নিখিল সেনগুপ্ত ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রতিথযশা নাট্যকার ও সংস্কৃতিকর্মী। এছাড়াও তিনি একজন অভিনয় শিল্পী, আবৃতিশিল্পী, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আবৃতিতে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক এবং নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন। নিখিল সেনগুপ্ত ১৯৩১ সালের ১৬ এপ্রিল বরিশালের কলশ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পুরো নাম নিখিল সেনগুপ্ত হলেও তিনি নিখিল সেন এবং নিখিল দা নামেই পরিচিত। তার পিতার নাম যতীশ চন্দ্র সেনগুপ্ত ও মাতার নাম সরোজিনী সেনগুপ্ত। এই দম্পতির ১০ সন্তানের মধ্যে নিখিল চতুর্থ। তিনি মাধ্যমিক পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতা সিটি কলেজে ভর্তি হন এবং কলকাতা থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে পুনরায় বরিশালে ফিরে আসেন। ১৯৪১ সাল থেকে নিখিল বরিশালের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিশেষ করে থিয়েটার ও আবৃত্তিতে জরিত ছিলেন। তিনি ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত বরিশাল শিল্পী সংসদের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৫২ সালে বরিশাল থিয়েটার নামে একটি সাংস্কৃতিক দল গঠন করেন। নিখিল সিরাজের স্বপ্ন নাটকে সিরাজ চরিত্রে অভিনয় করার মধ্য দিয়ে নাট্যজীবন শুরু করেন নিখিল সেন। পরবর্তী সময়ে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেন। ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি ২৮টি মঞ্চ নাটকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো- মনোজ মিত্রের সাজানো বাগান, মমতাজউদ্দীন আহমেদের নীলদর্পণ এবং মামুনুর রশীদের ওরা কদম আলী। নিখিল সেন কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যোগদান করেন এবং পাকিস্তানি শাসনামলে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রম্নয়ারি বার্ধক্যজনিত কারণে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮৭ বছর বয়সে মৃতু্যবরণ করেন।