বিজ্ঞান

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
প্রশ্ন : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক উদাহরণ দিয়ে প্রমাণ করো। উত্তর : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। এরা পাশাপাশি চলে। বিজ্ঞানীদের মূল্যবান আবিষ্কারকে মানুষের কাজে লাগাতে হলে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হয়। তাই বিজ্ঞানের আবিষ্কার কাজে লাগানোর জন্য তৈরি হয় প্রযুক্তি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক বোঝানোর জন্য নিচে দুটি উদাহরণ উলেস্নখ করা হলো- উদাহরণ-১ : বিজ্ঞানীরা বস্তুর গঠন এবং বস্তুর ওপরে শক্তির নানা প্রভাব আবিষ্কার করেছেন। প্রযুক্তিবিদরা বিজ্ঞানের সেই জ্ঞান ব্যবহার করে নতুন নির্মাণসামগ্রী উদ্ভাবন করেছেন। উদাহরণ-২ : আলো, বাতাস, পানি ও নানা উপাদান কীভাবে উদ্ভিদের উপরে কাজ করে তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেন। প্রযুক্তিবিদরা এই জ্ঞান প্রয়োগ করেন ফসল উৎপাদনের উন্নতি সাধনে। সুতরাং বলা যায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গভীরভাবে সম্পর্কিত। প্রশ্ন : প্রযুক্তির ব্যবহারে মানবিক হওয়া উচিত কেন? উত্তর : প্রযুক্তির সঠিক ও মানবিক ব্যবহার আমাদের জীবনে এনেছে স্বাচ্ছন্দ্য। কিন্তু যখনই এ ব্যবহারে মানবিকতা থাকে না তখন তা আমাদের জীবনকে করে দুর্বিষহ। যেমন- ১। যানবাহন আমাদের যাতায়াতকে সহজ করে। কিন্তু দ্রম্নত যানবাহন চালালে তাতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ২। সঠিক পরিমাণে সার, কীটনাশক ব্যবহার ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করে। কিন্তু যদি অতিরিক্ত হারে এগুলো ব্যবহার করা হয় তবে তা পুকুর ও জলাশয়ে পড়ে উদ্ভিদ ও মাছকে মেরে ফেলে। ৩। বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধের অস্ত্র, পারমাণবিক বোমা ইত্যাদিও প্রযুক্তির অবদান। এসব অবদানকে অনেক সময় যুদ্ধক্ষেত্রে অমানবিকভাবে ব্যবহার করা হয়। এতে অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ধ্বংস হয়ে যায় অনেক শহর, জনপদ। এভাবে প্রযুক্তিকে যখনই অমানবিকভাবে ব্যবহার করা হবে তখনই তা আমাদের জীবনে ভয়াবহতা ডেকে আনবে। আর তাই প্রযুক্তি ব্যবহারে মানবিক হতে হবে। প্রশ্ন : বিজ্ঞানের অপব্যবহারের কয়েকটি উদাহরণ দাও। উত্তর : বিজ্ঞানের অপব্যবহার বলতে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত প্রযুক্তিগুলোর অপব্যবহারকে বোঝায়। বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত এসব কৌশলের অপব্যবহারের কয়েকটি উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো- ১। সঠিক নিয়মে গাড়ি না চালানো। ২। ত্রম্নটিপূর্ণ যানবাহন চালানো। ৩। জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার। ৪। রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর তৈরিতে বনভূমি নষ্ট করা। ৫। কলকারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলা। ৬। বিরতিহীনভাবে টেলিভিশন দেখা, কম্পিউটারে খেলা। ৭। যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধাস্ত্রের অমানবিক ব্যবহার করা। এভাবে বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলোকে যখনই অসচেতনভাবে ব্যবহার করা হবে তখনই তা অপব্যবহার হিসেবে গণ্য হবে। দশম অধ্যায় প্রশ্ন : তথ্যপ্রযুক্তির পাঁচটি কাজ লেখ। উত্তর : তথ্যপ্রযুক্তি বলতে তথ্য সংগ্রহকরণ ও তথ্যের প্রক্রিয়াকরণ বোঝায়। তথ্যপ্রযুক্তির কাজ হচ্ছে- র. তথ্য ধারণ। রর. ধারণকৃত তথ্য সংরক্ষণ। ররর. সংরক্ষিত বা হারানো তথ্য পুনরুদ্ধার। রা. তথ্য প্রেরণ। া. তথ্য বিশ্লেষণ করে তা ব্যবহার উপযোগী। প্রশ্ন : আধুনিক ল্যাপটপ কম্পিউটারের তিনটি সুবিধা লেখ। উত্তর : সনাতন কম্পিউটার ব্যবহারে যে সমস্যাগুলো