তব্ধ প্রকৃতির মধ্যে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, সুভা যেন তাও অনুভব করে। ১৮. কেন বাণীকণ্ঠকে লোকে নিন্দা করতে শুরু করে? উত্তর : সুভার বিয়ে না দেওয়ায় বাণীকণ্ঠকে লোকে নিন্দা করে। সুভা বাণীকণ্ঠের তৃতীয় মেয়ে। সুভা বোবা হওয়াতে তাকে বিয়ে দিতে অসুবিধা হচ্ছিল। কিন্তু তার জন্য বাণীকণ্ঠ তার বিয়ে দিতে পারছিলেন না বলে সবাই বাণীকণ্ঠকে নিন্দা করা শুরু করেছিল। তার ওপর বাণীকণ্ঠ সচ্ছল ছিলেন, তারা দুবেলা মাছ-ভাত খেতে পারতেন বলে তার শত্রম্নরও শেষ ছিল না। গ্রামের লোকজন তাদের একঘরে করারও গুঞ্জন তোলে। ১৯. প্রতাপের দিকে সুভা কেন মর্মবিদ্ধ হরিণীর মতো তাকিয়ে ছিল? উত্তর : সুভার বর পাওয়া গেছে, সে বিয়ে করে চলে যাবে, বিয়ের পর যেন সুভা তাকে না ভুলে প্রতাপের এই কথাগুলো শুনে সুভা প্রতাপের দিকে মর্মবিদ্ধ হরিণীর মতো তাকিয়ে ছিল। প্রতাপ মাছ ধরার সময় সুভা একদিন তার কাছে গেলে প্রতাপ তাকে বলে যে, তার বর খুঁজে পাওয়া গেছে। তার বিয়ে হবে। বিয়ের পর সে যে সবাইকে ভুলে না যায়। এ কথা শুনে সুভা প্রতাপের দিকে এমনভাবে তাকায়, যে মর্মবিদ্ধ হরিণী শিকারির দিকে তাকিয়ে থাকে। কারণ সুভা বিয়ের জন্য রাজি ছিল না। প্রতাপের কাছ থেকে কথাটি শুনে ভালো লাগে না তার। অত্যন্ত কষ্ট পায় বলে এভাবে তাকিয়ে থাকে। আম আঁটির ভেঁপু ১। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? ক) ১৮৯২ খ) ১৮৯৩ গ) ১৮৯৪ ঘ) ১৯৮৫ উত্তর :গ) ১৮৯৪ ২। বিভূতিভূষণ কোন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন? ক) মুরারিপুর খ) কাঁঠালতলা গ) তাম্বুলখানা ঘ) বনগ্রাম উত্তর : ক) মুরারিপুর ৩। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়ের নাম কী? ক) মৃণালিনী হক খ) মৃণালিনী রানী গ) মৃণালিনী বন্দ্যোপাধ্যায় ঘ) মৃণালিনী দেবী উত্তর : ঘ) মৃণালিনী দেবী ৪। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কোন কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন? ক) কলকাতা রিপন কলেজ খ) জগন্নাথ কলেজ গ) ঢাকা কলেজ ঘ) দেবপুর কলেজ উত্তর : ক) কলকাতা রিপন কলেজ ৫। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কোন পর্যায়ে শিক্ষকতা করেন? ক) স্কুল খ) কলেজ গ) বিশ্ববিদ্যালয় ঘ) একাডেমি উত্তর :ক) স্কুল ৬। 'পথের পাঁচালী' কোন ধরনের রচনা? ক) নাটক খ) গল্প গ) উপন্যাস ঘ) প্রবন্ধ উত্তর : গ) উপন্যাস হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়