তৃতীয় অধ্যায়
প্রশ্ন :রবিনদের বাড়ির কয়েকজন সদস্য হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত। এটি কী ধরনের রোগ? এর সাথে সংশ্লিষ্ট দূষণের মানবসৃষ্ট দুটি কারণ ও দুটি ফলাফল উলেস্নখ করো।
উত্তর :ডায়রিয়া একটি পানিবাহিত রোগ। পানিদূষণের মানবসৃষ্ট দুটি কারণ হলো-
১. কৃষিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার।
২. নদী বা পুকুরে গরু-ছাগল গোসল করানো এবং কাপড়-চোপড় ধোয়া।
পানিদূষণের দুটি ফলাফল হলো-
১. জলজ প্রাণী মারা যায়।
২. জলজ খাদ্যশৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে।
প্রশ্ন : লাবণ্য ভোরে ঘুম থেকে জেগে গাছের পাতায় বিন্দু বিন্দু পানি দেখতে পেল। সেগুলো কী? কীভাবে তৈরি হয়?
উত্তর : লাবণ্য ভোরে গাছের পাতায় যে পানির বিন্দু দেখতে পায় তার নাম শিশির। বাতাসে থাকা জলীয়বাষ্পের ঘনীভবনের মাধ্যমে শিশির তৈরি হয়।
বাতাসের জলীয়বাষ্প ঠান্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয়। বাষ্প থেকে তরলে পরিণত হওয়ার এ প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন বলে। রাতের বেলা তাপ বিকিরণের কারণে পৃথিবী শীতল হয়। তার ফলে গাছের পাতা ও পরিবেশের অন্যান্য উপাদানও ঠান্ডা হয়। তখন বাতাস ঠান্ডা কোনো বায়ুর সংস্পর্শে এলে বাতাসে থাকা জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি বিন্দুতে পরিণত হয়। গাছের পাতায় জমা এই পানি-ই হলো শিশির।
প্রশ্ন :পৃথিবীতে পানি এক উৎস থেকে অন্য উৎসে চক্রাকারে ঘোরে। এই চক্রকে কী বলে? বেঁচে থাকার জন্য পানি কেন প্রয়োজন ৪টি বাক্যে লেখো।
উত্তর :পৃথিবীতে পানি এক উৎস থেকে অন্য উৎসে চক্রাকারে ঘোরে। এই চক্রকে পানিচক্র বলে। বেঁচে থাকার জন্য পানির প্রয়োজনীয়তা ৪টি বাক্যে লেখা হলো-
১. পানি আমাদের শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখে।
২. আমরা যে পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করি তা পানির সঙ্গে দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
৩. স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
৪. পানি খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে।
প্রশ্ন :নন্দিনী চুলায় বসানো হাঁড়ি থেকে পানিকে গ্যাসের মতো উড়ে যেতে দেখল। এই প্রক্রিয়াকে কী বলে? এরূপ পানির কয়েকটি অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে লেখো।
উত্তর :নন্দিনী চুলায় বসানো হাঁড়িতে তাপ দিলে পানি জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়। এভাবে তরল থেকে বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাষ্পীভবন বলে।
তাপ প্রয়োগ ও ঠান্ডা করার মাধ্যমে পানি এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তিত হয়। যেমন-
১. বরফে তাপ দিলে তা পানিতে পরিণত হয়।
২. পানিকে তাপ দিলে তা জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়।
৩. জলীয়বাষ্পকে ঠান্ডা করা হলে তা ঘনীভূত হয়ে পানিতে পরিণত হয়।
৪. পানিকে শীতল করা হলে তা কঠিন বরফে পরিণত হয়।
প্রশ্ন :পানিদূষণের প্রধান কারণ কোনটি বলে তুমি মনে করো? পানিদূষণের পাঁচটি প্রভাব উলেস্নখ করো।
উত্তর :মানুষের কর্মকান্ডই হলো পানিদূষণের প্রধান কারণ। পানিদূষণের পাঁচটি প্রভাব হলো-
১. জলজ প্রাণী মারা যায়।
২. জলজ খাদ্যশৃঙ্খলের ব্যাঘাত ঘটে।
৩. মানুষ ডায়রিয়া বা কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়।
৪. আর্সেনিকযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে হাতে-পায়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
৫. দূষিত পানিতে বসবাসকারী মাছের মাধ্যমে মানুষের দেহে ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন : অমিতদের বাগানের গাছটিতে কত ভাগ পানি রয়েছে? এই পানি গাছটিতে কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হয় তার চারটি বাক্যে লেখো।
উত্তর : অমিতদের বাগানের গাছটির দেহে প্রায় ৯০ ভাগ পানি রয়েছে। এই পানি গাছটি যেসব কাজে ব্যবহার করে তা হলো-
র. সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরিতে গাছটি পানি ব্যবহার করে।
রর. গাছটি মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ করে পানির সাহায্যে।
ররর. পানি গাছটির দেহের বিভিন্ন অংশে পুষ্টি উপাদান পরিবহণ করে।
রা. প্রচন্ড গরমে পানি উদ্ভিদটির দেহ শীতল করতে সাহায্য করে।
চতুর্থ অধ্যায়
প্রশ্ন : মানুষ কীভাবে বায়ুপ্রবাহকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করে?
উত্তর : মানুষ বিভিন্নভাবে বায়ুপ্রবাহকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করে। যেমন :-
র. বিদু্যৎ উৎপাদনের জন্য বড় বড় চরকা বা টারবাইন ঘুরাতে বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করা হয়।
রর. হেয়ার ড্রায়ারের বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করা হয় ভেজা চুল শুকানোর কাজে।
ররর. ভেজা কাপড় শুকানোর কাজে।
রা. হাতপাখা বা বৈদু্যতিক পাখার বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করা হয় শরীর ঠান্ডা রাখতে।
া. বায়ুপ্রবাহকে নৌকা চালানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন : মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাবসমূহ কী? বায়ুদূষণ প্রতিরোধের তিনটি উপায় লেখ।
উত্তর : মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বায়ুদূষণ ক্ষতিকর। এর ফলে মানুষ ফুসফুসের ক্যানসার, শ্বাসজনিত রোগ, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
বায়ুদূষণ প্রতিরোধের তিনটি উপায় নিম্নরূপ :
র. প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার কমিয়ে, পুনর্ব্যবহার করে ও রিসাইকেল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দূষণ প্রতিরোধ করা যায়।
রর. ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে এবং গাছ লাগানোর মাধ্যমেও বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করা যায়।
ররর. শক্তির ব্যবহার কমিয়ে অর্থাৎ জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহার না করে বায়ুদূষণ কমানো যায়।
প্রশ্ন :বায়ুদূষণের কারণ কী?
উত্তর :বায়ুদূষণের একটি বড় কারণ হলো মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ড। এর ফলে বায়ুতে বিভিন্ন ধরনের গ্যাস নির্গত হয়। কলকারখানা ও যানবাহন থেকে এসব গ্যাস বায়ুতে আসে। গাছপালা পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন ধোঁয়া থেকেও বায়ু দূষিত হয়। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও মলমূত্র ত্যাগের কারণে বায়ুতে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং বায়ু দূষিত হয়।
পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়