এই নবীন তারুণ্যই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ- জাতির রাহবার

এ জাতি ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতা বিপস্নব দেখেছে। কীভাবে এই সিপাহী-জনতা ১৫ আগস্টের সফল বিপস্নবের পাল্টা বিপস্নব নিপাত করার জন্য সেদিন ব্যারাক থেকে হাজারে হাজারে বেরিয়ে এসে জনতার সঙ্গে মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়ে বাংলাদেশে বাকশালী দুঃশাসন এবং ভারতীয় দখলদারির কবর রচনা করেছিল...

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

খন্দকার হাসনাত করিম পিন্টু
কী এক অবাক তারুণ্য বিস্ফোরিত হয়েছে তাদের পড়ার ঘরে, ক্যাম্পাসে, ক্লাসরুমে, আড্‌ডায়! এ তারুণ্যকে আমরা বুঝতেই পারিনি। অনুমানও করতে পারিনি তাদের দেশপ্রেম, দেশাত্মবোধ, মানবিকতা এবং সাম্য ও ন্যায়ের প্রতি তাদের এত অঙ্গীকার। স্বৈরাচারের গুলির সামনে বুক চিতিয়ে দিতে শিখল কী করে? শহীদ আবু সাঈদ তাদের রক্তে আগুন ধরিয়ে দিল। প্রায় দুই হাজার আবু সাঈদ দেশের জন্য, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, বঞ্চনা-বৈষম্যের স্বৈরনীতি অবসানের জন্য অকাতরে শাহাদৎ বরণ করে দেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করে দিয়ে গেল। তারা দেখে যেতে পারল না তাদের সাহস এবং প্রতিবাদের মুখে ৫২ বছরে বাংলাদেশের বুক চেপেবসা আধিপত্যবাদী ভারতের আগ্রাসন এবং স্বৈরাচার কবরস্থ হয়েছে। তাদের জাগরণে অনুপ্রাণিত হয়েছে পাকিস্তানের ছাত্র-জনতা এবং বিশ্বব্যাপী জেনারেশন- জেড লাভ করেছে নতুন বার্তা, সংস্কারের এবং নতুন বিশ্ব গঠনের। সরকারি চাকরির কোটা বৈষম্য মোচন করতে নেমে তারা রাজপথের সংগ্রামে একাকার করে দিয়েছে দেশের ডান-মধ্য-বাম সব মতের রাজনৈতিক বিভেদ, বৈষম্য। যারা ভারতের ক্রীতদাস এবং ভারতের লেলিয়ে দেওয়া হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের লাঠিয়াল, তারা ছাড়া গোটা বাংলাদেশকে বাংলার দামাল ছেলেরা ঐক্যবদ্ধ করে গেল এই চিন্তায় যে, প্রতিবেশী ভারত আমাদের শত্রম্ন রাষ্ট্র। ভারতপন্থি দল, সংস্কৃতি এবং তাদের উচ্ছিষ্ট ভোগী দালালগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার দুশমন এবং গণশত্রম্ন। একই সঙ্গে তারা জানান দিয়ে গেল এই উপমহাদেশে এবং তাবৎ বিশ্বে যারাই ভারতের বিপক্ষে তারাই আমাদের বন্ধু ও সহযোগী। ৫ আগস্ট বাংলাদেশে যে ছাত্র-জনতা দুনিয়া কাঁপানো গণজাগরণ ঘটে গেল কেউই তা' ঘুণাক্ষরেও আন্দাজ করতে পারেনি। ১৭ বছর ধরে (কার্যত ১৯৭৭ থেকেই) এ দেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং ইসলামী ভাবধারার রাজনীতির আদর্শবাদী দলগুলো আগ্রাসনবাদী ভারতের লেলিয়ে দেওয়া খুনি এরশাদ ও তৎপরবর্তী নিকৃষ্টতম স্বৈরাচারী আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের দুর্গ টলাতে পারেনি। প্রধান এই দুই বিরোধী দলসহ ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর চালানো হয়েছে গুম, খুন, আয়না-বন্দি, মামলা-হামলা, সন্ত্রাস, নির্যাতন। নির্বাচনের নামে জোচ্চুরি (দিনের ভোট আগে রাতেই সেরে ফেলা)। এত অত্যাচার-নিগ্রহে পড়া প্রধান বিরোধী দলগুলো কিছুতেই কিছু করতে পারছিল না। অথচ গুলিকে বুকে নিতে শেখা এই নবীন প্রজন্ম মাত্র এক মাসেই গণ-বিপস্নবের জোয়ার তুলে সেই ফ্যাসিবাদকে দেশছাড়া করতে পেরেছে। স্বৈরশাসক দলের গণবিচ্ছিন্নতা এত প্রকট হয়ে পড়ে যে, মানুষ এদের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য নীরবে অশ্রম্নপাত করছিল। এই অসাধ্যকে সাধন করতে পেরেছে দেশের নবীন তারুণ্য। তাদের রাজপথের মিছিলেই ফুটে উঠেছে তার নতুন ভাবনা এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। সেগুলোর লক্ষ্যণীয় ব্যতিক্রমগুলো এত বেশি যে, এক লেখায় সেই ব্যতিক্রমগুলোর শিরোনাম লিখতেও কলাম ফুরিয়ে যাবে। তবু বলতে হয়, নবীন প্রজন্মের মধ্যে আমরা অমিত দেশপ্রেম দেখে অভিভূত। কারণ বাংলাদেশে এই মুহূর্তে দেশপ্রেম মানেই সর্বগ্রাসী ভারতীয় আধিপত্যবাদ আর তাদের প্রতিনিধি ভারতীয় দোসর আওয়ামী খুনি সরকারের সমূলে উৎখাত। তারা এ ব্যাপারে ছিল দৃঢ় সংকল্প। দ্বিতীয়ত, সাম্য এবং মানাধিকারের প্রতি এই তারুণ্যের ধনুক ভাঙা পণ। তৃতীয়ত, জেন্ডার সমতা। এই আন্দোলনে কিশোরী-তরুণী-ছাত্রীদের স্বৈরাচারের নির্যাতন সওয়া এবং প্রতিবাদে সংগ্রামী ভূমিকা দেশবাসীকে উজ্জীবিত করেছে। চতুর্থত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের গণমানুষের সংগ্রামের প্রতি দরদ সহমর্মিতা। এবারের ছাত্র আন্দোলনে অত্যন্ত ব্যতিক্রমী সাহসী ভূমিকা রেখেছে দেশের প্রাইভেট কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। মৃতু্যর মিছিলে তারা উলেস্নখ্যযোগ্য সংখ্যায় শামিল হয়েছে। অথচ এরা সমাজের স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান। পঞ্চমত, ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে তাদের পরিবারের, বিশেষ করে মায়েদের অংশগ্রহণ এবং রাজপথে নেমে আসার ঘটনা। বিশেষ করে আওয়ামী লস্কর, গোপালগঞ্জ নামক অভিশপ্ত জেলার পুলিশ ও ছাত্রলীগ থেকে ঢোকানো পুলিশ ব্যতিত অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষীদের কিছুটা হলেও নমনীয় ভূমিকা। সর্বশেষ এবং সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম ছিল স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার বিপস্নবে সেনাবাহিনীর বীর দেশপ্রেমিক সদস্য এবং মধ্যম সারির সেনা কর্মকর্তাদের সহানুভূতি, গণসংহতি। 'আর একটাও গুলি নয়' এই বার্তা দিয়ে কার্যত, ৩ আগস্ট থেকেই এই দেশপ্রেমিক বীর সেনানীরা তাদের বন্দুকের নল ঘুরিয়ে দেয় এবং এই মহান দেশপ্রেমিক ভূমিকায় সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামানের অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভূমিকা জাতির অন্তর স্পর্শ করে। কথা উঠছে, পরাজিত ও পলাতক স্বৈর দোসরদের সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান, নিরাপদ দেশান্তর এবং গণরোষ থেকে তাদের রক্ষা করার বিষয় নিয়ে। দায়িত্বের বাইরে থেকে যা করা যায়, বলা যায়, দায়িত্বশীল পদে থেকে তা সম্ভব হয় না। কুখ্যাত আয়নাঘর জেনারেল প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিচালক পাকড়াও হয়েছেন ঠিকই। তবে তিনিও এখনো সেনা নিবাসেই আছেন। চাচ্ছেন রাজসাক্ষী হতে। তার মতো আরও অনেক ফিফ্‌থ্‌-কলামিস্ট আছেন। তাহলে বলব, তারা ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর, ১৯৭৫-এর সিপাহী-জনতা বিপস্নবের কথা জানেনই না, কিংবা সে সময় তারা সেনাবাহিনীতে ঢোকেনওনি। জাতি সেই ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতা বিপস্নব দেখেছে এবং কীভাবে এই সিপাহী-জনতাই ১৫ আগস্টের সফল বিপস্নবের পাল্টা বিপস্নব নিপাত করার জন্য সেদিন ব্যারাক থেকে