হতো বর্তমানে তা সমাধান করা সম্ভব হয়েছে আধুনিক ল্যাপটপ কম্পিউটার আবিষ্কারের ফলে। আধুনিক ল্যাপটপ কম্পিউটারের তিনটি সুবিধা হলো- র. এটি অল্প জায়গায় অনেক তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে পারে। রর. এতে বিদু্যৎ খরচ কম হয়। ররর. এটি খুব সহজে বহন করা যায়। প্রশ্ন : ব্যক্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাব বর্ণনা কর। উত্তর : আমাদের ব্যক্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাব অপরিসীম। যেমন- সমুদ্র উপকূলে বায়ুচাপ ভীষণ হ্রাস পেল। এই উপাত্তকে বিশ্লেষণ করে আবহাওয়া বিজ্ঞানী জানালেন যে প্রচন্ড জলোচ্ছ্বাস হবে। এ তথ্য রেডিওতে প্রচারিত হলে সমুদ্র উপকূলের অনেকের জীবন রক্ষা পাবে। এতে ব্যক্তিগত জীবন যেমন রক্ষা পেল, তেমনি এলাকাবাসী তাদের সম্পদ ও জীবন রক্ষার কাজে এই তথ্য ব্যবহার করে উপকৃত হলো। সমুদ্রের জাহাজগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করতে পারল। আবার মাটির নিচে মজুত খনিজ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেল। এই তথ্য পেতে অবশ্য আধুনিক প্রযুক্তি লাগবে। যেমন- শব্দ তরঙ্গ পাঠিয়ে বা চুম্বকক্ষেত্র মেপে তথ্য পাওয়া যায়। সেই তথ্য কম্পিউটারে বিশ্লেষণ করে বা অনেক গাণিতিক হিসাব কষে জানা যায় তেল, কয়লা বা খনিজ সম্পদের উপস্থিতি। আমাদের ব্যক্তি জীবন, সামাজিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবনে বিভিন্নভাবে এর প্রভাব পড়বে। প্রশ্ন : তথ্য বিনিময় কী? বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আসছে এটি জানার পর তুমি কী করবে এ সম্পর্কে চারটি বাক্য লেখ। উত্তর : তথ্য বিনিময় হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো তথ্য বন্ধু, পরিবার এবং অন্যান্য মানুষের সঙ্গে আদান-প্রদান করা হয়। বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আসছে এটি জানার পর আমি যা করব তা হলো- র) ঘূর্ণিঝড়ের তথ্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সবাইকে জানাব। রর) আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বন্ধু, পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকে বলব। ররর) শুকনো খাবার ও পানি সঙ্গে নিতে বলব। রা) গবাদিপশু নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে বলব। প্রশ্ন : তথ্য বিনিময় কী? আমাদের জীবনে তথ্য বিনিময়ের চারটি গুরুত্ব লেখ। উত্তর : তথ্য বিনিময় হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো তথ্য বন্ধু, পরিবার এবং অন্যান্য মানুষের সঙ্গে আদান-প্রদান করা হয়। আমাদের জীবনে তথ্য বিনিময়ের চারটি গুরুত্ব হলো- র) তথ্য বিনিময় আমাদের ভালোভাবে বাঁচতে সাহায্য করে। রর) তথ্য বিনিময় আমাদের বিপদ থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে। ররর) কোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে। রা) প্রচন্ড জলোচ্ছ্বাস থেকে সমুদ্র উপকূলের অনেক মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করে। প্রশ্ন : ইন্টারনেট কী? ইন্টারনেটের ৩টি ব্যবহার লেখ। দুটি তথ্য বিনিময় মাধ্যমের নাম লেখ। উত্তর : ইন্টারনেট হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের কম্পিউটারগুলোকে সংযুক্তকারী একটি বিশাল নেটওয়ার্ক। ইন্টারনেটের ৩টি ব্যবহার হলো- র. তথ্য অনুসন্ধান, সংগ্রহ ও বিনিময় করতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। রর. ই-মেইলে কোনো তথ্য বা ডকুমেন্ট প্রদান ও গ্রহণ করতে ইন্টারনেট ব্যবহৃত হয়। ররর. বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেমন- ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি চালাতে ইন্টারনেট ব্যবহৃত হয়। পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়