প্রশ্ন :বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের কী করা উচিত বলে তুমি মনে করো?
উত্তর :বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়েদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত :
১. শারীরিক পরিবর্তন দেখে ঘাবড়ে না যাওয়া।
২. দুশ্চিন্তা না করা।
৩. মা-বাবা, বড় ভাইবোনদের সাথে বিষয়টি আলোচনা করা।
৪. এসময় ঘটে যাওয়া পরিবর্তনকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়া।
৫. পড়ালেখাসহ স্বাভাবিক কাজকর্ম করা।
প্রশ্ন :তোমাদের এলাকায় সংক্রামক রোগ দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে তোমরা কীভাবে এর প্রতিকার করবে?
উত্তর :আমাদের এলাকায় সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা নিম্নোক্তভাবে এর প্রতিকার করব :
রোগাক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে। এগুলো আমাদের সেরে উঠতে সাহায্য করে। হালকা জ্বর হলে বা সামান্য মাথাব্যথা করলে প্রাথমিকভাবে কিছু ওষুধ গ্রহণ করলে আমরা ভালো বোধ করি। কিন্তু যদি জ্বর ভালো না হয়, ক্রমাগত বমি হতে থাকে এবং মারাত্মক মাথাব্যথা হয় তবে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।
প্রশ্ন :সংক্রামক রোগের প্রকারভেদ আলোচনা করো।
উত্তর :সংক্রামক রোগ চার প্রকার। যেমন- ১. বায়ুবাহিত রোগ, ২. পানিবাহিত রোগ, ৩. ছোঁয়াচে রোগ, ৪. প্রাণী ও পোকা-মাকড়বাহিত সংক্রামক রোগ। নিচে এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
বায়ুবাহিত রোগ : যেসব রোগ হাঁচি-কাশি বা কথাবার্তা বলার সময় বায়ুতে জীবাণু ছড়ানোর মাধ্যমে হয়ে থাকে তাদের বায়ুবাহিত রোগ বলে। যেমন- সোয়াইন ফ্লু, হাম, গুটিবসন্ত, যক্ষ্ণা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি।
পানিবাহিত রোগ : যেসব রোগ জীবাণুযুক্ত দূষিত পানির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে তাদের বলে পানিবাহিত রোগ। যেমন- ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় এবং টাইফয়েড।
ছোঁয়াচে রোগ :রোগাক্রান্ত ব্যক্তির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংস্পর্শে যেসব রোগ সংক্রমণ হয় তাই ছোঁয়াচে রোগ। যেমন- ফ্লু, ইবোলা, হাম ইত্যাদি।
প্রাণী ও পোকা-মাকড়বাহিত সংক্রামক রোগ : বিভিন্ন প্রাণী এবং পোকা-মাকড়ের মাধ্যমে কিছু জীবাণুবাহিত রোগ ছড়ায়। যেমন- কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়। মশার কামড়ের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়।
প্রশ্ন : বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তনের ৫টি উদাহরণ দাও।
উত্তর : বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন-
১. দ্রম্নত লম্বা হওয়া।
২. মাংসপেশি সুগঠিত হওয়া।
৩. শরীরের গঠন পরিবর্তন হওয়া।
৪. বেশি ঘাম হওয়া, ত্বক তৈলাক্ত হওয়া, ব্রণ ওঠা।
৫. শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া।
প্রশ্ন : পানিবাহিত দুটি রোগের নাম লেখো। পানিবাহিত রোগ-প্রতিরোধের চারটি উপায় লেখো।
উত্তর : পানিবাহিত দুটি রোগের নাম হলো-
র. ডায়রিয়া
রর. আমাশয়
পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধের চারটি উপায় নিচে দেওয়া হলো-
র. পানি দূষণ রোধ করা।
রর. নিরাপদ পানি ব্যবহার করা
ররর. হাত জীবাণুমুক্ত রাখা
রা. চারপাশের পরিবেশ
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
প্রশ্ন : কোন ভাইরাসের মাধ্যমে এইডস রোগ ছড়ায়? প্রাণী ও পোকা-মাকড়বাহিত দুটি সংক্রামক রোগের নাম লেখো। সংক্রামক রোগ প্রতিকারে তোমার তিনটি পরামর্শ লেখো।
উত্তর : এইচআইভি ভাইরাসের মাধ্যমে এইডস রোগ ছড়ায়।
প্রাণী ও পোকা-মাকড়বাহিত দুটি সংক্রামক রোগের নাম হলো-
র. জলাতঙ্ক রর. ডেঙ্গু।
সংক্রামক রোগ প্রতিকারে আমার তিনটি পরামর্শ হলো-
র. সুষম খাদ্য গ্রহণ করা।
রর. নিরাপদ পানি ব্যবহার করা।
ররর. হাঁচি-কাশির সময় টিসু্য, রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ ঢাকা।
প্রশ্ন : সংক্রামক রোগ কী? সংক্রামক রোগের বিস্তারের দুটি কারণ লেখো। সংক্রামক রোগ প্রতিকারে তিনটি করণীয় লেখো।
উত্তর : বিভিন্ন জীবাণু যেমন- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ইত্যাদি শরীরে প্রবেশের ফলে সৃষ্ট রোগই হলো সংক্রামক রোগ।
সংক্রামক রোগের বিস্তারের দুটি কারণ নিচে উলেস্নখ করা হলো-
র. হাঁচি-কাশির মাধ্যমে।
রর. দূষিত পানি পানের মাধ্যমে।
সংক্রামক রোগ প্রতিকারে তিনটি করণীয় হলো নিম্নরূপ :
র. রোগাক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
রর. পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
ররর. প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে।
প্রশ্ন :বয়ঃসন্ধিকালের তিনটি শারীরিক পরিবর্তন লেখো। বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক যত্নে তোমার তিনটি করণীয় লেখো।
উত্তর : বয়ঃসন্ধিকালের তিনটি শারীরিক পরিবর্তন হলো-
র. দ্রম্নত লম্বা হওয়া।
রর. ত্বক তৈলাক্ত হওয়া।
ররর. ছেলেদের গলার স্বরের পরিবর্তন হওয়া।
বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক যত্নে আমার তিনটি করণীয় হলো-
র. এই সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকব।
রর. পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করব।
ররর. দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে শিক্ষক কিংবা পরিবারের সাথে পরামর্শ করব।
প্রশ্ন: বাড়ির আশপাশে কৌটা, টায়ার, ফুলের টব পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন কেন সে সম্পর্কে তিনটি বাক্য লেখো।
উত্তর :বাড়ির আশপাশে কৌটা, টায়ার, ফুলের টব পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন সে সম্পর্কে তিনটি বাক্য নিচে দেওয়া হলো-
র. এসব জিনিসে পানি জমতে পারে।
রর. জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু রোগের বাহক মশা ডিম পাড়ে।
ররর. জমে থাকা পানিতে ম্যালেরিয়া রোগের বাহক মশা ডিম পাড়ে।
প্রশ্ন : পানি জমে থাকে এমন বস্তু যেমন- গামলা, টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারি। এর কারণ কী?
উত্তর : পানি জমে থাকে এমন বস্তু যেমন- গামলা, টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারি। কারণ এগুলোতে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া রোগের বাহক মশা ডিম পাড়ে। তাই ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে হলে মশার আবাসস্থলে পানি জমতে দেওয়া যাবে না। কারণ, জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশ বৃদ্ধি করে।
প্রশ্ন : তোমার বন্ধু রনি নানারকম সংক্রামক রোগের কারণে প্রায়ই অসুস্থ থাকে। সুস্থ ও রোগমুক্ত থাকার জন্য তুমি রনিকে কী পরামর্শ দেবে?
উত্তর : সংক্রামক রোগ-জীবাণুর মাধ্যমে হয়ে থাকে। এ সব রোগ থেকে বাঁচার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা। রনির ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিরাপদ পানি ব্যবহার এবং হাত জীবাণুমুক্ত রাখার মাধ্যমে সে সুস্থ থাকতে পারে। হাঁচি-কাশির সময় টিসু্য, রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ ঢাকা, চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদির মাধ্যমে রনি সংক্রামক রোগ-প্রতিরোধ করতে পারে। বাড়ির আশপাশে পানি জমতে পারে এমন আবর্জনা যেমন- কৌটা, টায়ার, ফুলের টব ইত্যাদি পরিষ্কার রাখতে হবে তাকে। কারণ এখানে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া রোগের বাহক মশা ডিম পাড়ে। প্রয়োজনীয় টিকা নিয়ে এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করেও সে রোগমুক্ত থাকতে পারে। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়