জন কিটস ইংরেজি সাহিত্যের একজন রোম্যান্টিক কবি। লর্ড বায়রন ও পার্সি বিশি শেলির সঙ্গে তিনিও ছিলেন দ্বিতীয় প্রজন্মের রোমান্টিক কবিদের একজন। মৃতু্যর মাত্র চার বছর আগে তার সৃষ্টিগুলো প্রকাশিত হয়। তৎকালীন সমালোচকদের দৃষ্টিতে তার কবিতা খুব একটা উচ্চ মর্যাদা পায়নি। কিন্তু মৃতু্যর পর কবিতাগুলো সঠিক মূল্যায়ন পেতে শুরু করে এবং উনিশ শতকের শেষ দিকে তিনি অন্যতম জনপ্রিয় ইংলিশ কবির স্বীকৃতি পান। পরবর্তীকালের অসংখ্য কবি ও সাহিত্যিকের ওপর তার প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। জন কিটস ৩১ অক্টোবর ১৭৯৫ সালে লন্ডনের মুরফিল্ডসের একটি আস্তাবলে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন আস্তাবল রক্ষক। কিটস প্রথমে এনফিল্ডের একটা স্কুলে লেখাপড়া করেন। ১৬ বছর বয়সে কিটস এনফিল্ডের স্কুল ত্যাগ করেন। তরুণ বয়স থেকেই তার কবি হওয়ার প্রতি ঝোঁক ছিল। তা সত্ত্বেও কিটস ওষুধ বিদ্যায় শিক্ষা গ্রহণ করেন। সেখানে তার সঙ্গে লেই হান্ট নামে এক প্রতিষ্ঠিত কবির সঙ্গে যোগাযোগ হতে শুরু করে। লেই হান্ট কিটসের সাহিত্য কর্মের প্রশংসা করেন এবং তাকে সাহিত্য চর্চায় উৎসাহিত করেন। ১৮১৬ সালে সে ওষুধ বিদ্যার পেশা ত্যাগ করেন এবং পরিপূর্ণভাবে কবিতায় মনোনিবেশ করেন। ১৮১৮ সালে কিটসের ভাই টম মারাত্মকভাবে যক্ষ্ণায় আক্রান্ত হন এবং কিটস তার সেবা যত্ন করেন। কিন্তু টম ডিসেম্বরে মারা যান। ১৮১৭ সালে ৩০টি কবিতা ও সনেটের সমন্বয়ে 'পোয়েমস' শিরোনামে তার বই প্রকাশিত হয়। ১৮২০ সালের শুরুর দিকে কিটসের যক্ষ্ণার লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। ওই বৎসরের জুলাই মাসে তার কবিতার দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশ হয় কিন্তু তখন তিনি খুবই অসুস্থ। সেপ্টেম্বরে উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে কিটস ও তার বন্ধু জোসেফ সেভার্ন ইতালি গমন করেন। তারা আশা করেছিল এতে কিটসের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। তারা যখন রোম পৌঁছেন তখন কিটসের অসুস্থতা আরও বৃদ্ধি পায় এবং তিনি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। কিটসের বন্ধু সেভার্ন তাকে যথাসাধ্য সেবা যত্ন করেন। কিন্তু কিটস ১৮২১ সালের ২৩ ফেব্রম্নয়ারি রোমে মারা যান।