হাজারে হাজার বেরিয়ে এসে জনতার সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়ে বাংলাদেশে বাকশালী দুঃশাসন এবং ভারতীয় দখলদারির কবর রচনা করেছিল... ছাত্র আন্দোলনে মৃতু্য গণনা চলছে। প্রায় ২০০০ ছাত্র-জনতা স্বৈরাচারের মরণ আঘাতে শাহাদৎ বরণ করেছে। অজস্র ছাত্রছাত্রী জনমের মতো কানা এবং পঙ্গু হয়ে গেছেন। যত দিন তারা বেঁচে থাকবেন, এই জুলাই '২৪ গণহত্যার দুর্বিষহ স্মৃতি তাদের তাড়া করে ফিরবে। কুলাঙ্গার হাসিনা শহীদ সন্তানের মা'র কাছে না গিয়ে মুখে ছলনার রুমাল বেঁধে মেট্রো স্টেশন এবং স্বৈরাচারের পদলেহী বিটিভি দেখতে যায়। এত গণধিক্কার পৃথিবীর আর কোনো স্বৈরাচারী এক নায়কের ভাগ্যে জুটেছে কিনা ইতিহাস তার সাক্ষ্য বহন করবে। রক্ত পিপাসু নেতানিয়াহু যেমন হামাসকে নির্মূল করে গাজা উপত্যকাকে দখলে নিতে চেয়েছিল, হাসিনাও তেমনি এই তরুণ প্রজন্মকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে তার স্বৈরাচারী শাসনকে পাকাপোক্ত বা নিষ্কণ্টক করতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালায়। কিন্তু এই নবীন তারুণ্য সম্পর্কে ৭৬-বছর বয়স্ক আত্মগঠিত স্বৈরাচারিণীর সামান্যতম ধারণাও ছিল না। '৭৫ থেকে '৮১ সাল পর্যন্ত দিলিস্নতে বসিয়ে বিশেষ সংস্থা তাকে যে মগজ ধোলাই করেছিল তারই একটা পরিণতি দেশের জনগণ সম্পর্কে তার বিতৃষ্ণা এবং বেপরোয়া বীতশ্রদ্ধা। শহীদ জিয়া সত্যিকার অর্থে একজন দয়াশীল শাসক হিসেব তাকে দেশে আসতে দেওয়ার যে 'হিমালয়ান বস্নান্ডার' করেছিলেন, তারই খেসারত দিচ্ছে আজ এই দেড় দুই হাজার সন্তানহারা মা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক মা বলেছেন, হাসিনা তার স্বজন হারিয়েছেন, সন্তান হারাননি। স্বজন হারানো এবং সন্তান হারানোর পার্থক্য রাত ও দিনের। স্বজন হারানোর নাটক ছিল হাসিনার রাজনৈতিক পুঁজি। তবে এই পুঁজির লভ্যাংশ আজ 'শূন্য' হয়ে গেছে। সে নিজেই তার বাবার এই রাজনৈতিক অপমৃতু্য তথা মরণোত্তর লাঞ্ছনার জন্য দায়ী। এমনকি স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে ও দেশে ফেরা পর্যন্ত তার সাহসী ভূমিকার কথাও এ দেশে চিরদিনের জন্য কবরস্থ হয়ে গেল। এর জন্যও হাসিনা দায়ী। শেখ মুজিবকে আওয়ামী দানবের মূর্তি হিসেবে দাঁড় করিয়েছিল। ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে সেই দানব মূর্তিটি ভেঙে খান খান হয়ে গেছে। সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবেই পরিবর্তন করা যেত। কিন্তু হাসিনা তো নির্বাচন নামক গণতন্ত্রের চর্চাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছিল। দিনের ভোট করেছিল ভোটের আগের রাতে। জালভোটে উপচে পড়েছিল ভোট বাক্স। নির্বাচনের নামে প্রতারণা করে সে জনগণের নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এ শক্তির দুর্গ ছিল তার পেটোয়া পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ, প্রতিবেশী একটি দেশের গোয়েন্দা এবং দেশজুড়ে চেপে বসা তার সিভিল-মিলিটারি আমলাতন্ত্র। অথচ এদের বেতন-ভতা, খাদ্য-বিলাস- সৌখিনতার টাকা জোগানো হয়েছে এই জনগণের কর খাজনার টাকায়। যে বুলেট দিয়ে সে দেড় দুই হাজার মায়ের কোলখালি করেছে সেই বুলেটগুলোও সে টুঙ্গীপাড়ার পৈত্রিক সম্পত্তি বেচে কেনেনি। সেগুলো কেনা হয়েছে এই জনগণেরই ট্যাক্সের টাকায়। বরং জনগণকে আকণ্ঠ বৈদেশিক ঋণের জালে আটকিয়ে লাখো কোটি টাকা তথাকথিত উন্নয়নের নামে স্বয়ং শেখ হাসিনা, তার বোন, ছেলে এবং চ্যালা-চামুন্ডারা লুটে নিয়ে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। বাংলাদেশ থেকে এত পরিমাণ অর্থ পাচার হতে দেখে সাবধান করে দিয়েছিল মার্কিন কেন্দ্রীয় অর্থ সংস্থা ফেড (ফেডারেল রিজার্ভ)। