প্রশ্ন :বিদু্যৎ শক্তি ব্যবহারের ৪টি দৃষ্টান্ত উলেস্নখ করো।
উত্তর :বিদু্যৎ শক্তি ব্যবহারের ৪টি দৃষ্টান্ত নিম্নরূপ :
১. রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার ইত্যাদি বিদু্যৎ শক্তির সাহায্যে চলে।
২. বিদু্যৎ শক্তিকে তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত করে রান্নাবান্নার কাজ করা যায়।
৩. বিদু্যৎ শক্তিকে তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত করে বৈদু্যতিক বাতি জ্বালানো হয়।
৪. বিদু্যৎ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে বৈদু্যতিক পাখা চালানো হয়।
প্রশ্ন :পরিবহণ, পরিচলন ও বিকিরণের ১টি করে ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখাও।
উত্তর :পরিবহণ, পরিচলন ও বিকিরণের একটি করে ব্যবহারিক প্রয়োগ নিচে উলেস্নখ করা হলো-
পরিবহণ : একটি ধাতব দন্ডের একপ্রান্ত আগুনে রেখে অন্যপ্রান্ত হাতে ধরে রাখলে কিছুক্ষণ পরেই হাতে বেশ গরম অনুভব হয়। তাপ দন্ডের উচ্চ তাপমাত্রার অংশ থেকে নিম্ন তাপমাত্রার অংশে সঞ্চালিত হওয়ার জন্য অর্থাৎ পরিবহণ পদ্ধতির জন্য এমন হয়।
পরিচলন : ঘরের একপ্রান্তে হিটার জ্বালালে অন্যপ্রান্তের বাতাস যে গরম হয়ে ওঠে সেটা পরিচলন পদ্ধতিতে ঘটে থাকে।
বিকিরণ : শীতকালে আগুনের পাশে বসে থাকলে আমাদের বেশ গরম লাগে। এর কারণ আগুন থেকে তাপ বিকিরণ প্রক্রিয়ায় আমাদের কাছে চলে আসে।
প্রশ্ন : ঠান্ডা পানির গস্নাস হাত দিয়ে ধরে রাখলে হাত ঠান্ডা হয়ে যায়। তোমার বন্ধু মনে করে গস্নাসের ঠান্ডা হাতে চলে যাওয়ার কারণে হাত ঠান্ডা হয়ে যায়। তার ধারণাটি কী সঠিক? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : না আমার বন্ধুর ধারণা সঠিক নয়। অর্থাৎ গস্নাসের ঠান্ডা হাতে চলে আসে না।
ব্যাখ্যা : তাপ সর্বদা উচ্চ তাপমাত্রার স্থান থেকে নিম্ন তাপমাত্রার স্থানে সঞ্চারিত হয়। ঠান্ডা পানির গস্নাস হাত দিয়ে ধরে রাখলে হাত ঠান্ডা হয়ে যায়। এমনটা ঘটার কারণ গস্নাসের ঠান্ডা হাতে চলে যাওয়া নয়। বরং হাতের তাপ গস্নাসে সঞ্চালিত হওয়ার ফলেই এ ঘটনাটি ঘটে। এখানে ঠান্ডা পানির গস্নাস নিম্ন তাপমাত্রায় রয়েছে, আর হাত উচ্চ তাপমাত্রায়। তাই হাতের তাপ গস্নাসে সঞ্চালিত হওয়ায় হাতের তাপমাত্রা কমে গিয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়। সুতরাং আমার বন্ধুর ধারণাটি সঠিক নয়।
প্রশ্ন : পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণিকার নাম লেখো। পানিপূর্ণ গস্নাসে এক টুকরো পাথর ফেললে, কিছু পানি উপচে পড়বে, এর পেছনে পদার্থের কোন বৈশিষ্ট্য কাজ করছে তা একটি বাক্যে লেখো। ঝড়ের সময় গাছপালা নাড়ানোর পেছনে কোন শক্তি কাজ করে? বসতবাড়িতে শক্তির অপচয় বন্ধ করা যায় এমন দুটি পরামর্শ লেখো।
উত্তর : পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণিকার নাম পরমাণু।
তরল পদার্থের মধ্যে এক টুকরো পাথর বা যে কোনো কঠিন পদার্থ ফেলা হলে সেটি তার সমপরিমাণ পানি অপসারণ করে, এ জন্য পানি উপচে পড়ে এবং এ ক্ষেত্রে পদার্থের জায়গা দখল করার বৈশিষ্ট্য কাজ করছে। ঝড়ের সময় গাছপালা নাড়ানোর পেছনে বায়ু শক্তি কাজ করে। বসতবাড়িতে শক্তির অপচয় বন্ধ করা যায় এমন দুটি পরামর্শ হলো-
র. ব্যবহারের পর বৈদু্যতিক বাতি বা যন্ত্রপাতিসমূহ বন্ধ রাখা এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ফ্রিজের দরজা খোলা না রাখা।
রর. বাতি না জ্বালিয়ে পর্দা সরিয়ে দিনের আলো ব্যবহার করা।
প্রশ্ন : রাজন এক খন্ড লোহার পাতকে জ্বলন্ত চুলার উপর ধরল। কিছুক্ষণ পর লোহার পাতটি গরম হলো। কোন পদ্ধতিতে এমন ঘটনা ঘটল? এ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলো লেখো।
উত্তর : চুলার উপরে ধরা রাজনের লোহার পাতটি গরম হয়েছিল পরিবহণ পদ্ধতিতে। পরিবহণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ :
১. কোনো কঠিন বস্তুর ভেতর দিয়ে তাপ সঞ্চালিত হয় পরিবহণ পদ্ধতিতে।
২. বস্তুর একপ্রান্ত উচ্চ তাপমাত্রায় থাকলে তাপ ধীরে ধীরে নিম্ন তাপমাত্রার এলাকায় প্রবাহিত হয়।
৩. সকল কঠিন পদার্থের মধ্যদিয়ে তাপ একই পরিমাণ সঞ্চালিত হয় না।
৪. পদার্থের উপাদানের ওপর পরিবহণ নির্ভর করে।
প্রশ্ন : শিরিন পানি ফুটাতে গিয়ে লক্ষ্য করল, উপরের পানি নিচের দিকে যাচ্ছে এবং নিচের পানি উপরে আসছে। এমন ঘটনা ঘটে কোন পদ্ধতিতে? এ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলো দুটি বাক্যে লেখো।
উত্তর : শিরিনের লক্ষ্য করা ঘটনাটি ঘটে পরিচলন পদ্ধতিতে।
সাধারণত তরল বা বায়বীয় পদার্থের মধ্যদিয়ে পরিচলন প্রক্রিয়ায় তাপ সঞ্চালিত হয়। তাপের পরিচলন তরল বা বায়বীয় পদার্থের ঘনত্ব, উপাদান ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। এ প্রক্রিয়ায় পদার্থের অণুগুলোর পারস্পরিক বন্ধন বল খুব শিথিল হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন : গতি শক্তি কাকে বলে? গতি শক্তির উদাহরণ দাও।
উত্তর : কোনো গতিশীল বস্তু গতিশীল থাকার জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য বা শক্তি অর্জন করে তাকে গতি শক্তি বলে।
গতি শক্তির উদাহরণ :
১. গতিশীল বুলেট কাঠের দেয়াল ভেদ করে যেতে পারে। বুলেট কাজ করার সামর্থ্য বা শক্তি অর্জন করে এর গতির জন্য। এটি গতি শক্তির উদাহরণ।
২. ঢিল ছুড়ে গাছ থেকে আম পাড়া হলো। যখন ঢিল ছোড়া হয় তখন ঢিলে বল বা শক্তি থাকে। বল বা শক্তি পাওয়ায় ঢিলটি গতিশীল হয়। এ গতির কারণেই গাছ থেকে আম পাড়া গেল। এটি গতি শক্তির উদাহরণ।
প্রশ্ন :'শক্তি হচ্ছে পরিবর্তনের সংঘটক' ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : সাইকেল চালানো, বিদু্যৎ চমকানো, হারমোনিয়াম বাজানো, তাপে পানি গরম করা সবই হলো শক্তি প্রয়োগের উদাহরণ।
সাইকেল গতি লাভ করে চালকের পেশিশক্তি প্রয়োগে। বিদু্যৎ চমকানোর পেছনে তড়িৎ শক্তি কাজ করে। হারমোনিয়াম থেকে শক্তি শব্দরূপে ভেসে আসে। নানারকম ঘটনা বা পরিবর্তনের আড়ালে যা দায়ী তা হলো শক্তি। তাই বলা যায়, শক্তি হচ্ছে পরিবর্তনের সংঘটক।
প্রশ্ন : পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের চারটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর : যার ওজন আছে এবং জায়গা দখল করে তাকে পদার্থ বলে। পদার্থের চারটি বৈশিষ্ট্য হলো :
১. পদার্থের ওজন আছে।
২. পদার্থ জায়গা দখল করে।
৩. তাপ প্রয়োগে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে।
৪. বল প্রয়োগে পদার্থ বাধা দেয়।
প্রশ্ন:'শক্তির সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই, শুধু এটি রূপ বদল করে'- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর :শক্তি এমন একটি ধারণা যার কোনো ওজন নেই, আকার নেই, আয়তন নেই কিন্তু অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। শক্তিকে কখনো সৃষ্টি করা যায় না। এটিকে শুধু রূপান্তর করা যায়। শক্তিকে যেমন সৃষ্টি করা যায় না তেমনি ধ্বংসও করা যায় না। ব্যবহার শেষ হলে এটি ব্যবহারের যোগ্যতা হারায় কিন্তু ধ্বংস হয় না। অবস্থার পরিবর্তন ঘটালে এর রূপান্তর ঘটে।
প্রশ্ন :শক্তির সংরক্ষণ জরুরি কেন? পাঁচটি বাক্যে লেখো।
উত্তর :শক্তির সংরক্ষণ জরুরি কারণ-
১. শক্তির উপর আমাদের দৈনন্দিন জীবন নির্ভরশীল। শক্তির সংরক্ষণ না হলে দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজ বিঘ্নিত হবে।
২. শক্তি সংরক্ষণ না করলে ভবিষ্যৎ আমাদের প্রয়োজনে শক্তি পাওয়া যাবে না।
৩. শক্তির সংরক্ষণ করা না হলে পরিবেশের নানা ক্ষতি ও দূষণ ঘটবে।
৪. শক্তির উৎস নিঃশেষ হলে সহজে তা পাওয়া যায় না।
৫. শক্তির সংরক্ষণের ফলে আমরা প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে পারি।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়