শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১
বিজ্ঞান

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
  ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রশ্ন :বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষির অগ্রগতির কারণ কী? কৃষিপ্রযুক্তির অগ্রগতির পর্যায়গুলো লেখো।

উত্তর : কৃষির ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে প্রধানত দুটি কারণে। কারণ দুটি হলো :

১. রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার।

২. নতুন এবং অত্যাধুনিক কৃষিযন্ত্রের আবিষ্কার।

কৃষিপ্রযুক্তি অগ্রসর হয়েছে মোট তিনটি পর্যায়ে। পর্যায় তিনটি নিচে আলোচনা করা হলো :

প্রথম পর্যায়টি হলো কৃষিতে উন্নত যন্ত্র ব্যবহারের যুগ। দ্বিতীয় পর্যায়টি হলো রাসায়নিক সার ব্যবহারের যুগ। তৃতীয় পর্যায়টি হলো কৃষিতে জৈব প্রযুক্তি উদ্ভাবনের যুগ।

প্রশ্ন : প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাবের কয়েকটি দৃষ্টান্ত আলোচনা করো।

উত্তর : প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাবগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো :

পরিবেশ দূষণ : বিদু্যৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লা পুড়িয়ে আমরা বিদু্যৎ উৎপন্ন করি কিন্তু এর ফলে বায়ু দূষিত হয়। বায়ুদূষণ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও এসিড বৃষ্টির মতো বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করছে। রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক অধিক খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করে। কিন্তু এদের ব্যবহারের ফলে আবার মাটি এবং পানি দূষিত হয়, যা জীবের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

অস্ত্র তৈরি : আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রয়োগ হলো যুদ্ধের অস্ত্র তৈরি ও এর ব্যবহার। যেমন- বন্দুক, বোমা, ট্যাংক ইত্যাদি।

অন্যান্য ক্ষতিকর প্রভাব : অনেক সময় প্রযুক্তির ব্যবহার নেশায় পরিণত হয়। টেলিভিশন ও কম্পিউটারের ব্যবহার যদি ভালো কাজে নিয়োজিত না হয়, তা আমাদের সময়ের অপচয় ঘটায়।

প্রশ্ন : কীভাবে পরিবেশ দূষিত হয়?

উত্তর : আধুনিক প্রযুক্তির অসতর্ক ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষিত হয়।

বিদু্যৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লা পুড়িয়ে আমরা বিদু্যৎ উৎপন্ন করি কিন্তু এর ফলে বায়ুও দূষিত হয়। বায়ুদূষণ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও এসিড বৃষ্টির মতো বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করছে। রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক অধিক খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করে। কিন্তু এদের ব্যবহারের ফলে আবার মাটি এবং পানি দূষিত হয়, যা জীবের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

প্রশ্ন : প্রযুক্তি কী? রাতে পড়াশোনা করার সময় তুমি কি কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করো? ৪টি বাক্যে ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : মানুষ তার পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ ও সমস্যা সমাধানে যে সব যন্ত্রপাতি বা হাতিয়ার উদ্ভাবন করেছে ও ব্যবহার করছে তা হলো প্রযুক্তি। রাতে পড়াশোনা করার সময় আমি বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করি। প্রথমত, রাতে পড়াশোনার সময় ঘরে ব্যবহৃত বৈদু্যতিক বাতি বা ল্যাম্প সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়, যা একটি প্রযুক্তি। তাছাড়া বৈদু্যতিক পাখা, লেখার জন্য ব্যবহৃত কলম, বই সবই প্রযুক্তি।

প্রশ্ন : আমাদের দেশের গ্রামীণ কৃষিতে কি তুমি কোনো প্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষ্য করছ? ৫টি বাক্যে লেখো।

উত্তর : আমাদের দেশের গ্রামীণ কৃষিতে আমি বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষ্য করছি। যেমন-

১। কৃষকরা এখন উন্নতমানের ধান, আলু, গমসহ বিভিন্ন ফসল ফলাচ্ছে।

২। ট্রাক্টরের সাহায্যে খুব সহজেই জমি চাষ করছে।

৩। অধিক ফলনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সার ব্যবহার করছে।

৪। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য কীটনাশক ব্যবহার করছে।

৫। উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের জন্যও বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার আমি লক্ষ্য করছি।

প্রশ্ন : আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি না থাকলে আমাদের কী কী অসুবিধা হতো? ৫টি বাক্যে লেখো।

উত্তর : আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নতমানের ধান, গম, আলু, ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে, যা দিয়ে অধিক জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটানো যাচ্ছে। আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি না থাকলে উন্নতমানের এবং অধিক ফলনশীল ফসল উৎপাদন সম্ভব হতো না। এতে বাড়তি জনসংখ্যার খাদ্য সমস্যা সমাধান করা অসম্ভব হয়ে পড়ত।

প্রশ্ন : প্রযুক্তি ব্যবহার না করে আমরা বাঁচতে পারি না- ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : আমাদের জীবনযাপনের প্রতিটি প্রয়োজনে আমরা প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে শৌচাগার ব্যবহার করি। গোসলের সময় সাবান ব্যবহার করি। রান্না করা খাবার খাই। ঘড়ি দেখে স্কুলে যাই। স্কুল দূরে হলে সাইকেল বা বাস ব্যবহার করি। পড়ার টেবিলে রাতে বাতি জ্বালিয়ে বই পড়ি। কলম ব্যবহার করে খাতায় লিখি। জ্বর হলে থারমোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা মাপি। অসুখ হলে ওষুধ সেবন করি। বসবাসের জন্য ঘরে থাকি। লজ্জা ও শীত নিবারণের জন্য পোশাক পরি। এগুলো সবই প্রযুক্তির ব্যবহার। এ রকমভাবে আমাদের বেঁচে থাকার প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রয়োজন প্রযুক্তির সহযোগিতা। এ সহযোগিতা যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে আমরা বাঁচতে পারব না।

প্রশ্ন : প্রযুক্তি স্থির থাকে না, ক্রমাগত বদলে যায়- এটি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : প্রযুক্তি স্থির থাকে না, ক্রমাগত বদলে যায়। প্রয়োজন বোধের কারণেই এ পরিবর্তন ঘটে। সব ক্ষেত্রেই সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তির পরিবর্তন ঘটে। যেমন- এক সময় মানুষ কবুতরের মাধ্যমে চিঠি বা তথ্য পাঠাত। এভাবে তথ্য, খবরাখবর আদান-প্রদানে অনেক সময় লাগত। এরপর টেলিগ্রামের ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মতো। টেলিগ্রামের পর এলো ডাকের ব্যবহার। ডাকযোগে এক শহর থেকে অন্য শহরে এমনকি অন্য দেশেও তথ্য পাঠানো সম্ভব হতো। কিন্তু এ পদ্ধতিতেও সময় বেশি লাগত। এসব পদ্ধতির পথ ধরে বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সহজেই তথ্য পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে এক সময় মানুষ ঘোড়া, হাতি ইত্যাদি পশু ব্যবহার করত। বর্তমানে বাস, ট্রেন, উড়োজাহাজ ইত্যাদি আবিষ্কৃত হওয়ায় অতি স্বল্পসময়ে যে কোনো দূরত্বে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে।

ওপরের বর্ণনা থেকে দেখা যাচ্ছে মানুষ তার প্রয়োজন পূরণকে সহজ থেকে সহজতর করার জন্য প্রতিনিয়তই প্রযুক্তি বদলাচ্ছে। সুতরাং বলা যায়, প্রযুক্তি স্থির থাকে না, প্রতিনিয়তই বদলায়।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে