গ্যাস-বিদু্যতে ভোগান্তির শঙ্কা দ্রম্নত কার্যকর উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিদু্যৎ খাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ফলে, বিদু্যৎ উৎপাদন ও সরবরাহ যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে। বিরূপ প্রভাব পড়ে জনজীবনে। অন্যদিকে, গ্যাস সংকটও নানামাত্রিক ভোগান্তি তৈরি করে। ফলে, গ্যাস-বিদু্যতের ভোগান্তির শঙ্কা এড়ানোর সুযোগ নেই। প্রসঙ্গত, ফাল্গুনের শুরুতেই হালকা গরমে রাতে চালাতে হচ্ছে ফ্যান। আর এতেই শুরু হয়েছে লোডশেডিং। মার্চ মাসে রমজান, সঙ্গে বাড়বে গরমও। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে সেচ মৌসুম। ধারণা করা যাচ্ছে সব মিলিয়ে মার্চ-এপ্রিল থেকে বিদু্যতের চাহিদা দেড় গুণ হবে। খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, এই বাড়তি চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হবে বিদু্যৎ বিভাগকে। এর পাশাপাশি অর্থ সংকটে চাহিদা অনুসারে জ্বালানি সরবরাহ সম্ভব হবে না। অন্যদিকে, রমজান ও গরমে বিদু্যতের পাশাপাশি গ্যাসও ভোগাবে গ্রাহককে, বিশেষ করে আবাসিকে। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রম্নত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক। তথ্যমতে, দিনে গ্যাসের চাহিদা ৪২০ কোটি ঘনফুট। ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ পেলে মোটামুটি চাহিদা মেটানো যায়। অথচ সরবরাহ হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৬৫ কোটি ঘনফুট। রমজান মাসে ও গরমে এটি বেড়ে ২৮০ থেকে ২৮৫ কোটি ঘনফুট হতে পারে। কারণ, এলএনজি আমদানি বাড়ানো হবে। তারপরও দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমে যাওয়ায় রমজান ও গ্রীষ্ম মৌসুমে সংকট থাকবে। গত ১৫ দিনে চার কোটি ঘনফুট উৎপাদন কমেছে। রমজান ও গরমে বাড়তি গ্যাসের পুরোটাই চলে যাবে বিদু্যৎ খাতে। শিল্প ও আবাসিকে সংকট বাড়বে। গ্যাস-বিদু্যতের সংকট তীব্র হলে তা জনভোগান্তির মাত্রা কতটা বাড়িয়ে দেয় সেটা এড়ানোর সুযোগ নেই। এই আশঙ্কাও উঠে আসছে- এবার গরমে তিন হাজার মেগাওয়াটের বেশি ঘাটতি থাকবে বিদু্যতের। যদিও বিদু্যৎ বিভাগ বলছে, লোডশেডিং হবে দেড় হাজার মেগাওয়াট। ফলে, এখনই ব্যবস্থা না নিলে রমজানে ও সেচ মৌসুমে সংকট ঠেকিয়ে রাখা যাবে না বলে যে শঙ্কা উঠে আসছে তা গুরুত্বসহকারে আমলে নেওয়া জরুরি। বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ডের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বছর গ্রীষ্মকালে ১৮ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদু্যতের চাহিদা দাঁড়াবে। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রম্নত করণীয় নির্ধারণ ও তার যথার্থ বাস্তবায়নে তৎপর হতে হবে। উলেস্নখ্য, একদিকে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা অন্যদিকে, অর্থ সংকটে রয়েছে গ্যাস খাতও। বকেয়া ও ডলার সংকটে এলএনজি আমদানি ব্যাহত হতে পারে। দেশীয় উৎস থেকেও গ্যাসের জোগান কমছে বলে জানা যায়। এছাড়া, এবার গরমে চাহিদা অনুযায়ী বিদু্যৎ উৎপাদন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। এই ধারণা আমলে নিতে হবে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, গত সোমবার রাত ৯টায় বিদু্যতের চাহিদা ছিল ১২ হাজার ১৭০ মেগাওয়াট। লোডশেডিং হয়েছে ১০২ মেগাওয়াট। এখন দিন দিন তা বাড়ছেই। ফলে, যে শঙ্কা উঠে আসছে তা সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। সর্বোপরি, অর্থ সংকটে কয়লা, ফার্নেস অয়েল ও গ্যাস আমদানি ব্যাহত হওয়ায় গত বছর গরম মৌসুমে বিভিন্ন সময় অনেক বিদু্যৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ ছিল। এ কারণে লোডশেডিং বেড়ে গিয়েছিল। এবারে যখন গ্যাস-বিদু্যতে ভোগান্তির শঙ্কার বিষয় উঠে আসছে তখন সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।