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লুট করা টাকার সামান্য একটা অংশ ফিলিপাইনে ধরা পড়ায় চমকে গিয়েছিল ফিলিপাইনের সরকার। সুইস ব্যাংকে জমানো সন্দেহভাজন আর্থিক ডেপোজিট তদন্ত করে স্বচ্ছতা আনার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে সুইস সরকার। যে দুর্গগুলোর হদিস আজ অবধি পাওয়া যায়নি, সেগুলোর মধ্যে আছে ফিনল্যান্ড এবং বেলারুশ। ঠিক মতো তদন্ত হলে বের হতে বাধ্য থলের বিড়াল। অধীর আগ্রহে জাতি সেদিনেরই অপেক্ষা করছে। \হশোষণ-বঞ্চনা-বৈষম্যহীন রাষ্ট্র নির্মাণে উৎসর্গিত প্রাণ এই নবীন-তরুণ জেনারেশন- জেড এবং ছাত্র-জনতার প্রতি সহমর্মিতাপূর্ণ দেশপ্রেমিক সিপাহী ও নবীন সেনা কর্মকর্তা কী বুঝতে পারছেন তারা কী অসম্ভবকে সম্ভব করে দিয়ে গেলেন? ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর জাতীয় ঐক্য গড়ার পরিবর্তে ক্ষমতা জবরদখলকারি আওয়ামী লীগ জাতিকে বিভক্ত ও খন্ডবিখন্ড করে তোলে। অথচ দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর সংঘটিত হলো জাতীয় ঐক্যের সেই অপূর্ণ বাসনা। রাজনৈতিক দলগুলো বিগত ৫২ বছরে জাতীয় ঐক্য গড়তে ব্যর্থ হয়েছে। নবীন তারুণ্য তাদের বাপ-চাচাদের ঐক্যবদ্ধ করে দিল। জাতীয়তাবাদ, ইসলামী আদর্শ ও বিভক্ত দলীয় পরিচিতির সীমানা পেরিয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনে ১৬ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং দেশের প্রধান দুশমন ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও তাদের স্থানীয় এজেন্ট আওয়ামী বাকশালীদের গণশত্রম্ন হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছে। তারা দেশের মূল জাতিসত্ত্বার রাজনীতি (ইড়ফু চড়ষরঃরশ)কে সার্থকভাবে এমআরআই বা সিটিস্ক্যান করতে পেরেছে, এটাই তাদের মৌলিক অবদান। গুম-খুন-মিথ্যা মামলা-হয়রানি- কথায় কথায় তুলে নিয়ে যাওয়া এবং ঠান্ডা মাথায় বিরোধীদের খুন করে বেওয়ারিশ লাশের পাহাড় বানানোর মতো ফ্যাসিবাদের এই বাংলার মাটিতে কবর রচনা করে নিজেরাই ইতিহাস হয়ে গেল এই নবীন-তরুণরা। সেনা গোয়েন্দা অ্যাস্টাবলিশমেন্ট রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এই রাষ্ট্রীয় সম্পদকে একনায়কের অন্ধদলীয় লাঠিয়াল বানানোর যুগাবসান ঘটিয়েছে তারা। বেসামরিক প্রশাসন জনগণের কর খাজনায় চলে। তাদের জনগণের প্রতিপক্ষ বানিয়ে দলীয় রাজত্ব কেয়ামত পর্যন্ত চালু রাখতে চেয়েছিল স্বৈরাচার। তাদের সেই নীল-নকশা সমূলে ধ্বংস হয়ে যাবে- এই তরুণদের হাতে- এটা কি তারা সামান্যতম ঠাহর করতে পেরেছিল? আলস্নাহ চাইলে কিনা পারেন? এই তরুণেরাই দিগভ্রান্ত, বিভ্রান্তদের হাত থেকে রক্ষা করলেন তার প্রিয় জনপদ এই বিশ্বাসী মানুষের বসত বাংলাদেশকে। স্রষ্টা প্রতিপালকের প্রতি আনুগত্যের সব দিয়ে গেল এই ছোট ছোট তরুণ-কিশোররা। এরাই এ দেশের ভবিষ্যৎ- এই ঐতিহ্যবাহী জাতির রাহবার। খন্দকার হাসনাত করিম পিন্টু : সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সহ-সভাপতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন